Brata Malware: অ্যান্ড্রয়েডে ফের ব্রাটা ম্যালওয়্যারের হানা! ব্যাঙ্কিং তথ্য চুরির পর ফোন থেকে সব কিছু মুছে দিচ্ছে
What is BRATA, How it works: ব্রাটা নামক একটি ম্যালওয়্যার নতুন ভাবে, নতুন রূপে দ্রুততার সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে ম্যালওয়্যারটি। এই ম্যালওয়্য়ারের স্বভাব-চরিত্র, হানা দেওয়ার উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। সুরক্ষিত থাকতেই বা কী করা উচিত, তাও জেনে নিন।
বিশ্বের প্রায় ৮৫ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর ফোন চালিত হয় অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের সাহায্যে। আর সেই কারণেই এই অপারেটিং সিস্টেম হ্যাকার ও সাইবার অপরাধীদের সহজ টার্গেট। অ্যাপেল-এর আইওএস অপারেটিং সিস্টেম হ্যাক করাটা তুলনামূলক ভাবে কষ্টকর, কিন্তু অ্যান্ড্রয়েডে অপেক্ষাকৃত সহজ। তার মূল কারণ হল, অ্যান্ড্রয়েড ওএস (Android OS) বা অপারেটিং সিস্টেম হল একটি সোর্স-বেসড অপারেটিং সিস্টেম এবং এটি ইউজারদের বিভিন্ন থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করতে দেয়। যদিও গুগল সর্বদাই সতর্ক করে আসছে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ইউজারদের। কেবল মাত্র প্লে স্টোর থেকেই অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলে গুগল। কারণ থার্ড পার্টি অ্যাপ স্টোর থেকে কোনও অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করাটা সত্যিই খতরনাক হতে পারে। অযাচিত অ্যাপের ফোকল গলে জালিয়াতরা গ্রাহকের ফোনের অ্যাকসেস নিয়ে নেয়। ভয়ঙ্কর কিছু ম্যালওয়্যারও ঢুকিয়ে দেয় ফোনে। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে এমনই এক ক্ষতিকারক ম্যালওয়্যার অ্যান্ড্রয়েড (Android Malware) স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছে, যার নাম ব্রাটা (BRATA)।
ক্লিফাই নামক কম্পিউটার সিকিওরিটি ফার্মের একটি নতুন রিপোর্টে বলা হয়েছে, দ্রুততার সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে ম্যালওয়্যারটি। সেই তালিকায় রয়েছে চিন, ব্রিটেন, স্পেন-সহ আরও একাধিক দেশ। এই ম্যালওয়্য়ারের স্বভাব-চরিত্র, হানা দেওয়ার উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। সুরক্ষিত থাকতেই বা কী করা উচিত, তাও জেনে নিন।
কী এই ব্রাটা?
ব্রাটা একটি রিমোট অ্যাকসেস ট্রোজ়ান যা আপনার যাবতীয় লগইন ক্রেডেনশিয়াল চুরি করে নিতে পারে। খুব সহজ ভাষায় বলতে গেলে, এমনই একটি ভাইরাস যা আপনার ফোনে প্রবেশ করে, ব্যাঙ্কিং সংক্রান্ত সব তথ্য এককাট্টা করে জালিয়াতদের হাতে তুলে দেবে। ২০১৯ সালে এই ভাইরাস প্রথম লক্ষ্য করে জনপ্রিয় সাইবার সিকিওরিটি কোম্পানি ক্যাসপারস্কি। অ্যান্ড্রয়েড র্যাট বা রিমোট অ্যাকসেস টুল হিসেবেই এটি পরিলক্ষিত হয়েছিল এবং তখন সে কেবল মাত্র ব্রাজ়িলের ইউজারদের টার্গেট করছিল।
ক্লিফাই-এর নতুন রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, নতুন ফিচার্স দিয়ে এই ম্যালওয়্যারটিকে আপগ্রেড করা হয়েছে। অর্থাৎ নতুন বোতলে সেই পুরনো মদ! ফ্যাক্টরি রিসেট করার জন্য এই ব্রাটা ম্যালওয়্যারে এখন জিপিস ট্র্যাকিং রয়েছে। এর অর্থ হল, সে আপনার ফোন থেকে সমস্ত তথ্য চুরি করবে কিন্তু তার কোনও চিহ্ন রেখে যাবে না।
কী ভাবে ব্রাটা কাজ করে?
কোনও একটি অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে এই ম্যালওয়্যার আপনার ফোনে ইনস্টল করা যেতে পারে। প্রাইমারি কোনও অ্যাপের সঙ্গেই ভেকধারী আর একটি গৌণ অ্যাপে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকে ম্যালওয়্য়ারটি। হতে পারে, প্লে স্টোরে এমন অনেক অ্যাপ রয়েছে, যেগুলিতে ব্রাটা ম্যালওয়্যারটি ঢুকে আছে। যদিও তার কোনও প্রমাণ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আপনার ফোনে ব্যাঙ্কিং অ্যাপের লগইন তথ্য ক্যাপচার করার পরে এটি তা জালিয়াতদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। এই সব তথ্য কাজে লাগিয়েই জালিয়াতরা ভুয়ো ট্রান্জাকশন করে থাকে, বা পরবর্তীতে ডার্ক ওয়েবে তা বিক্রিও করে দিতে পারে।
ব্রাটা ম্যালওয়্য়ার থেকে সুরক্ষিত থাকার উপায়
ব্রাটা-র মতো এমন ভয়ঙ্কর ম্যালওয়্যার থেকে সুরক্ষিত থাকতে কোনও ভাবেই থার্ড পার্টি অ্যাপ ডাউনলোড করা যাবে না যেটি সন্দেহজনক মনে হচ্ছে। কোনও অ্যাপ ডাউনলোড করার আগে অতি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, যাতে বিশ্বস্ত ডেভেলপারের দ্বারা তা যেন পাবলিশ করা হয়। তাছাড়াও যেখান-সেখান থেকে পাওয়া কোনও লিঙ্কে ক্লিক করার আগে কয়েক বার ভাবতে হবে।
সুরক্ষার দ্বিতীয় ধাপটি হল অ্যাপ পার্মিশন। কোনও অ্যাপ ইনস্টল করার পরে আপনাকে যাচাই করে নিতে হবে যেন অ্যাপটি আপনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করার আগে অনুমতি চায়। পার্শিমন হিসেবে থাকতে পারে কন্ট্যাক্টের অ্যাকসেস, পাসওয়ার্ড, লোকেশন এবং আরও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। কোনও অ্যাপ ইউজারের কাছে তথ্য সংগ্রহে জন্য পার্মিশন নেয় কি না, তা যাচাই করতে সেটিংস > অ্যাপস > অ্য়াপ ম্য়ানেজমেন্ট > যে অ্যাপের পার্মিশন চেক করাতে চান, সেটি এবং সব শেষে পার্মিশন অপশনে ক্লিক করতে হবে।
আরও পড়ুন: দেশে সাইবার অপরাধের ঘটনা কেন বেড়েই চলেছে? সুরক্ষিত থাকার মোক্ষম দাওয়াই জেনে নিন
আরও পড়ুন: ফোন মেরামতি থেকে কাছাকাছি সার্ভিস সেন্টার, সব সমস্যার সমাধানে সার্ভিস প্লাস অ্যাপ লঞ্চ করল শাওমি
আরও পড়ুন: প্রথম ভারতীয় গায়ক হিসেবে মেটাভার্সে পারফর্ম করলেন দালের মেহেন্দি