বোলপুর: ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলছে লোকসভা নির্বাচন। ১৩ মে বোলপুরে ভোট রয়েছে। জারি হয়ে গিয়েছে আদর্শ আচরণবিধি। রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে চরম ব্যস্ততা। আর এসবের মধ্যেই এক বিজেপি নেতার মৃত্যু ঘিরে হইচই বীরভূমে। রবিবার রাতেই মৃত্যু হয়েছে বিজেপির তফসিলি জাতি-উপজাতি মোর্চার ৫ নম্বর মণ্ডল সভাপতি তন্ময় দাসের। জানা যাচ্ছে, গতরাতে বীরভূমের নানুরে এক দলীয় বৈঠকে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে ফেরার পথেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তাঁর। আর এই মৃত্যু ঘিরেই ‘তৃণমূলের ষড়যন্ত্রের’ তত্ত্ব তুলে ধরছে বিজেপি শিবির। সোমবার শান্তিনিকেতন থানায় গিয়ে নিজেদের সন্দেহের কথা লিখিতভাবে জানিয়েছে বিজেপি। মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গেও কথা বলেছেন বিজেপির স্থানীয় নেতারা।
বিজেপির বোলপুর জেলা সাংগঠনিক সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডলের বক্তব্য, ‘নির্দিষ্ট করে কোনও অভিযোগ আমরা করিনি। কিন্তু গতকাল বৈঠক চলাকালীন তৃণমূলের জনৈক দুই-তিনজন ব্যক্তি প্রচণ্ড হুমকি দিয়েছিল। সেই কারণে আমাদের ধারণা, তৃণমূলের প্রচ্ছন্ন হুমকি ও ষড়যন্ত্রের কারণেই এটি ঘটেছে।’ বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে মহকুমার পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গেও তাঁদের কথা হয়েছে। তাঁর দাবি, কীভাবে মৃত্যু হল তফসিলি জাতি-উপজাতি মোর্চার মণ্ডল সভাপতির, সে বিষয়ে সঠিক তদন্ত করা হোক। মহকুমা পুলিশ আধিকারিকও তাঁদের এই বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেতা। তফসিলি জাতি-উপজাতি মোর্চার নেতা তন্ময় দাসের মৃত্যুও যথেষ্ট রহস্যজনক বলে মনে করছেন সাংগঠনিক জেলা সভাপতি।
পদ্ম শিবিরের এই অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল তৃণমূলের বীরভূম জেলার কোর কমিটির সদস্য বিকাশ রায়চৌধুরীর সঙ্গেও। ওই বিজেপি নেতার মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই বলেই দাবি তাঁর। তৃণমূল নেতা বলেন, ‘ওঁর দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে। প্রতিটি মৃত্যুই দুঃখজনক। তৃণমূল কংগ্রেস এই ধরনের কোনও কাজকে প্রশ্রয় দেয় না। বাংলার মানুষের তৃণমূলের উপর যে আস্থা-বিশ্বাস রয়েছে, তাতে আমাদের এসব করার কোনও প্রয়োজন নেই। এই মিথ্যাচারের রাজনীতি বন্ধ হওয়া উচিত।’ মৃত বিজেপি নেতার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের পক্ষেও সওয়াল করেছেন তিনি। বিকাশ রায়চৌধুরীর স্পষ্ট কথা, যদি কেউ দোষী হয়, তাহলে অবশ্যই শাস্তি হওয়া দরকার। কিন্তু মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি কখনোই কাম্য নয়। তৃণমূল নেতার দাবি, ওই নেতার পরিবারের সদস্যরাও বলছেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর।