Navpatrika Puja 2022: নবপত্রিকা পুজোর মধ্যে দিয়ে শুরু সপ্তমীর পুজো! এই নবপত্রিকা কি আসলে গণেশের ‘বৌ’?

Durga Puja 2022: পুজোমণ্ডপে নবপত্রিকা প্রবেশের মাধ্যমে দুর্গাপুজোর মূল অনুষ্ঠানটির প্রথাগত সূচনা হয়। নবপত্রিকা প্রবেশের পর দর্পণে মহাস্নান করানো হয় দেবীকে।

Navpatrika Puja 2022: নবপত্রিকা পুজোর মধ্যে দিয়ে শুরু সপ্তমীর পুজো! এই নবপত্রিকা কি আসলে গণেশের 'বৌ'?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 02, 2022 | 6:05 AM

হিন্দু ধর্মে (Hinduism) নবপত্রিকার একটি বিশেষ তাত্‍পর্য় রয়েছে। শাস্ত্র অনুযায়ী, শারদীয়া নবরাত্রির (Saradiya Navratri 2022) সপ্তমীর সকালে নবপত্রিকা পুজোর (Navpatrika Puja) সময় নয় ধরনের পাতা মিশিয়ে একটি গুচ্ছ তৈরি করা হয়। সেই নতুন গুচ্ছের মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে (Goddess Durga) আবাহন করা হয়। নবরাত্রির শেষ চারদিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নবপত্রিকা কথার অর্থই হল নয়টি গাছের পাতা। তবে বাস্তবে নবপত্রিকায় নয়টি পাতা থাকে না, নয়টি গাছ থাকে। নয়টি গাছের নাম অনেকেই জানেন না। কলা বা কদলী, কচু, হলুদ, জয়ন্তী, বেল, ডালিম, অশোক, মান ও ধান। একটি কলাগাছের সঙ্গে অন্য ৮টি সমূল সপত্র উদ্ভিদ একত্র করে একজোড়া বেল-সহ শ্বেত অপরাজিতা গাছের পাতা দিয়ে বেঁধে লালপাড় সাদা শাড়ি জড়িয়ে ঘোমটা দেওয়া হয়। অনেকটা লাজুক নববধূর মত দেখতে লাগে। তাই স্থানীয়রা নবপ্ত্রিকাকে কলাবউ হিসেবে মনে করেন।

এই নয়টি গাছের সঙ্গে জডিয়ে রয়েছে দুর্গার নয় দেবীর নাম। অনেকের ধারণা, নবপত্রিকার পূজা প্রকৃতপক্ষে শস্যদেবীর পূজা। কলা গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হলেন ব্রাহ্মণী। কচু গাছের দেবী কালিকা, হলুদ বা হরিদ্রা গাথের অধিষ্ঠাত্রী হলেন দেবী উমা। জয়ন্তী গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী কার্তিকী। বেল বা বিল্ব গাছের অধিষ্ঠাত্রী হলে দেবী শিবা। অন্যদিকে ডালিম গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী রক্তদন্তিকা, অশোক গাছের দেবী শোকরহিতা, মান গাছের দেবী চামুণ্ডা ও ধান গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী লক্ষ্মী। এই নয় দেবী একত্রে “নবপত্রিকাবাসিনী নবদুর্গা” নামে নবপত্রিকাবাসিন্যৈ নবদুর্গায়ৈ নমঃ মন্ত্রে পূজিতা হন।

নবপত্রিকার শুভ মুহূর্ত

পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, এবার সপ্তমী তিথি শুরু হচ্ছে ১ অক্টোবর রাত ৮টা ৪৮ মিনিট থেকে। একই সময়ে একই সময়ে সপ্তমী তিথি শেষ হবে ২ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬.৪৯ মিনিটে।

নবপত্রিকা মহাস্নান

দুর্গাপুজোর সপ্তমী তিথিতে মহাস্নানের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এই জন্য ভক্তরা দেবী দশভুজা মূর্তির সামনে হাতজোড় করে প্রণাম করেন। দেবী দুর্গার মূর্তির সামনে একটি আয়না স্থাপন করা হয়। সেই আ.য়নায় দুর্গার প্রতিফলন পড়লে তাকে মহাস্নান বলা হয়।

নবপত্রিকা পুজোর বিধি

মহাসপ্তমীর দিন সকালে কোনও নদী বা কোনও জলাশয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। যদি নদী বা জলাশয় না থাকে তাহলে কোনও মন্দিরে স্নান করানোর ব্যবস্থা করা হয়। পুরোহিত নিজেই কাঁধে করে নবপত্রিকা নিয়ে যান। তাঁর পিছন পিছন ঢাকিরা ঢাক বাজাতে বাজাতে এবং মহিলারা শঙ্খ ও উলুধ্বনি করতে করতে যান। নবপত্রিকা পূজায় কলা, হলুদ, ডালিম, অশোক, ধান, বেল পাতা ব্যবহার করা হয়। শাস্ত্রবিধি অনুসারে স্নান করানোর পর নবপত্রিকাকে পরানো হয় নতুন লাল পাড় সাদা শাড়ি। তারপর পুজোমণ্ডপে নিয়ে এসে দেবীর ডান দিকে, গণেশের পাশে একটি কাঠের সিংহাসনে স্থাপন করা হয়। পুজোমণ্ডপে নবপত্রিকা প্রবেশের মাধ্যমে দুর্গাপুজোর মূল অনুষ্ঠানটির প্রথাগত সূচনা হয়। নবপত্রিকা প্রবেশের পর দর্পণে মহাস্নান করানো হয় দেবীকে। এরপর বাকি দিনগুলিতে নবপত্রিকা প্রতিমাস্থ দেবদেবীদের সঙ্গেই পূজিত হতে থাকে।