Spider: সংবাদপত্রের ভুয়ো তথ্যের জালে জড়িয়ে হাসফাঁস অবস্থা মাকড়সার
Misinformation: ওই গবেষণা করতে প্রায় পাঁচ হাজার অনলাইন সংবাদপত্রের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকরা। ৮১টি দেশের সংবাদপত্রের নমুনা নিয়েছিলেন তাঁরা।
মন্ট্রিয়াল: সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে মিথ্যা, অর্ধসত্য তথ্য ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত। ভুয়ো তথ্যের জালে সংবাদমাধ্যমও অনেক সময় জড়িয়ে পড়ে। অনলাইনে প্রতিবেদনে এই ভুয়ো তথ্যের রমরমা তুলনায় দেখা যায়। নিছক ভুলের পাশাপাশি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেও ভুয়ো তথ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন এক দল মানুষ। সেই ভুয়ো তথ্যের জাল থেকে নিস্তার মেলেনি মাকড়সারও। যারা জাল বুনে পোকামাকড়কে ফাঁদে ফেলে, তারাই মানুষের সৃষ্ট ভুল তথ্যের জালে জড়িয়ে গিয়েছে। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মাকড়সা সংক্রান্ত যে সব খরব সারা বিশ্ব জুড়ে অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে, তার অধিকাংশই ভুলে ভরা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মাকড়সাকে যতটা ভয়ঙ্কর হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে, বাস্তবে মাকড়সা আদেও ততটা ভয়ঙ্কর নয়।
কানাডার মন্ট্রিয়ালের ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ক্যাথেরিন স্কটের নেতৃত্ব হয়েছে এই গবেষণা। স্কট এবং তাঁর সহকর্মীদের করা এই গবেষণাপত্র ২২ অগস্ট প্রকাশিত হয়েছে কারেন্ট বায়োলজিতে। সেখানেই তাঁরা তুলে ধরেছেন সংবাদমাধ্যমের ভুল তথ্যের ফাঁদে পড়েছে মাকড়সাও। এ নিয়ে স্কট বলেছেন, “মাকড়সা নিয়ে অধিকাংশ প্রতিবেদনই ভয় দেখানোর জন্য বা আঘাত দেওয়ার উদ্দেশ্যে। মাকড়সা কামড়ায় না বললেও চলে। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, মাকড়সার কামড়ের বিষয়টি।”
ওই গবেষণা করতে প্রায় পাঁচ হাজার অনলাইন সংবাদপত্রের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকরা। ৮১টি দেশের সংবাদপত্রের নমুনা নিয়েছিলেন তাঁরা। ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মানুষ এবং মাসড়সা সংক্রান্ত যে সব প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে সে গুলি বিশ্লেষণ করেই মাকড়সার ব্যাপারে ভুল তথ্যের বিষয়টি তুলে ধরেছেন ওই গবেষকরা। সেই বিশ্লেষণ করে তাঁরা দেখেছেন, মাকড়সা সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ৪৩ শতাংশই অতিরঞ্জিত। এমনকি ‘খুনি’, ‘যন্ত্রণাদায়ক’, ‘দুঃস্বপ্ন’-এর মতো শব্দও মাকড়সাকে বিশেষিত করতে লেখা হয়েছে। তাঁদের বিশ্লেষণ জানাচ্ছে, প্রাদেশিক সংবাদপত্রের থেকে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রে মাকড়সা সংক্রান্ত প্রতিবেদন বেশি অতিরঞ্জিত। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুপস্থিত সংবাদপত্রের অনলাইন প্রতিবেদনে।
স্টক জানিয়েছেন, বিশ্বে মাকড়সার প্রায় ৫০ হাজার প্রজাতি রয়েছে। তার মধ্যে কিছু প্রজাতি বিষাক্ত। কিন্তু মাকড়সার অধিকাংশ প্রজাতি বিভিন্ন পোকামাকড় খেয়ে মানুষের উপকার করে। তিনি জানিয়েছেন, মাকড়সা কামড় দেয় এ কথা মোটেই ঠিক নয়। স্টক বলেছেন, “ব্রাউন রিক্লুস এবং ব্ল্যাক উইডো প্রজাতির মাকড়সা ছাড়া অন্য সব প্রজাতি মাকড়সার কামনোর ঘটনা খুবই বিরল। কিন্তু সংবাদমাধ্য়মের প্রতিবেদনে মাসড়সার কামড় নিয়ে প্রচুর শব্দ খরচ করা হয়েছে। এমন কিছু এলাকায় এমন কিছু মাকড়সার কামড়ের কথা লেখা হয়েছে, যা সেই এলাকায় দেখা যায় না। এবং কামড়ের জেরে যে সব লক্ষণের কথা লেখা হয়েছে, তাও ঠিক নয়। মাকড়সার কামড় নিয়ে অধিকাংশ প্রতিবেদনেই কোনও প্রমাণ নেই যে সেই ক্ষতের জন্য মাকড়সার কামড় দায়ী।“ তিনি জানিয়েছেন, মাকড়সা নিয়ে যত ভয় সংবাদমাধ্যমে দেখানো হয়েছ, ততটা ভয়ঙ্কর নয় তারা। সঠিক তথ্য তুলে ধরলে মাকড়সার সৌন্দর্যের ব্যাপারেও অবহিত হতে পারবেন সাধারণ মানুষ।