Durga Puja 2024: দেবীর দশ হাতে দশ অস্ত্র কেন থাকে জানেন?

Durga Puja 2024: দেবী ত্রিশূলধারিণী। ত্রিশূল দিয়েই মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন দুর্গা। স্বয়ং মহাদেব তাঁকে প্রদান করেছিলেন ত্রিশূল। ত্রিশূল মানুষের তিন গুণের প্রতীক। সত্ত্ব, রজ তম এই তিন গুণকে ইঙ্গিত করে ত্রিশূলের তিন ফলা।

Durga Puja 2024: দেবীর দশ হাতে দশ অস্ত্র কেন থাকে জানেন?
Follow Us:
| Updated on: Oct 03, 2024 | 4:00 PM

দশভুজা তিনি। দশ হাতে দশ অস্ত্র নিয়ে অসুর সংহার করেন। তিনি দেবী দুর্গা। দেবতাদের সম্মিলিত তেজ থেকে জন্ম তাঁর। দেবতারা নিজ নিজ অস্ত্র দিয়ে সাজিয়ে তোলেন মহামায়াকে। তবে এই অস্ত্র কিন্তু কেবলই অসুর সংহারের জন্য নয়। বরং তাঁর দশ হাতের দশ অস্ত্রের রয়েছে আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যাও। জানেন দেবীর কোন অস্ত্রের কী মানে?

দেবী ত্রিশূলধারিণী। ত্রিশূল দিয়েই মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন দুর্গা। স্বয়ং মহাদেব তাঁকে প্রদান করেছিলেন ত্রিশূল। ত্রিশূল মানুষের তিন গুণের প্রতীক। সত্ত্ব, রজ তম এই তিন গুণকে ইঙ্গিত করে ত্রিশূলের তিন ফলা।

‘বিষ্ণু দিলেন চক্র’! দেবীর হাতে যে চক্র শোভা পায় তা আদপে ভগবান বিষ্ণুর ‘সুদর্শন চক্র’। সুদর্শন চক্রের গায়ে ১০৮টি ধারালো ফলা রয়েছে। শাস্ত্র মতে সুদর্শন চক্র ব্রহ্মাণ্ডের প্রতীক এবং দেবীশক্তি তার কেন্দ্রস্থল হিসেবে বর্ণিত। এমনকি চক্রকে আলাদা সত্তা হিসেবে পুজো করার রেওয়াজও হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত।

এই খবরটিও পড়ুন

বরুণ দেব দুর্গাকে প্রদান করেছিলেন শঙ্খ। এই শঙ্খধ্বনিকে ওঙ্কারের সঙ্গে তুলনা করা হয়। তা ছাড়া, শঙ্খ মাঙ্গলিক কাজ থেকে শুরু করে যুদ্ধারম্ভ সব কাজেই ব্যবহার করা হয়।

কোথাও কোথাও দেবীর হাতে রয়েছে অগ্নি, যা তাঁকে দিয়েছিলেন স্বয়ং অগ্নিদেব। অগ্নিদেব আদিবৈদিক দেবতা। মানব সভ্যতার শুরুতেই রয়েছে আগুনের মহিমা। দেবীর হাতে ধরা অগ্নি এক দিকে যেমন অস্ত্র, তেমনই দেবীর শক্তির প্রতীক।

পবনদেব দুর্গাকে দিয়েছিলেন তির-ধনুক। ধনুক শক্তির প্রতীক আর তির প্রকাশিত গতিশক্তিকে বোঝায়। দেবীর হাতে এই দুই অস্ত্র তাঁর শক্তিরূপকেই বর্ণনা করে।

দেবরাজ ইন্দ্র দিয়েছিলেন বজ্র। বজ্রের সঙ্গে অতি প্রাচীন প্রকৃতি উপাসনার বিশেষ যোগ রয়েছে। বজ্র অন্যতম প্রধান প্রাকৃতিক শক্তি বটে। আবার বৌদ্ধ ব্যাখ্যা অনুসারে, বজ্র জাগতিক বন্ধন থেকে চেতনাকে মুক্ত করে। সেদিক থেকে দেখলেও দেবীর বজ্রের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।

দেবীকে পদ্ম প্রদান করেছিলেন ব্রহ্মা। ভারতীয় আধ্যাত্মিকতায় পদ্ম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। তা পূর্ণ চৈতন্যকে ব্যক্ত করে। দেবীকে তন্ত্রশাস্ত্র প্রকাশিত জগৎশক্তি হিসেবেই জ্ঞান করে। সেই কারণে তাঁর হাতে ধরা পদ্ম সামূহিক চৈতন্যকেই বোঝায়। আবার মতান্তরে ব্রহ্মা নিজের কমণ্ডলু দান করেন দেবীকে। এই পাত্রে ধৃত জল সৃষ্টির প্রতীক।

দেবীর হাতে থাকে খড়্গ। কোথাও আবার থাকে তরোয়াল। পুরাণ মতে, যম এই অস্ত্র দেবীকে দিয়েছিলেন। খড়্গ একাধারে মৃত্যু ও ন্যায়বিচারের প্রতীক।

বিশ্বকর্মা দেবীকে প্রদান করেছিলেন কুঠার। কুঠার একাধারে নির্মাণ ও ধ্বংসের প্রতীক। কুঠার দিয়ে কাঠ কেটে তৈরি হয় বিবিধ আসবাব থেকে ঘরবাড়ি। অর্থাৎ এটি সৃজনের প্রতীক। আবার কুঠার একটি প্রাণঘাতী অস্ত্রও বটে। অর্থাৎ ধ্বংসের প্রতীক।

কোনও কোনও দুর্গামূর্তির হাতে থাকে গদা। শাস্ত্র মতে গদা মানুষের মোহকে চূর্ণ করে।

দুর্গার হাতে সাপও দেখা যায় কোথাও কোথাও। সাপ কুলকুণ্ডলিনী শক্তির প্রতীক। যা জাগরিত হলে সাধকের সাধনা পূর্ণ হওয়ার পথ প্রশস্ত হয়। এই সাপও দেবীকে প্রদান করেছিলেন মহাদেব।