Data Privacy Day 2022: দেশে সাইবার অপরাধের ঘটনা কেন বেড়েই চলেছে? সুরক্ষিত থাকার মোক্ষম দাওয়াই জেনে নিন
প্রজাতন্ত্র দিবসের ঠিক হাতে গোনা দু'দিন পরেই আসে তথ্য সুরক্ষা দিবস। ২৮ জানুয়ারি, শুক্রবারই সেই দিন। সাড়ম্বরে পালিত না হলেও বিশ্ব তথ্য সুরক্ষা দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম।
২৮ জানুয়ারি বিশ্ব তথ্য সুরক্ষা দিবস। ইদানিংকালে প্রতিটা মুহূর্তে যেখানে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য অন্যের হাতে চলে যাওয়ার একটা ভয় কাজ করে, সেখানে তথ্য সুরক্ষিত রাখতে আলাদা করে একটা দিনের গুরুত্ব অনেকটাই। হালফিলে দেশে এত সাইবার হানার ঘটনা কেন ঘটছে, কারা সবথেকে বেশি এর শিকার হচ্ছেন, সুরক্ষিত থাকতেই বা কী করণীয় – এই সব কিছু নিয়েই প্রতিবেদনটি লিখছেন আইইএম ল্যাবস-এর চিফ টেকনিক্যাল অফিসার হৃত্বিক লাল।
প্রজাতন্ত্র দিবসের ঠিক হাতে গোনা দু’দিন পরেই আসে তথ্য সুরক্ষা দিবস (Data Privacy Day)। ২৮ জানুয়ারি, শুক্রবারই সেই দিন। সাড়ম্বরে পালিত না হলেও বিশ্ব তথ্য সুরক্ষা দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে হালফিলে যেখানে সাইবার অপরাধের (Cyber Crime) ঘটনা মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়ে চলেছে। কেন এই তথ্য সুরক্ষা দিবস পালিত হয়? আমাদের সমস্ত ব্যক্তিগত গোপন তথ্য কতটা সুরক্ষিত সেই নিয়ে সচেতনতা ছড়াতে পালিত হয় ডেটা প্রাইভেসি ডে বা তথ্য সুরক্ষা দিবস। ১৯৮১ সালে ইউরোপের বৃহত্তম সংগঠন ‘কাউন্সিল অব ইউরোপ’ কনভেনশনের মধ্য দিয়ে ২৮ জানুয়ারি বিশ্বব্যাপী তথ্য সুরক্ষা দিবসের উদযাপন শুরু করে। তার পর থেকেই তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পালিত হয়। আজকের প্রযুক্তির যুগে বিজ্ঞান যেখানে উন্নততর, সব কিছুই আজ অনলাইন মাধ্যমে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, আর সেই সুযোগে অপরাধ দুনিয়াতে ঘটনার ঘনঘটাও বেড়ে চলেছে দিনের পর দিন। আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য (Personal Data),সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে সামান্য ভুলচুক হলেই তার রাশ চলে যেতে পারে অন্য কারও কাছে। অন্য কেউ কন্ট্রোল করতে পারে আমাদের ডিভাইস এবং অজান্তেই অপরাধ দুনিয়ায় প্রবেশ করতে পারি আমরাও কিংবা সেই অপরাধীদের পাতা ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হতে পারে আট থেকে আশি প্রত্যেকেই।
কিন্তু জানেন কি, কারা বেশি মাত্রায় শিকার হন এই সাইবার অপরাধ এবং ডেটা প্রাইভেসি ভায়োলেশন বা তথ্য গোপনীয়তা লঙ্ঘনের কাণ্ডে? এনসিআরবি-র (ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো) পরিসংখ্যান অনুযায়ী বয়ষ্ক মানুষজন এবং মহিলারাই সব থেকে বেশি সাইবার ক্রাইমের শিকার হয়ে থাকেন। বিগত দু’বছরে যে সংখ্যাটা বেড়ে গিয়েছে প্রায় অনেকটাই।
এনসিআরবির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্য়ে পশ্চিমবঙ্গে সাইবার অপরাধের সংখ্যা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২০ সালে রাজ্যে যেখানে ৭১২টি সাইবার ক্রাইম কেস রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে, তার মধ্যে খাস কলকাতাতেই রেজিস্টার্ড হয়েছিল ১৭২টি কেস। বাংলায় মহিলা এবং বয়স্কদের সঙ্গে হওয়া ক্রাইমের সংখ্যা ৩৪৪টি। এর মধ্যে গোপন তথ্য ফাঁস, জালিয়াতি, সোশ্যাল মিডিয়ায় কুকথার মাধ্য়মে আক্রমণের চেষ্টা, ফিশিং, স্কিমিং সমেত আরোও একাধিক সাইবার ক্রাইমের ঘটনা ঘটেছে।
পরিসংখ্যান থেকে একটা বিষয়ে স্পষ্ট হওয়া গিয়েছে যে, ২০২০ সালে সবক্ষেত্রেই সাইবার ক্রাইমের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর তার কারণ হিসেবে উঠে আসছে মূলত লকডাউন ও তার জন্য পুরো দেশের ওয়ার্ক ফ্রম হোম এবং অনলাইন ফেসিলিটির ব্যাপক বৃদ্ধি। লকডাউনে বেকারত্ব বাড়তে থাকায় অপরাধীরা ভুল পথে উপার্জনের রাস্তাই বেছে নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তার জন্য শহর ও রাজ্যজুড়ে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সাইবার ক্রাইমের ঘটনাও। ২০২০ সালে গোটা দেশে শুধু মাত্র মহিলাদের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইমের সংখ্যা ছিল ৪০২২টি। এছাড়াও ব্যক্তিগত তথ্য ভায়োলেশনের অপরাধ সংক্রান্ত ঘটনা ঘটেছিল ১৫৫২ টি। যদিও এখনও পর্যন্ত এনসিআরবি-র তরফ থেকে ২০২১ সালের দেশজুড়ে সাইবার অপরাধের যাবতীয় তথ্য সম্পূর্ণভাবে পাওয়া যায়নি। কিন্তু ২০২০ সালের তুলনায় যে ২০২১-এ সাইবার ক্রাইম এবং ডেটা প্রাইভেসি ভায়োলেশনের অপরাধ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে তা বুঝতে রকেট সায়েন্স জানার প্রয়োজন হয় না!
সাইবার অপরাধের এই ক্রমবর্ধমান গ্রাফ, একটা বিষয় পরিষ্কার করে দিচ্ছে যে, সমস্ত রকম ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের আরও তৎপর এবং সতর্ক হতে হবে। বয়স্ক মানুষজন যাতে বেশি মাত্রায় অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার না করেন, তার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি মহিলাদের মধ্যেও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আজকের বিশেষ দিনে দাঁড়িয়ে সাইবার অপরাধ মুক্ত দেশ গড়তে এই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ।
আরও পড়ুন: আমেরিকায় বিমান চলাচলে ৫জি নেটওয়ার্ক ভয়ের কারণ হলেও ভারতে হবে না, কেন জানেন?
আরও পড়ুন: জিমেল অ্যাকাউন্ট হ্যাক হলে কী ভাবে বুঝবেন? ইমেল সুরক্ষিত রাখার টিপস জেনে নিন