কলকাতা: কিছুদিন আগেও মিডল অর্ডারে ব্যাট করতেন। দ্রুত রান তুলতে ওস্তাদ। যে কোনও পরিস্থিতি থেকে ঘুরিয়ে দিতে পারেন খেলা। এ হেন ছেলেকে আর একটু ঘষলে, মাজলে যে আরও ভয়ঙ্কর হতে পারেন, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি। আর একটু গভীরে গিয়ে বললে, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে পড়েই ক্রিকেট বোধ এবং দর্শন, দুইই বদলে গিয়েছে অভিষেক পোড়েলের। ভারতীয় ক্রিকেটে তিনিই এখন ঋষভ পন্থের বিকল্প হয়ে উঠছেন। সোজা কথায় বললেন, নির্বাচকদের নজরও রয়েছে বাংলার ২২ বছরের তরুণের উপর। তিনি যে লম্বা রেসের ঘোড়া, প্রমাণও করে দিচ্ছেন। বিজয় হাজারে ওয়ান ডে টুর্নামেন্টে চার-ছয়ের বন্যা বইয়ে দিলেন চন্দননগরের ছেলে।
দিল্লির বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমে বাংলাকে কার্যত একাই জেতালেন অভিষেক। ওপেন করতে নেমে একাই করেছেন ১৭০ নট আউট। যে আগ্রাসী মোডে ছিলেন, বিপক্ষের রান বেশি থাকলে ডাবল সেঞ্চুরিও করে ফেলতে পারতেন। ১৩০ বল খেলেছেন অভিষেক। অর্থাৎ ঝড় যেমন বইয়ে দিয়েছেন, তেমনই ধৈর্যও দেখিয়েছেন। এক দিকে অভিষেক দাঁড়িয়ে না থাকলে বাংলার পক্ষে কঠিন হতে পারত। কিন্তু বাংলার কিপার-ব্যাটার কোনও ভুল করেননি। ১৮টা চার ও ৭টা বল হারানো ছয় মেরে দিল্লিকে উড়িয়ে দিয়েছেন অভিষেক। উপ্পলের মাঠে দিল্লি তুলেছিল ২৭২-৭। অভিষেকের দাপটে ৪১.৩ ওভারেই জয় তুলে নেয় বাংলা।
বছর কয়েক আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে হামেশাই ঋষভ পন্থের ঝড় দেখা যেত। চকিতে হাফসেঞ্চুরি, সেঞ্চুরি করে নির্বাচকদের নজরে থাকতেন। অভিষেক যেন সেই কাজটাই দায়িত্ব নিয়ে করছেন। বিশেষ করে সাদা বলের ক্রিকেটে অভিষেক এখন অন্যতম আলোচিত নাম। দিল্লি ক্যাপিটালসে যাওয়ার পর থেকেই বদলে গিয়েছেন অভিষেক। সৌরভের হাতে পড়েই যেন খেলা খুলে গিয়েছে তাঁর। সেই সঙ্গে পন্থকেও দেখেছেন সামনে থেকে। সৈয়দ মুস্তাক আলিতে বাংলা কোয়ার্টার ফাইনালে বরোদার কাছে হেরে গিয়েছিল। ওই ম্যাচে তেমন কিছু করতে পারেননি। কিন্তু পুরো টুর্নামেন্টে যথেষ্ট সফল ছিলেন। সেই ফর্মই তুলে ধরছেন ওয়ান ডে ঘরোয়া টুর্নামেন্টে। ভারতীয় এ দলের হয়ে ইতিমধ্যে অস্ট্রেলিয়া সফরেও গিয়েছেন অভিষেক। সিনিয়র টিমে ঢুকতে হলে এমন আরও বিস্ফোরক ইনিংস যে দরকার, তা ভালো করেই জানেন অভিষেক।