প্রত্যেকেরই প্রথম প্রেম থাকে। সেটা কোনও ব্যক্তি হতে পারে। কিংবা কোনও বস্তু। আবার অনেকের ক্ষেত্রে পছন্দের পেশাই প্রথম প্রেম। সকলের প্রথম প্রেম সাফল্য পায় না। ব্যক্তির ক্ষেত্রেও হতে পারে বা পেশাগত দিক থেকেও। গৌতম গম্ভীরেরও প্রথম প্রেম ছিল, আজও রয়েছে। নিজের মতো করে সেই ভালোবাসার প্রতি দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। গৌতম গম্ভীর যা উপার্জন করেন, সেই আয়ের একটা বড় অংশ যায় সমাজের নানা কাজে। এরই মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে তাঁর প্রথম প্রেমও। আপশোস হয়তো নেই, দায়িত্ববোধটা রয়েছে। এখনও সেটা নিয়ে কথা বলতে গেলে গর্বিত হন গম্ভীর। তাঁর প্রথম প্রেম জানেন?
বর্তমানে ভারতীয় ক্রিকেট দলের হেড কোচ গৌতম গম্ভীর। তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ারও সাফল্যে ভরা। দুটো বিশ্বকাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। যদিও ক্রিকেট তাঁর প্রথম প্রেম ছিল না। গৌতম গম্ভীর চেয়েছিলেন ইন্ডিয়ান আর্মিতে যোগ দেবেন। স্কুল জীবন থেকে নিজেকে সে ভাবেই তৈরি করছিলেন। পরবর্তীতে ক্রিকেটই হয়ে ওঠে পেশা। ঘরোয়া ক্রিকেট, জাতীয় দলের হয়ে খেলার পাশাপাশি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগেও সফল ক্রিকেটার এবং ক্যাপ্টেন। মেন্টরের ভূমিকাতেও সফল। ভারতীয় দলের কোচ হিসেবে প্রথম সফরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছেন। এখন চলছে ওয়ান ডে সিরিজ।
প্রথম প্রেম সম্পর্কে কী বলেছেন গৌতম গম্ভীর? ব্রেকফাস্ট উইথ চ্যাম্পিয়ন শো-র একটি এপিসোডে জিজি বলেন, ‘আমি মানসিক ভাবে পরিষ্কার ছিলাম, আর্মিতেই যোগ দেব। ক্লাস টুয়েলভের পর এমবিএ করার ইচ্ছে হয়েছিল, তারপর সেখান থেকে ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমি এবং আর্মিতে যোগ দেব। এরকমই পরিকল্পনা ছিল। টুয়েলভে পড়ার সময়ই রঞ্জি ট্রফি খেলার সুযোগ পাই। সে সময় আমাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হত। ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যাব নাকি আর্মিতে যোগ দেওয়ার লক্ষ্যেই এগোব।’
একা এই সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না গৌতম গম্ভীর। মায়ের কাছে পরামর্শ চান। গম্ভীর বলেন, ‘মাকে জিজ্ঞেস করার পর বলে-তুমি রঞ্জি খেলা শুরু করেছো, জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া থেকে এক ধাপ দূরে। তখন ইন্ডিয়া এ টিমের এত ম্যাচ হত না। অনূর্ধ্ব ১৯, রঞ্জি ট্রফিতে ভালো পারফর্ম করলে সরাসরি জাতীয় দলে সুযোগের সম্ভাবনা ছিল। তখন মা আরও বলে-দেখো এতটা পরিশ্রম করে রঞ্জি ট্রফি অবধি পৌঁছেছো, এখানে ভালো পারফর্ম করছ, এই ধারাবাহিকতা থাকলে জাতীয় দলেও সুযোগ পাবে। সেই মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, ক্রিকেটই চালিয়ে যাব। না হলে, আমি অবশ্যই আর্মিতেই যোগ দিতাম। কারণ, ওটাই আমার প্রথম প্রেম।’
আর্মিতে যোগ দিতে না পারলেও শহিদের পরিবারের জন্য নানা কাজ করছেন গৌতম গম্ভীর। তাঁর একটি ফাউন্ডেশন রয়েছে। তার মাধ্যমেই শহিদের পরিবারের সন্তানদের পড়াশোনার দায়িত্ব পালন করেন। সুকমায় শহিদ জওয়ানদের ২৫টি পরিবারের সন্তানদের যাবতীয় পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন। তারা যতটা পড়তে চায়, গৌতম গম্ভীরের ফাউন্ডেশনই সেই খরচ দেবে। প্রথম প্রেমের জন্য এই দায়িত্বটা পালন করে যেতে চান গম্ভীর।