FIFA World Cup 2022: যুবভারতী কাঁপানো এক ফুটবলার নামছেন কাতার বিশ্বকাপের মঞ্চে!
Phil Foden: ফুটবল বিশেষজ্ঞদের মতে, এ বারের বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিটের তালিকায় রয়েছে ইংল্যান্ড। গ্যারেথ সাউথগেটের দলকে বিশ্বকাপের ট্রফি হাতে তোলার জন্য যেমন হ্যারি কেনদের দুরন্ত ফুটবল প্রয়োজন, তেমনই প্রয়োজন ফিল ফডেনের মতো তুরুপের তাসদের জ্বলে ওঠা।
প্রান্তিক দেব
সালটা ২০১৭। এ বারের মতোই পুজোর পর ভারতে বসেছিল ফুটবল (Football) কার্নিভাল। উৎসবের মরসুম শেষে কলকাতা ডুব দিয়েছিল ফুটবল উৎসবে। অনেকটা এ বার যেমন কাতারে হতে চলেছে বিশ্বকাপ (FIFA World Cup 2022)। পাঁচ বছর আগে, ২০১৭ সালে ফিফা অনূর্ধ্ব ১৭ ফুটবল বিশ্বকাপ (FIFA U-17 World Cup) এখনও ভুলে যায়নি ভারত। ফুটবলের তরুণ প্রতিভাদের চিনে নেওয়ার মঞ্চ ছিল সেটা। আর ওই মঞ্চেই জাত চিনিয়েছিলেন কয়েকজন তরুণ ফুটবলার। ২০১৭ থেকে ২০২২— পাঁচ বছরে সেই তরুণ ফুটবলারদের কেউ কেউ হারিয়ে গিয়েছেন। কেউ আবার হয়ে উঠেছেন নিজেদের দেশের ভরসা। এমনই এক তরুণ ফুটবলারের গল্প তুল ধরল TV9BANGLA।
২০১৭ সাল থেকে চলুন আরও ১০ বছর পিছিয়ে যাওয়া যাক। ২০০৭ সাল। ইংল্যান্ডের এক সাত বছরের ছেলের স্বপ্নে একটাই নাম, ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। বাবা, দাদা, কাকা, বাড়ির সবাই ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের ফ্যান। মা শুধু আকাশী নীল জার্সির সমর্থক। মায়ের হাত ধরে ছেলেরও সিটির গ্যালারিতে যাওয়া। বাকিদের সঙ্গে ব্লু মুন গানে গলা মেলানো। একবার সুযোগ হল ম্যাসকট হিসেবে মাঠে নামার। ব্যস সেই শুরু। আর মাঠ থেকে তোলা যায়নি সেই শিশুকে। স্থানীয় ক্লাবে সেই ছোট্ট ছেলে এমন প্রতিভা দেখাতে শুরু করল যে, খোঁজ নিয়ে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি ক্লাবের স্কাউটরা সরাসরি তার বাড়িতে এসে হাজির। পরের ১০টা বছর শুধুই উত্থানের গল্প। ধাপে ধাপে স্বপ্ন সত্যির পথে এগিয়ে যাওয়া ওই ছোট্ট ছেলের। স্বপ্নের মোড় ঘুরিয়ে দিল কলকাতার এই বহু চেনা যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন।
২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর। অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপের ফাইনালে সে দিন মুখোমুখি ইংল্যান্ড ও স্পেন। মাঠে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, একটা স্বপ্নের ফাইনাল ম্যাচ দেখেছিলেন। ১৬ বছরের কয়েকটা ছেলে সে দিন মুগ্ধ করে দিয়েছিল যুবভারতীকে। বিশ্বকাপের ট্রফি নিয়ে মাঠ ছাড়ল ইংল্যান্ড। আর গোল্ডেন বলের ট্রফি নিয়ে মাঠ ছাড়ল ওই ছোট্ট ছেলেটা। মনে আছে সেই ১৬ বছরের তরুণের নাম? ফিল ফডেন। ফাইনালে জোড়া গোল সহ জুনিয়র বিশ্বকাপে ৩টি গোল। সঙ্গে মুগ্ধ করে দেওয়ার মতো ফুটবল।
সেই মুগ্ধতা এখনও আছে। বলা উচিত আরও বেড়েছে। কারণ, সে দিনের সেই ছেলেটা এখন ম্যাঞ্চেস্টার সিটির অন্যতম ভরসা। জুনিয়র বিশ্বকাপের সেরা ফুটবলারের ট্রফি ফডেনকে এনে দিয়েছিল ম্যাঞ্চেস্টার সিটির সিনিয়র দলে এন্ট্রি পাস। পেপ গুয়ার্দিওলাও যাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারেন না। সবাই তাঁকে ডাকেন জুনিয়র ইনিয়েস্তা নামে। এ বারের কাতার বিশ্বকাপে যে ফুটবলারদের দিকে গোটা বিশ্ব তাকিয়ে থাকবে, তাঁদের অন্যতম ফিল ফডেন। ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের তুরুপের তাস।
ফুটবল বিশেষজ্ঞদের মতে, এ বারের বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিটের তালিকায় রয়েছে ইংল্যান্ড। গ্যারেথ সাউথগেটের দলকে বিশ্বকাপের ট্রফি হাতে তোলার জন্য যেমন হ্যারি কেনদের দুরন্ত ফুটবল প্রয়োজন, তেমনই প্রয়োজন ফিল ফডেনের মতো তুরুপের তাসদের জ্বলে ওঠা। যুবভারতী থেকে কাতার। বল পায়ে স্বপ্ন সত্যি করার গল্প। কাতার বিশ্বকাপে ফিল ফডেনের দুরন্ত ফুটবল বা গোল তাঁর ইংল্যান্ডকে যতটা গর্বিত করবে, ততটাই আনন্দ দেবে এই শহরকেও। গর্বিত করবে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনকে। এই শহর, এই মাঠই যে প্রথম চিনিয়েছিল ফডেনকে!