Bengal Cricket: শিবসাগরের বোলিং মন্ত্রে অবিস্মরণীয় উত্তরণ বাংলার মেয়েদের!

তাঁর অভিজ্ঞতার 'সাগর'এ ডুব দিয়ে মুক্তো তুলে আনছেন বাংলার বোলাররা।

Bengal Cricket: শিবসাগরের বোলিং মন্ত্রে অবিস্মরণীয় উত্তরণ বাংলার মেয়েদের!
Image Credit source: নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 31, 2022 | 2:34 PM

দীপঙ্কর ঘোষাল

ক্রিকেট শুধুই ক্রিকেট নয়। মাইন্ড গেমও। ক্রিকেটীয় দক্ষতার মতোই যা প্রয়োজন। এ খানেই হয়তো দ্বিগুণ সাফল্য শিবসাগর সিংয়ের (Shivsagar Singh)। বাংলার সিনিয়র মহিলা দল থেকে শুরু করে সমস্ত বয়সভিত্তিক দলের বোলিং হেড শিবসাগর সিং। বাংলার এই প্রাক্তন ক্রিকেটার এ মরসুমেই নিয়েছেন দায়িত্ব। তাঁর অভিজ্ঞতার ‘সাগর’এ ডুব দিয়ে মুক্তো তুলে আনছেন বাংলার বোলাররা। সিনিয়র দলের কথাই ধরা যাক। সিনিয়র টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে ঝাড়খণ্ডকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলা (Bengal Cricket)। আগামিকাল কোয়ার্টার ফাইনালে নামছে বাংলার মেয়েরা। এ মরসুমে এখনও অবধি যে ক’টা ম্যাচ খেলেছে বাংলা, প্রতি ম্যাচে বোলারদের পারফরম্যান্স বাড়তি নজর কেড়েছে। প্রতিটি ফর্ম্যাটেই বোলিংয়ের বিশেষ কিছু চাহিদা থাকে। টি-টোয়েন্টিতে উইকেট নেওয়ার জন্য রান আটকানোও প্রয়োজন। ডট বলের চাপে ব্যাটাররা উইকেট দিতে কার্যত বাধ্য হন। বোলিংয়ের এই উন্নতি নিয়ে শিবসাগর সিং এবং বাংলা সিনিয়র দলের তিন বোলারের সঙ্গে কথা বললেন Tv9Bangla-র প্রতিনিধি।

ফর্ম্যাট যাই হোক, ব্যাটাররা বোর্ডে রান তুলে দিক, বোলিং ইউনিট পারফর্ম করতে না পারলে ম্যাচ জেতা কঠিন। দায়িত্ব নেওয়ার পর বোলিংয়ে কোন দিকগুলোয় নজর দিয়েছিলেন শিবসাগর সিং? প্রাক্তন রঞ্জি ক্রিকেটার বললেন ‘আমি ওদের নিয়ে কাজ শুরুর আগে কার কী প্লাস পয়েন্ট, বোঝার চেষ্টা করেছিলাম। তারপর নিজের অভিজ্ঞতা থেকে ওদের ঘষামাজা করে আরও উন্নত করার দিকে নজর দিয়েছি। টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে অনেক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। কোন লাইন-লেন্থ বেশি কার্যকর, জানি। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লেগেছে।’ মেয়েদের ক্রিকেটে বলের ওজন, মাপও আলাদা হয়। তুলনামূলক হালকা বলে বোলিংটাও চ্যালেঞ্জ। তেমনই শেখানোটাও। শিবসাগর বলেন, ‘সব মাথায় রেখে গত দু-আড়াই মাস নিয়মিত ওদের লাইন-লেন্থে জোর দিয়েছি। বোলিংয়ের বৈচিত্র কেমন হবে, ব্যাটারের মানসিকতার সঙ্গে কী ভাবে খেলতে হবে, স্নায়ুর চাপ ধরে রাখা এবং সবচেয়ে জরুরি বিষয়, বোলিং অনুযায়ী ফিল্ডিং সাজানো। একরকম বোলিং আর একরকম ফিল্ড হলে কোনও কাজেই লাগবে না।’

লেগ স্পিনার নিশা মাজি বলছেন, ‘ওঁর কোচিংয়ে আমার প্রচুর উন্নতি হয়েছে। শিবু স্যারের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আমার খুবই হেল্প হয়েছে, এটা জোর দিয়ে বলতে পারি।’ কোথায় উন্নতি হয়েছে, ব্যাখ্যা করলেন নিশা। ‘মেন্টালি বুস্ট আপ করা তো রয়েইছে, ম্যাচে কোন পরিস্থিতিকে কী ভাবে ম্যানেজ করব, স্নায়ুর চাপ ধরে রাখা, এগুলোও রয়েছে। পাশাপাশি টেকনিক্যাল দিকগুলোও রয়েছে। লাইন, লেন্থ, কোন সিচুয়েশনে কোন লাইন-লেন্থে বল করলে কার্যকরী হবে, বৈচিত্র্যের দিক থেকেও।’

গওহর সুলতানা অভিজ্ঞ বোলার। এখন খেলেন বাংলার হয়ে। শিবসাগরের হাতে পড়ে বদলেছেন তিনিও। গওহর বলছেন, ‘আমি মূলত ফ্লাইটে লোভ দেখায় ব্যাটারকে। গত দু-মাস বাংলা শিবিরে শিবু স্যারের কোচিং পেয়েছি। টি২০ ফর্ম্যাটে কী ভাবে বোলিং করা উচিত, গতির হেরফের, লাইন-লেন্থ আরও বেটার করা শিখিয়েছেন।’ তাতে সাফল্য কতটা আসছে? ‘লাভ তো অবশ্য়ই হয়েছে। ব্য়াটাররা শট খেলতে পারছে না। বেশির ভাগ সময়ই উইকেট সোজা বোলিংয়ের কথা বলেছেন। ব্যাটার শট খেলতে গিয়ে মিস করলে বোল্ড-লেগ বিফোর দুটোরই সম্ভাবনা থাকছে। টি-টোয়েন্টিতে ডট বল জরুরি। আর উইকেট-টু-উইকেট বল করলে আউটের সম্ভাবনাও বাড়ে।’

সাইকা ইশাক দীর্ঘদিন বাংলার হয়ে খেলছেন। ভারতীয় এ দলের হয়ে, মেয়েদের মিনি আইপিএলেও খেলেছেন। বলে দিলেন, ‘বাংলা টিমের বোলিং কোচ হওয়ার আগে থেকেই স্যারের কাছে কোচিং নিয়েছি। এখন স্যর বাংলা শিবিরে থাকলেও আমার সেই পুরনো দিনের মতো মনে হয়। কেরিয়ারে উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। দু-বছর বাংলার হয়ে খেলার সুযোগ হয়নি। আমার প্রত্যাবর্তনে পুরো কৃতিত্ব স্যরের।’

যে কোনও টুর্নামেন্ট হোক, বোলিং নিয়ে কোনও রকম সমস্যায় পড়লে বাংলা টিমের ‘এসওএস’ নম্বর শিবসাগর সিংই!