বন্ধুত্বের হয় না পদবী! মানুষ হোক বা পশু – অটুট থাকতে পারে বন্ধুত্ব। আমার মানুষের সঙ্গে পশুপাখিদের বন্ধুত্বের কাহিনিও আমাদের মন জিতে নেয়। তেমনই এক অপরিচিত কাহিনি নেটপাড়ায় এখন ভাইরাল (Viral)। এক মহিলার চুলে (Woman’s Hair) বাসা বেঁধেছিল একটি পাখি (Bird)। প্রায় তিন মাস ওই মহিলার চুলেই থাকত পাখিটি। ব্রিটেনের ওই মহিলা ট্যুইট করে ঘটনাটি জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, পাখিটি দল থেকে পরিত্যক্ত হওয়ার পরে তাঁর চুলেই বাসা বেঁধে ৮৪ দিন পর্যন্ত ছিল। মহিলার নাম হানা বুর্ন। পেশায় ফটোগ্রাফার ও কপিরাইটার হানা নতুন জীবন ও নতুন কাজ শুরু করতে পাড়ি দিয়েছিলেন ঘানাতে। সেখানেই তাঁর সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছিল। ২০১৮ সালে বর্ষার সময় একদিন তিনি লক্ষ্য করেন, দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ছোট্ট একটি পাখি। আর তারপরই হানা তাঁর চুলেই পাখিটির বসতবাড়ি গড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, অনুমতি দেন তাঁর চুলেই পাখিটির অবাধ বিচরণের।
First bird of my day: blackbird #firstbirdofmyday #whatsyours Thinking about the devastating fire at #Parkgate. Being on the #DeeEstuary last week left me spellbound. A landscape of birds-feathered marvels I live for. At my happiest with them. So sad. @RSPB_BurtonMere pic.twitter.com/uKsJa99WrR
— Hannah Bourne-Taylor (@WriterHannahBT) March 20, 2022
হানা বুর্ন জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে সে দিন খুব বৃষ্টি হচ্ছিল ঘানায়। তাঁর বাড়ির সামনের আম গাছটির দিকে তাকিয়ে দেখেন যে, প্রচণ্ড ঝড়ে একটি পাখির বাসা উড়ে গিয়েছে। আর সেই সময়ই তাঁর নজরে আসে ওই ছোট্ট পাখিটি। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ঘটনার বিবরণ করতে গিয়ে হানা বলেছেন, “আমার ছোট্ট আঙুলের সাইজ়ে ছিল ওই পাখিটি। বিস্কুটের মতো ওই পাখির পালকের রং ছিল। চোখ দুটো ছিল পেনের কালির মতো। আর ওর ঠোঁটটা ছিল একবারে পেনসিলের নিবের মতো।”
তাঁর কথায়, “ঝড়ের কারণে পাখিটি দলছুট হয়ে গিয়েছিল। আম গাছ থেকে উড়ে গিয়েছিল ওর বাসা। চোখ দুটো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, আর ভয়ে পাখিটা তখন থরথর করে কাঁপছিল। ছোট্ট একটা পাখি, ওর জন্য আমারও খুব চিন্তা হচ্ছিল। কী ভাবে ওর দেখভাল করব, তার জন্য আমি সারারাত ধরে রিসার্চ করেছিলাম। একটা তোয়ালের মধ্যে পাখিটাকে নিয়ে তারপরে ওকে কার্ডবোর্ডের বাক্সের ভিতরে রেখে দিয়েছিলাম।”
পাখিটার দেখভালের জন্য বিশেষজ্ঞেরও পরামর্শ নিয়েছিলেন হানা বুর্ন। বললেন, “প্রতিদিন পাখিটা আমার চুলে ছোট ছোট বাসা তৈরি করছিল, যা আমাকে হতবাক করে দিয়েছিল। নিজেকে ও চুলের পর্দার নিচে আটকে রাখত এবং ঠোঁট দিয়ে আলাদা আলাদা স্ট্র্যান্ডগুলিকে একত্রিত করত। আর তারপরই সেগুলি দিয়ে এমনই একটা বৃত্তাকার ভাস্কর্যের সৃষ্টি করেছিল, যা এক্কেবারে একটা পাখির বাসার মতোই হয়ে গিয়েছিল। তার ভিতরেই থাকত পাখিটা। প্রতিদিন ঘুরে আসত আর তারপরে আমার চুলের ভিতরে ঢুকে পড়ত মিস্টি পাখিটা।”
একজন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ হানাকে বলেছিলেন যে, ছোট পাখিটি নিজেকে বনের জন্য প্রস্তুত করতে কমপক্ষে ১২ সপ্তাহ সময় নেবে। এই সময়কাল একবার অতিক্রান্ত হয়ে গেলে পাখিটি উড়ে যেতে পারবে এবং বছরের শেষ দিকে নিজের দলের সঙ্গেও যোগ দিতে যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে উঠবে। পাখিটি যখন শেষমেশ ৮৪ দিনের সময়কাল অতিক্রম করে উড়ে যায় স্বাভাবিক ভাবেই হানার চোখ দুটো ভারাক্রান্ত হয়ে আসে। মন খারাপের সেই গলায় তিনি বললেন, “আমি এর আগে ফিঞ্চ পাখিদের উড়ে যেতে দেখতাম, আর আমার মনটা ভাল হয়ে যেত। কিন্তু এবারে এই পাখিটা যখন উড়ে যাচ্ছিল, আমার মন খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল।”
আরও পড়ুন: পিৎজা ডেলিভারি নিচ্ছে জিনস-টিশার্ট পরা বাঁদর! অবাক নেট দুনিয়া, দেখুন আজব ভাইরাল ভিডিয়ো
আরও পড়ুন: মাথা বোঝাই বস্তায় দুই হাত, ঘুরছে জীবনের চাকা! সাইকেল চালকের স্কিল দেখে মুগ্ধ নেটপাড়া
আরও পড়ুন: এই ড্রাইভারের স্কিল দেখে সবাই অবাক! ‘সুতোর উপর দিয়ে গাড়ি চালালেন’, দাবি নেটিজেনদের