ট্যাটু ভর্তি শরীর। ক্রিকেটের ব্যাড বয়! রাশিয়ান স্ত্রীর সঙ্গে নাকি ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছে। ট্রোল হন কথায় কথায়। আইপিএলে অভিযুক্তের কাঠগড়ায়। যখন-তখন চোটের কবলে। বল করলে ব্যাট করেন না। ব্যাট করলে বল করেন না। কেউ কেউ দাগিয়ে দিয়েছিলেন, এ ছেলেকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। নষ্ট প্রতিভা। এমন অপবাদ যাঁকে নিতে হয় দিনের পর দিন, তাঁর মানসিক অবস্থা কেমন হতে পারে? অবসাদে চলে যাচ্ছিলেন এক সময়। যে টিম ক্যাপ্টেন করে ফিরিয়েছিল, সেখানেও ভরসা পাননি। সেখান থেকে হারিয়েই যেতে পারতেন। তার বদলে ভারতীয় ক্রিকেটের ব্যাড বয় ফিরে এলেন অবিশ্বাস্য ভাবে। শুধু কি ফিরলেন, বুঝিয়ে দিলেন, তিনিই ভবিষ্যৎ ভারতীয় ক্রিকেটের।
বিশ্বকাপ ফাইনালের তিনটে মুহূর্ত। বিরাট কোহলির অবিশ্বাস্য ইনিংস। সূর্য যাদবের অকল্পনীয় ক্যাচ। আর যাঁর বলে ধরলেন ক্যাচ, সেই হার্দিক পান্ডিয়া। তখন ৩০ বলে ৩০ রান দরকার। টি-টোয়েন্টিতে এমন টার্গেট হাসতে খেলতে ওঠে। ঠিক তখনই হার্দিক দিলেন মোক্ষম ধাক্কাটা। বিস্ফোরক ফর্মে থাকা হেনরিখ ক্লাসেনকে ফিরিয়ে দিলেন। ওটাই ম্যাচে ফেরাল, বিশ্বকাপটাও জিতিয়ে দিল। হার্দিক সারা বিশ্বকাপ জুড়ে দারুণ পারফর্ম করেছেন। বিশেষ করে বল হাতে। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে মিডিয়াম পেসাররাই সবচেয়ে সফল হন। হার্দিকে তাই বাজি ধরেছিলেন খোদ রোহিত শর্মা। নিরাশ করলেন বরোদার ছেলে। সারা টুর্নামেন্টে বল হাতে টিমকে টেনেছেন মাঝের ওভারগুলোয়। তার পুরস্কারও দিলেন রোহিত।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ক্যাপ্টেনের পদ থেকে ছাঁটাই করা হয়েছিল রোহিতকে। তাঁর বদলে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল হার্দিককে। তাতে কি সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গিয়েছিল দাদা-ভাইয়ের? সবই এতদিন গুঞ্জন ছিল। তা প্রমাণও করে দিলেন রোহিত। বড় দাদার মতো বিশ্বকাপ জিততেই হার্দিককে চুমু দিলেন রোহিত। গোঁফ-দাড়ি কেটে নতুন লুকে বিশ্বকাপ ফাইনালে নেমেছিলেন। ঘরে-বাইরে সমস্যায় থাকা হার্দিকও জানতেন এই বিশ্বকাপই তাঁকে ফিরিয়ে দিতে পারে পুরনো সাম্রাজ্য। হলও তাই। হার্দিককে উষ্ণ আলিঙ্গন দিলেন বিসিসিআই সচিব জয় শাহ।