ভারতকে অনুরোধের ভাবনা আর নেই। এমনকি, কূটনৈতিক সমাধানের রাস্তাও খুঁজতে চাইছে না। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বিতর্কে ভারতকে পাল্টা দেওয়ার কথা ভেবে ফেলল পাকিস্তান। পাক অধিকৃত কাশ্মীর যা পিওকে নামে পরিচিত, সেখানে ট্রফি ট্যুর করতে চলেছে ও দেশের ক্রিকেট বোর্ড। আয়োজক দেশের ট্রফি ট্যুর নতুন নয়। কিন্তু ভারতকে খোঁচা দেওয়ার জন্যই যে পিওকে-র স্কার্দু, গুনজা, মুজাফরাবাদের মতো বিতর্কিত জায়গাগুলোকেও বাছা হয়েছে। আর এতেই রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে দুই দেশের।
দীর্ঘদিন পর এসসিও সামিটের জন্য পাকিস্তানের পা রেখেছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ভাবা হয়েছিল, দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের বরফ গলতে পারে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত যাতে অংশ নেয়, সে ব্যাপারেও ঘুরিয়ে অনুরোধ করা হয়েছিল। তাতেও বরফ গলেনি। রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিদের পাকিস্তানে যাওয়ায় ‘না’ বলে দিয়েছে ভারতের বিদেশমন্ত্রক। এতেই শেষ নয়, নভেম্বরের শেষ দিকে দৃষ্টিহীনদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজকও পাকিস্তান। ভারতীয় টিম সেখানে পাঠানো হবে না, জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় কবাডি টিমের পাক সফরে তিনটে প্রদর্শনী ম্যাচ খেলার কথা ছিল। ওই সফরও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। আপোষহীন ভারতের পাক সরকারও একগুঁয়ে মনোভাব তুলে ধরছে।
পাক বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মুমতাজ জারা বালুচ স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে আর বল চালাচালিতে নেই পাকিস্তান। তাঁর কথায়, ‘পাকিস্তান সব সময় বলেছে, খেলা রাজনীতির উর্ধ্বে।’ যা শুনে একগাল হেসে ভারতের প্রশ্ন, তাই যদি হবে, তা হলে পিওকে-তে ট্রফি ট্যুর কেন রাখল পিসিবি?
রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে একটা প্রশ্ন ক্রমশ মাথাচাড়া দিচ্ছে, পাকিস্তানে কি আদৌ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হবে? আইসিসিকে ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, পাকিস্তানে খেলতে যাবে না। বিশ্ব ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা হাইব্রিড মডেলে টুর্নামেন্ট করতে আগ্রহী। কিন্তু তা খারিজ করে দিয়েছে পিসিবি। পাক সরকারের তরফে ক্রিকেট বোর্ডের কাছে বার্তা গিয়েছে, ভারত খেলতে না চাইলেও আপত্তি নেই। টুর্নামেন্ট পাকিস্তানেই হবে। কিন্তু আইসিসি কি মানবে? আটদলীয় টুর্নামেন্টে ভারত না খেলা মানে বিপুল টাকার ক্ষতি। সেই কারণেই পাকিস্তান থেকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সরানো হতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকায় টুর্নামেন্ট আয়োজন করার সম্ভাবনার কথা শোনা গিয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভারতেও হতে পারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। বিসিসিআই নাকি কথা বলতেও শুরু করেছে এ নিয়ে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি যদি হাতছাড়া হয়, মুখ পুড়বে পাকিস্তানের। শুধু তাই নয়, বিপুল আর্থিক ক্ষতিও হবে তাদের। পাকিস্তান কি বরাবরের মতো ভারতের কাছে ‘অপমানিত’ই হবে? নাকি, হাইব্রিড মডেলে ‘খেলা’ শেষ করবে?