অনুব্রতর নির্দেশ বলে কথা! ৩ বছর বাদে বিশ্বভারতীতে ইউনিট খুলল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ

বিশ্বভারতীর স্টেট ব্যাঙ্কের পাশে আজ সংগঠনের পতাকা তুলে শাখা সংগঠনের কাজ শুরু করে দিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীরা।

অনুব্রতর নির্দেশ বলে কথা! ৩ বছর বাদে বিশ্বভারতীতে ইউনিট খুলল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 28, 2021 | 12:56 PM

বীরভূম: যেমন কথা, তেমন কাজ। অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশের পরই ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন ফের বিশ্বভারতীতে ছাত্র ইউনিট চালু করল তৃণমূল কংগ্রেস। বছর তিনেক পর বিশ্বভারতীতে ফের শাখা সংগঠনের কাজ শুরু করে দিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। শেষ ৩ বছর ধরে বিশ্বভারতীতে পড়ুয়াদের কোনও আন্দোলনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ যুক্ত ছিল না। বিশ্বভারতীর স্টেট ব্যাঙ্কের পাশে আজ সংগঠনের পতাকা তুলে শাখা সংগঠনের কাজ শুরু করে দিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীরা।

সম্প্রতি তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল দলের ছাত্র-নেতাদের নির্দেশ দেন, বিশ্বভারতীতে ঢুকে রাজনীতি শুরু করার। জেলা সভাপতি হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়ে দিয়েছিলেন, বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর দেখানো পথেই দলের ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা হাঁটবে। জেলা সভাপতির নির্দেশ পেতেই সেই মতো এ দিন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখা সংগঠন খোলা হয়েছে বলে দলের ছাত্র নেতারা জানিয়েছেন।

অনুব্রতর দাবি ছিল, বিশ্বভারতীতে গৈরিকীকরণের চেষ্টা চালাচ্ছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তাই এর প্রতিবাদে তৃণমূলকেও রাজনীতিতে নামতে হবে। এমনকী, উপাচার্যকেও ঘেরাও করে রাখারও নিদান দিতে শোনা যায় তাঁকে। সেই মতো শুক্রবার রাত থেকে উপাচার্যের বাংলো ঘেরাও করে রাখা হয় বলে খবর। এরপর আজ সকালেই তৃণমূলের পতাকা তুলে ছাত্র ইউনিটের সূচনা করল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। নতুন করে ইউনিট গঠনের পরই টিএমসিপি-র বার্তা, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী যেভাবে গেরুয়া রাজনীতির প্রভাব বিস্তার করতে চাইছেন, তার প্রতিবাদে রুখে দাঁড়াবে তারা।

তবে গোটা বিষয়টিকে খুব একটা ইতিবাচক চোখে দেখছে না বিশ্বভারতীর প্রাক্তন পড়ুয়া এবং আবাসিকরা। গেরুয়া হোক বা সবুজ, সবরকম রাজনীতি থেকে দূরে রেখেই বিশ্বভারতীকে রবীন্দ্র আদর্শে গড়ে তোলার পক্ষেই সায় দিচ্ছেন তাঁরা। একই মত অধ্যাপকদের একটা বড় অংশেরও। এই নিয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে না চাইলেও রাজনীতিকরণের পালটা রাজনীতি অসন্তুষ্ট করেছে রবীন্দ্র-প্রেমীদের।

অন্যদিকে, সম্প্রতি তিন পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় যে দফতর ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। সেই বিক্ষোভ তুলতে গিয়ে কার্যত হাতাহাতি বেঁধে যায় বিশ্বভারতীর নিরাপত্তাকর্মী ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। পড়ুয়ারা অভিযোগ তোলেন, বিশ্বভারতী নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের গায়ে হাত তুলেছে। এরপরই বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদুৎ চক্রবর্তীর আপ্ত সহায়কের গাড়ি দাঁড় করিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান পড়ুয়ারা। তখন তিনি পড়ুয়াদের গাড়ি চাপা দিতে উদ্যত হন বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন আন্দোলনকারীরা। এর পরই রাতে উপাচার্যের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেন পড়ুয়াদের একাংশ। অভিযোগ, রাতভর উপাচার্যের বাড়ির সামনে বসে থাকেন তাঁরা।

ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, “পশ্চিমবাংলায় শিক্ষা ব্যবস্থার যেমন অন্তর্জলি যাত্রা হয়ে গিয়েছে। আইন শৃঙ্খলারও তাই অবস্থা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটা গুন্ডামি করার জন্য নয়। রাজনীতি করার জন্য নয়। আমাদের কাছে শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী একটা গর্বের বিষয়। সারা দুনিয়ায় বিখ্যাত। কবি গুরুর নাম জড়িয়ে রয়েছে। এখানে যদি রাজনীতির আখড়া করতে চায়, আমার ধারনা তারা যে বাংলার ঐতিহ্য পরম্পরার কথা বলেন নিজের হাতে সেটা শেষ করছেন।” আরও পড়ুন: সরকারের কাছে বকেয়া কয়েক কোটি টাকা, মন্ত্রীকে চিঠি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের