প্রথম দু-ম্যাচেও শুরুটা ভালো করেছিলেন। যদিও উল্লেখযোগ্য ইনিংস খেলতে পারেননি। অভিষেক শর্মার সঙ্গে তিন ম্যাচেই সঞ্জু ওপেন করবেন, সিরিজ শুরুর আগেই তা বলে দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন সূর্যকুমার যাদব। ক্যাপ্টেনের নিরাপত্তা, ভরসার মর্যাদা রাখলেন সঞ্জু স্যামসন। হায়দরাবাদে খেলা। আইপিএলের গত সংস্করণে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে নজর কেড়েছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। তাদের ডেরাতেই সঞ্জু স্যামসনের ব্যাটিং তাণ্ডব। মুস্তাফিজুরের মতো অভিজ্ঞ বোলারকেও কার্যত নেট বোলারের পর্যায়ে নামিয়ে আনলেন সঞ্জু। ম্যাচে খেলছিলেন, না নেটে ব্যাটিং ধরা কঠিন।
সঞ্জু স্যামসন আইপিএলে ভালো, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্নায়ুর চাপে ভোগেন। রাজস্থান রয়্যালস অধিনায়ক সম্পর্কে এমন অপবাদ রয়েছে। এক ম্যাচে যেন সব সমালোচনার জবাব দিলেন সঞ্জু স্যামসন। প্রতিটি ডেলিভারিই যেন বাউন্ডারি পেরোবে। এমন পরিস্থিতিই তৈরি করলেন। মুস্তাফিজুর স্লোয়ার খুব ভালো ব্যবহার করেন। তাঁর বোলিংয়ে স্টেপ আউট করে সাইটস্ক্রিনের উপরে যে ভাবে ওড়ালেন, তাতেও বার্তা ছিল যেন। মাত্র ২২ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সঞ্জু। এরপর তাণ্ডবের মাপকাঠি আরও বাড়ল।
ইনিংসের দশম ওভারে প্রথম বলটিই গ্যালারিতে ওড়াতে চেয়েছিলেন সঞ্জু। মিস করেন। সেটিই সম্ভবত এই ম্যাচে তাঁর প্রথম মিস। আর তা পুষিয়ে দিলেন পরের পাঁচটি ডেলিভারিতে পরপর পাঁচ ছক্কা মেরে। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন রাউন্ড দ্য উইকেট বোলিংয়ে এসেও পঞ্চম ছক্কা আটকাতে পারেননি। সঞ্জুদের দাপটে বাংলাদেশ বোলরাদের দিশেহারা পরিস্থিতি। ৩৭ বলে ৯৫ রানে ব্যাটিংয়ের সময় থেকে সকলেই যেন অপেক্ষা করছিলেন, ছয় মেরেই সেঞ্চুরিটা পূর্ণ হোক। একটি ডট বল হতেই সূর্য কথা বলেন, বোঝান সময় নিতে।
পরের ডেলিভারিতে সিঙ্গল নেন সঞ্জু। তিনি যে ভাবে ব্যাট করছিলেন এবং উল্টোদিকে স্কাই, দলের স্কোর ৩০০ পেরনোর পরিস্থিতি তৈরি। ১২ ওভারের মধ্যেই ১ উইকেটে ১৭৯ রান তুলে নেয় ভারত। অপেক্ষা ছিল সঞ্জুর সেঞ্চুরি পূরণের। ১৩তম ওভারের প্রথম ডেলিভারিতে বাউন্ডারি মেরে ৪০ বলে সেঞ্চুরিতে পৌঁছন সঞ্জু স্যামসন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথম সেঞ্চুরি।
অবশেষে ৪৭ বলে ১১১ রানে সঞ্জুর ইনিংস ইতি হয়। গ্যালারি থেকে বিরাট গর্জন। স্ট্যান্ডিং অবেশন। ক্যাপ্টেনের আলিঙ্গন। অবিশ্বাস্য একটা ইনিংসে হায়দরাবাদ মাতালেন সঞ্জু স্যামসন।