আত্মহত্যা করতে গঙ্গায় ঝাঁপ, ২৫ কিলোমিটার ভেসে গিয়েও বেঁচে গেলন ৬৫’এর বৃদ্ধা

Ganga: কথায় বলে, 'রাখে হরি মারে কে'। সেটাই যেন ফলে গেল নদিয়ার শান্তিপুরে। নিজের জীবন শেষ করতে চাওয়া ৬৫ বছরের এই বৃদ্ধা গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়েও ভেসে উঠলেন। শুধু তাই নয়, গঙ্গায় প্রায় ২৫ কিলোমিটার ভেসে গিয়েও অক্ষত তিনি। বুধবার এমনই ঘটনা ঘটেছে নদিয়ার শান্তিপুর বেলঘড়িয়া পঞ্চদেবতা ঘাটে।

আত্মহত্যা করতে গঙ্গায় ঝাঁপ, ২৫ কিলোমিটার ভেসে গিয়েও বেঁচে গেলন ৬৫'এর বৃদ্ধা
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 02, 2021 | 12:02 AM

নদিয়া: ছেলে মারা গিয়েছে। নিজেও অসুস্থ। রোগ আর শোক নিতে পারছিলেন না ৬৫ বছরের বৃদ্ধা লক্ষ্মী দেবী। নিজের জীবন শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কথায় বলে, ‘রাখে হরি মারে কে’। সেটাই যেন ফলে গেল নদিয়ার শান্তিপুরে। নিজের জীবন শেষ করতে চাওয়া ৬৫ বছরের এই বৃদ্ধা গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়েও ভেসে উঠলেন। শুধু তাই নয়, গঙ্গায় প্রায় ২৫ কিলোমিটার ভেসে গিয়েও অক্ষত তিনি। বুধবার এমনই ঘটনা ঘটেছে নদিয়ার শান্তিপুর বেলঘড়িয়া পঞ্চদেবতা ঘাটে।

জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুরে শান্তিপুর বেলঘড়িয়া পঞ্চ দেবতার ঘাটের মাঝ গঙ্গা দিয়ে ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধার দেহ ভেসে যেতে দেখেন কয়েকজন মৎস্যজীবী। এরপর নৌকা নিয়ে মাছরাঙ্গায় গিয়ে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করেন এক সুকুমার সরকার নামে এক মৎস্যজীবী। প্রথমে অবশ্য তাঁরা ভেবেছিলেন বৃদ্ধা মারা গিয়েছেন। কিন্তু ডাঙায় তুলতেই বৃদ্ধার জ্ঞান ফিরে আসে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা খবর পাঠান শান্তিপুর থানায়। স্থানীয়রা এসে প্রাথমিক পরিচর্জা করেন তাঁর।

এদিকে খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় শান্তিপুর থানার পুলিশ। এলাকার লোকজনের সাহায্যে শান্তিপুর থানার পুলিশ বৃদ্ধাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ওই বৃদ্ধা এখন অনেকটাই সুস্থ বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ ওই বৃদ্ধার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে।

এদিকে সুস্থ হওয়ার পরে ওই বৃদ্ধা জানান, তাঁর নাম লক্ষ্মী প্রামাণিক। তাঁর বাড়ি বর্ধমান জেলার মেমারিতে। দীর্ঘদিনের মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। স্বামী নেই। ছেলেও মারা গিয়েছেন চার মা আগে। তাঁর নিজেরও কঠিন অসুখ। সেই অবসাদ থেকে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন তিনি। এদিন স্নান করার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে সমুদ্রগড় ঘাট থেকে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়েছিলেন তিনি। তবে আত্মহত্যা চেষ্টা করেও বেঁচে যান। প্রায় ২৫ কিলোমিটার জলপথে ভেসে আসার পরেও অদ্ভুতভাবে তাঁর কোনও শারীরিক সমস্যাই হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, সুকুমার সরকার নামে এক মৎস্যজীবী প্রথমে দেখতে পান ওই বৃদ্ধাকে। তাঁকে ভেসে যেতে দেখে নৌকা করে উদ্ধার করেন ওই সুকুমার। ডাঙায় আনা হলে স্থানীয়রা তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলেন। এর পর এলাকার প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য পুলিশ এবং হাসপাতালে খবর দেন। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয় বৃদ্ধাকে। কিন্তু কেন আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন?

বৃদ্ধার নিজের কথায়,  “মরতেই এসেছিলাম। ছেলে মারা গিয়েছে চার মাস আগে। আমি নিজেও অসুস্থ। আর শোক অশান্তদি নিতে পারছি না। তাই আত্মহত্যা করতে ধাত্রীগ্রামে গঙ্গার ঘাট থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলাম।”  এখন পুলিশ বৃদ্ধার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন। আরও পড়ুন: মর্মান্তিক! স্বাস্থ্যসাথী কার্ডই মৃত্যু ডেকে আনল তরতাজা যুবকের