Virat Kohli: আগ্রাসনটাই শুধু পড়ে আছে, জেতার ইচ্ছে কোথায় বিরাটের?

মাঠের খারাপ আচরণের সঙ্গে উদ্দীপনা আর আগ্রাসনের তুলনা চলবেই। মাঠে বিরাট কোহলি (Virat Kohli) ওর জেতার অদম্য ইচ্ছের সঙ্গে আগ্রাসনকে চমত্‍কার মিশিয়ে দিত। কিন্তু এখন ওর আগ্রাসনটাই শুধু পড়ে আছে।

Virat Kohli: আগ্রাসনটাই শুধু পড়ে আছে, জেতার ইচ্ছে কোথায় বিরাটের?
Virat Kohli: আগ্রাসনটাই শুধু পড়ে আছে, জেতার ইচ্ছে কোথায় বিরাটের? (ছবি-টুইটার)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 17, 2022 | 6:15 PM

বিক্রম ভোরা

এই ভারতীয় দল (Team India) যতটা আওয়াজ করে, ততটা কাজে করে দেখাতে পারে না। দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) ক্লাব স্তরের একটা দলের কাছে যদি আত্মসমর্পন করারই থাকে, তা হলে কিছু করার নেই। সুনীল গাভাসকরের মতো ধারাভাষ্যকার আশা জাগিয়ে হাইপ তৈরি করে বলেছিলেন, ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ১১২ রান করা দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ঘরের মাঠে দম বন্ধ হয়ে আসার মতো। ভারত স্বচ্ছন্দে এটা করতে পারবে। সেটা মিথ্যা প্রমাণিত করার জন্যও পরিশ্রম করার মানে নেই।

দুটো গুরুত্বপূর্ণ টেস্টে হেসে বসার একাধিক কারণ থাকতে পারে। মনে হতে পারে, পাঁচ দিন খেলার মানসিকতা ভারতীয় টিমের নেই। ভিন্টেজ ওয়াইন পুরনো বলেই তো গুরুত্ব পায়। কেরিয়ারও যত পুরনো পন্থা আঁকড়ে এগনোই উচিত। ভারতীয় বোলিং ততটাও প্রাণঘাতী নয়, যতটা মনে করা হয়। প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত, পাঁচটা দিন ভালো করে কাটিয়ে দেওয়া। অনেকেই ভাবে, অফিসে কোনও নিয়ম ভাঙলেই এইচআর বোধহয় তাদের বরখাস্ত করবে। সেই কারণেই কর্মীরা দিনের ২০% ভালো কাটানোর চেষ্টা করে। ভারতীয় টিমের ক্ষেত্রেও অনেকটা তেমনই হয়েছে। রাহানে, পূজারা, উমেশ, অশ্বিন ছবিতে ছিলেন না। বিহারী আবার শুধু ক্যামিও রোল পেল।

মাঠের খারাপ আচরণের সঙ্গে উদ্দীপনা আর আগ্রাসনের তুলনা চলবেই। মাঠে বিরাট কোহলি (Virat Kohli) ওর জেতার অদম্য ইচ্ছের সঙ্গে আগ্রাসনকে চমত্‍কার মিশিয়ে দিত। কিন্তু এখন ওর আগ্রাসনটাই শুধু পড়ে আছে। ওঁ মুখের অঙ্গভঙ্গি, অদ্ভুত আচরণ, শাস্তি যোগ্য ভাষার ব্যবহার করে যেন নিজের উপর নিজেই কাদা ছোড়ার ব্যবস্থা করছেন। এ দিক-ও দিক জিতে উনি কিংবদন্তি হয়ে উঠেছেন। এই তত্ত্বকে সমর্থন করার লোকের অভাব নেই। ফলে দলের অন্য সদস্যদের কাছেও একই আচরণবিধি চলে যাচ্ছে। যে কারণে মাঠে অশ্বিনের অপ্রীতিকর আচরণ দেখি। যা দেখে আমরা বলি, আরে, অশ্বিনের সঙ্গে পাঙ্গা নিও না। আর তাই ভুলে যাই, রাগ দেখানোর বদলে ওর উইকেট নেওয়া উচিত। এইরকম পরিস্থিতিগুলোই পরিকল্পনা ঘেঁটে দেয়। কিছু লোক যখন বাস মিস করে পরিবহণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। তারা কিন্তু নিজেদের দেরিতে বাস স্টপেজে পৌঁছনো নিয়ে ভাবে না।

ডিন এলগারকে এলবিডব্লিউ ডিআরএস রিভিউয়ের পর নাচক করে দিয়েছিলেন আম্পায়ার ইরাসমাস। তারপর যে আচরণ পুরো টিম মাঠে করল, তা একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়। পরের পনেরো মিনিট ধরে তর্জন-গর্জন চলল। সবার সঙ্গে অশ্বিনও ছিল। আচরণবিধি তোয়াক্কা না করেই স্টাম্প মাইকে ক্ষোভ উগড়ে দেওয়া কিন্তু কোনও ভাবেই স্পোর্টসম্যান স্পিরিট হতে পারে না। ওই সময় আট উইকেট তোলার বদলে ভারতীয় ক্রিকেটারদের মনোভাবে আশ্চর্যজনক ভাবে পাল্টে গিয়েছিল। এলগারের উদ্দেশ্যে কোহলিকে বলতে শোনা গিয়েছিল— আগের ম্যাচে যে সেরা হয়েছে, তার কাছে পারফরম্যান্স মানা যায় না। অবিশ্বাস্য! জশপ্রীতকে দেখলেই পালিয়ে যাচ্ছে! কাম অন বয়েজ়!

এর পর কোহলিকে বলতে শোনা যায়— ১৩ বছর ধরে এমনটা করছি, ডিন। ভাবছ, তোমরা আমাকে চুপ করিয়ে দেবে? ২০১৮ সালে কে জো’বার্গ টেস্ট হোক চায়নি, সেটা আমরা সবাই খুব ভালো করে জানি।” ক্যাপ্টেনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাহুল বলেন, ‘গোটা দেশ এগারো জনের বিরুদ্ধে খেলছে।’

ডিআরএস সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পারা কোহলি মাটিতে লাথি মারা, হতাশ দেখানো মেনে নেওয়া যায়, ডিআরএসকে মানতে না চাওয়া— এ সব কেউ যদি চোদ্দ বছর বয়সে করে, মেনে নেওয়া যায় কিন্তু যে দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছে, সেই যদি এমন করে, তা হলে তাকে থামতে বলতেই হবে। বলতে হবে, দলের বাকিদের বকাঝকা করে মনোবল বাড়ানো যাবে না। পিছন থেকে লড়াই হয় না। লড়াকু মানসিকতা সামনে দাঁড়িয়ে তুলে ধরতে হয়।

হার এমনিতেই খারাপ লাগার। এই রকম হার লজ্জার। একটা টিম যদি যদি কেঁপে যায়, নিজেদের পরিকল্পনাতে বাস্তবায়িত করতে না পারে, তখন হার বা জয় নিয়ে কেউই খুব বেশি ভাবে না। সবাই দেখে টিমটা কেমন খেলেছে।