Smart Pacemaker: যুগান্তকারী আবিষ্কার, এসে গেল স্মার্ট পেসমেকার, মানবদেহে প্রবেশ করার পর ধীরে ধীরে দ্রবীভূত হয়ে যাবে…
এক ধরনের অস্থায়ী পেসমেকার (Pacemaker) তৈরি করেছেন গবেষকরা। যা ধীরে ধীরে মানবদেহে দ্রবীভূত হয়ে যাবে। অর্থাৎ সেটিকে অপসারণের জন্য আর একটি আক্রমণাত্মক পদ্ধতি পরিচালনা করার প্রয়োজন হবে না।
বড়সড় আবিষ্কার। এক ধরনের অস্থায়ী পেসমেকার (Pacemaker) তৈরি করেছেন গবেষকরা। যা ধীরে ধীরে মানবদেহে দ্রবীভূত হয়ে যাবে। অর্থাৎ সেটিকে অপসারণের জন্য আর একটি আক্রমণাত্মক পদ্ধতি পরিচালনা করার প্রয়োজন হবে না। গবেষকদের সর্বশেষ গবেষণা থেকে দেখা গিয়েছে, এটিকে তাঁরা সফল ভাবে ত্বকের ওয়্যারলেস সেন্সগুলির (Wireless Sensors) একটি সিরিজ়ের সঙ্গে যুক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। রোগীর অত্যবশ্যক বিষয়গুলির নিরীক্ষণ করতে এবং যখনই প্রয়োজন তখনই পেসিংও অ্যাডজাস্ট করতে দেয়। আর সেই সব স্মার্ট কার্যকলাপের জন্যই এই টেম্পোররি পেসমেকারকে বলা হচ্ছে স্মার্ট পেসমেকার।
ডিভাইসটি খুবই পাতলা। সম্পূর্ণ ভাবে জৈব সামঞ্জস্যপূর্ণ বা বায়োকম্প্যাটিবল হিসেবেই ডিজ়াইন করা হয়েছে এটিকে। এর অর্থ হল এই পেসমেকারটি মানুষের ব্যাটারি থেকে কোনও বিষাক্ত বা অনাক্রম্য প্রতিক্রিয়া ট্রিগার করবে না। তার থেকেও বড় কথা হল এই স্মার্ট পেসমেকার চালনা করার জন্য কোনও ব্যাটারি বা অন্য কিছুর প্রয়োজন হবে না।
পেসমেকারটি সম্পূর্ণ রূপে জৈব শোষণযোগ্য হওয়ার জন্য ডিজ়াইন করা হয়েছে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, এটি জলে দ্রবণীয় ধাতু এবং অন্যান্য উপাদান দিয়ে তৈরি যা কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই শারীরিক তরলে দ্রবীভূত হয়।
গত বছর নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই পেসমেকারটিকে প্রথম বার দেখিয়েছিলেন। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত ডিভাইসটি একাধিক আপগ্রেডেশন পেয়েছে। তার মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ আপডেটটি হল, এটি এখন রোগীর ত্বকের সঙ্গে সংযুক্ত পরিধানযোগ্য ডিভাইসগুলির একটি এবং সম্পূর্ণ সমন্বিত নেটওয়ার্কের সঙ্গেও সজ্জিত।
একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে এই স্মার্ট পেসমেকারের। রোগীর হার্ট রেট মনিটর করতে পারে এটি। মাপতে পারে সেই রোগীরই দেহের তাপমাত্রাও। পেসমেকারটির শক্তিসঞ্চয়ের জন্য কোনও তারের প্রয়োজন নেই অর্থাৎ এটি একটি ওয়্যারলেসলি পাওয়ার নিতে সক্ষম। পেসমেকার থেকে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি ডাক্তাররা কোনও দূরবর্তী স্থান থেকেও মনিটর করতে পারবেন, যা একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। গবেষকরা ইতিমধ্যেই এই সিস্টেমটি ইঁদুর এবং কুকুরের মধ্যে পরীক্ষা করে দেখেছেন – ঠিক যেমন ভাবে এটি কাজ করা উচিৎ, সেই ভাবেই কাজ করেছে।
বর্তমানের সাফল্য সত্ত্বেও গবেষকরা এই স্মার্ট পেসমেকারটিকে এখনও ডেভেলপমেন্টের প্রাথমিক পর্যায় হিসেবে গণ্য করছেন। মানুষের শরীরে প্রবেশ করিয়ে সেটিকে পরীক্ষার আগে আরও বৃহত্তর কোনও প্রাণীর শরীরে টেস্টিংয়ের পরিকল্পনা করেছেন তাঁরা।
তাছাড়া, এখনও পর্যন্ত এই পেসমেকারটি শুধুমাত্র হার্টের বাইরে স্থাপন করার জন্য ডিজ়াইন করা হয়েছে। গবেষকদের আসল লক্ষ্য হল, এটিকে হৃদয়ের ভিতরে প্রবেশ করিয়ে যাতে নিরাপদে দ্রবীভূত হতে পারে, তার চেষ্টা করা। আর সেই মহৎ কাজের জন্য প্রযুক্তিটিকে এখনও অনেক বেশি কার্যকর হতে হবে।