Durga Puja Rituals: দুর্গার মহাস্নানের জলই পান করা হয় চরণামৃত রূপে! কী কী থাকে সেই জলে?

Durga Puja Rituals: দেবীর মহাস্নান শুনতে ভাল লাগলেও এই স্নানে আছে নানা ঝক্কিও। এই স্নানে লাগে নানা উপাদান। মহাস্নানের শেষে সেই জলই সপ্তমীতে চরণামৃত রূপে পান করেন ভক্তরা।

Durga Puja Rituals: দুর্গার মহাস্নানের জলই পান করা হয় চরণামৃত রূপে! কী কী থাকে সেই জলে?
Image Credit source: Veena Nair/Moment/Getty Images
Follow Us:
| Updated on: Oct 09, 2024 | 1:29 PM

বাঙালিদের মহোৎসব দুর্গা পুজো। পাঁচ দিন নানা আচার অনুষ্ঠান পালনের মাধ্যমে মাতৃ আরাধনায় মেতে ওঠেন আপামর বাঙালি যাত্রী। বাংলার বাইরে আবার গোটা দেশে এই উৎসবের মাহাত্ম্য মূলত নবরাত্রি রূপেই। বাংলায় মূলত পুজো শুরু হয় ষষ্ঠীর সকাল থেকেই। বোধনের মাধ্যমে দেব-দেবীদের ঘুম ভাঙানোর মধ্যে দিয়ে আহ্বান করা হয় অসুরদলনী দেবীর। এরপর সপ্তমীর সকালে কলাবউ স্নান। কোথাও আবার নবপত্রিকা স্নান করানো হয়।

এর পর শাড়ি পরিয়ে দেবীকে নিয়ে আসা হয় পুজা মণ্ডপে। কেউ মনে করেন কলা বউ হলেন গণেশের স্ত্রী আবার মতান্তরে নবপত্রিকা আসলে দেবীর ন’টি রূপের প্রতীক। তবে সে যে হোক না কেন এরপরেই আসে দেবীর মহাস্নানের পালা। দেবী উমা পার্বতীর আরেক রূপ। গিরিরাজ হিমালয়ের কন্যা তিনি, আবার মহাদেবের স্ত্রীও বটে। তাই তাঁর রূপসজ্জাও যে বিশাল হবে এটাই স্বাভাবিক। রূপসজ্জার আগেও আসে দেবীর স্নানের পালা! আরও ভাল ভাবে বললে এটাই দেবীর মহাস্নান।

দেবীর মহাস্নান শুনতে ভাল লাগলেও এই স্নানে আছে নানা ঝক্কিও। এই স্নানে লাগে নানা উপাদান। মহাস্নানের শেষে সেই জলই সপ্তমীতে চরণামৃত রূপে পান করেন ভক্তরা।

দেবীর মহাস্নানের প্রথমে আসে দাঁত পরিষ্কারের পালা। আট আঙুল সমান সরু বেলকাঠ দিয়ে দেবীর দাঁত পরিষ্কার করা হয়। দাঁত মাজা হয়ে গেলে দেবীর দাঁত পরিষ্কার করা হয়ে গেলে মুখ পরিষ্কার করার জন্য নিবেদন করা হয় গরম জল।

দেবীর মুখ পরিষ্কারের জন্য প্রয়োজন হাতির দাঁতে করে উপড়ে তোলা মাটি। এ ছাড়াও বেশ্যাদ্বার, রাজদ্বার-সহ আরও নানা স্থানের মাটি। প্রয়োজন উইয়ের ঢিবি থেকে তুলে আনা মাটিও।

স্নানের আগে দেবীর ত্বক পরিষ্কার জন্য নিবেদন করা হয় কাঁচা হলুদ ও তেল। দেবীকে স্নান করানোর জন্য নিবেদন করা হয় জল শঙ্খের জল। প্রয়োজন হয় গঙ্গা জল। দেবীর মহাস্নানের জন্য প্রয়োজন ঝর্না ও ওতীর্থের জল। দুধ, দই, ঘি দিয়ে স্নান করানো হয় দেবীকে। রোগভোগ যাতে দেবীকে ছুঁতে না পারে তাই নিবেদন করা হয় গোমূত্র ও গোময়। এই পাঁচ সামগ্রীকে একসঙ্গে বলে পঞ্চগব্য।

সঙ্গে লাগে পঞ্চ কষায়। পঞ্চ কষায়ের মধ্যে থাকে জাম, শিমূল, বেড়েলা, বকুল ও টোপাকূল গাছের ছাল।

সর্বশেষ আটটি কলসিতে পূর্ণ বিভিন্ন স্থানের জল দিয়ে হয় দেবীর মহাস্নান। মধু তো থাকেই সেই সঙ্গে দেবীর শরীরের ময়লা তুলতে লাগে চিনি। এই কারণেই চরনামৃতের স্বাদ মিষ্টি হয়।

দেবীর মহাস্নানে মোট ৩৫ ধরনের সামগ্রী প্রয়োজন হয়। সেগুলি হল-

১। তৈল হরিদ্রা বা তেল হলুদ ২। শঙ্খ জল ৩। গঙ্গা জল ৪। উষ্ণোদক বা গরম জল ৫। গন্ধোদক বা সুগন্ধি জল ৬। শুদ্ধ জল ৭। পঞ্চগব্য় অর্থাৎ (দুধ, দই, ঘি, গোময় ও গোমূত্র) ৮। মধু ৯। কুশোদক মানে কুশ সহিত জল ১০। পুষ্পোদক ১১। ফলোদক ১২। ঘৃত ও দুগ্ধ ১৩। নারিকেলোদক ১৪। ইক্ষুরস বা আখের রস ১৫। দধি ১৬। তিলতেল ১৭। বিষ্ণুতেল ১৮। শিশিরোদক ১৯। রাজদ্বারের মাটি ২০। চতুস্পথ মৃত্তিকা ২১। বৃষশৃঙ্গ মৃত্তিকা ২২। গজদন্ত মৃত্তিকা ২৩। বেশ্যাদ্বারের মৃত্তিকা ২৪। নদীর উভয় কুল মৃত্তিকা ২৫। গঙ্গা মৃত্তিকা ২৬। সর্বতীর্থের মৃত্তিকা ২৭। সাগরোদক বা সমুদ্রের জল ২৮। সর্বৌষধি ২৯। মহৌষধি ৩০। পঞ্চকষায় (জাম, শিমূল, বেড়েলা, বকুল ও টোপাকূল গাছের ছাল) ৩১। বৃষ্টি জল ৩২। সরস্বতী নদীর জল ৩৩। পদ্মরেণু মিশ্রিত জল ৩৪। নির্ঝরোদক ৩৫। সর্বতীর্থের জল।