২ সন্তান নীতির পথে মোদী সরকার?
তৃণমূল নেতাকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করার অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতী দলের বিরুদ্ধে। ঘটনায় মৃত ইসলামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য স্বামী বাপি রায়।
তৃতীয় দফায় মোদী সরকার কী করবে। ৪০০ পার হলে কী করত। ৪০০ পার না হওয়ায় তার কতটা হবে। এসব নিয়ে নানা আলোচনা, জল্পনা রয়েছেই। আমরা একটা খবর পাচ্ছি। যেটা বাস্তবায়িত হলে বলতেই হবে এই সরকারের অন্যতম বড় পদক্ষেপ। যাতে কিনা দেশের চালচিত্রই বদলে যেতে পারে। সুতরাং বিষয়টা আপনাদের বলতেই হচ্ছে। আলোচনার সুবিধার জন্য আমি একটু পুরনো প্রসঙ্গ ছুঁয়ে মূল খবরে আসি। স্বাধীনতার ঠিক পরেই ১৯৫২ সালে, প্রথম উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে ভারত সরকারিভাবে ফ্যামিলি প্ল্যানিং প্রোগ্রাম ঘোষণা করে। ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে দেশে কনট্রাসেপ্টিভের বহুল ব্যবহার শুরু হয়। ১৯৮৬ সালে ডক্টর নিত্য আনন্দের তৈরি প্রথম ওরাল কনট্রাসেপ্টিভ পিল, সহেলির ব্যবহারে অনুমোদন দেন রাজীব গান্ধী। এগুলো সবই দেশে পরিবার পরিকল্পনায় এক একটা বড় মোড়। যেমন জরুরি অবস্থার সময় কুখ্যাত নসবন্দি। দেখুন ভারতে পরিবার পরিকল্পনায় স্টেট কখনও ফোর্স করেনি। সচেতনতা ও গর্ভনিরোধক ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হয়। আর মনে করা হয় গরিবি কমানো গেলে ও শিক্ষার বিস্তার হলে, পরিবার আপনিই ছোট হয়ে আসবে। ব্যতিক্রম নসবন্দি। ইন্দিরা গান্ধী টু চাইল্ড পলিসির কথা বলেন। এজন্য কোনও আইন করা হয়নি। আর সঞ্জয় গান্ধীর নেতৃত্বে শুরু হয়ে যায় পুরুষদের জোর করে নির্বীজকরণ। বলা হয় জরুরি অবস্থার সময়ে ৬০ লক্ষ ভারতীয়কে ফোর্সড স্টেরিলাইজেশন করানো হয়েছিল। কাউ বেল্টে গ্রামে নসবন্দি-র টিম ঢুকছে। আর পুরুষেরা পালিয়ে গিয়ে গমের খেতে লুকোচ্ছেন। এসব গল্প আমরা জানি। নসবন্দির প্রতিবাদে দিল্লির তুর্কমান গেটে জনতা-পুলিস সংঘর্ষ তো ইতিহাসের কালো অধ্যায়ে ঢুকে গিয়েছে। তো খবর হল, সম্ভবত সেই ইন্দিরা গান্ধীর দুই সন্তান নীতিই আইন করে ফিরিয়ে আনতে পারে বর্তমান সরকার। দেখুন গত কয়েকবছরে সংসদে একাধিকবার প্রাইভেট মেম্বার বিল হিসাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিল এসেছে। এনিয়ে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে বিজেপি সাংসদেরা দরবার করেছেন। তাতে বলা হয়েছে দুয়ের বেশি সন্তান হলে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হোক। জেলে পাঠানো হোক। সরকারি পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হোক। সরকারি চাকরি বাতিল করা হোক। এমন নানা দাওয়াই সেসবের মধ্যে ছিল। অসম ও উত্তরপ্রদেশ সরকার রাজ্যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন চালুর কথাও বলেছে। অনেকে বলেন এখন দেশে ৮৫ শতাংশ স্টেরিলাইজেশন মহিলাদের ওপর হয়। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন চালু হলে তা কমবে। আবার উল্টো যুক্তি হল, দুয়ের বেশি সন্তান হলে যদি চাকরি যায়। তাহলে সরকারি চাকরিতে মহিলাদের অনুপাত কমে যাবে। তো সেসব যাই হোক না কেন, আপাতত খবর এটাই পাচ্ছি যে সরকারের ৩য় দফার মেয়াদে সংসদে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিল পেশ হতে পারে। যার মোদ্দা কথাই হবে ২ সন্তান নীতি। সূত্র মারফত খবর পাচ্ছি, আইন আনার আগে একটা কমিটি তৈরি করতে চায় কেন্দ্র। কথা বলা হবে আইন কমিশনের সঙ্গেও। কমিটির রিপোর্ট এবং ল’ কমিশনের রেকমেন্ডেশন সরকারের কাছে জমা পড়লেই সংসদে বিল আনা হবে। অসম ও উত্তরপ্রদেশ সরকারের পরিকল্পনায় আগে বলা হয়, দুয়ের বেশি সন্তান হলে নানা সরকারি পরিষেবা মিলবে না। কেন্দ্রের বিলে এই মডেলই অনুসরণ করা হতে পারে বলে খবর। মোদী সরকারের প্রথম দুই দফায় আমরা একাধিক বড় পদক্ষেপ দেখেছি। তৃতীয় দফায় জোট সরকারের আমলে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে কোনও পদক্ষেপ করা হয় কিনা, সেদিকে নজর তো রাখতেই হবে।