কোচবিহার: দুয়ারে সরকার (Duare Sarkar) , দুয়ারে রেশনের (Duare Ration) পর দুয়ারে শিক্ষক! এমনই পরিকল্পনা নিতে চলছে কোচবিহার (Cooch Bihar) প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান হিতেন বর্মন (Hiten Barman)। মঙ্গলবার ডিপিএসসি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব বুঝে নিতে আসেন হিতেনবাবু। সেই দফতরের সংবর্ধনা দিতে উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারপার্সন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, শিক্ষা দফতরের পরিষদীয় মন্ত্রী পরেশ চন্দ্র বর্মন, সিতাই বিধানসভা বিধায়ক জগদীশ বর্মা বসুনিয়া সহ তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা।
সেখানে হিতেনবাবু দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দুয়ারে শিক্ষক-এর পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, “আমি কোনও নির্দেশ দিচ্ছি না। সরকারি কোনও গাইডলাইন নেই। কিন্তু আমি আবেদন জানাব শিক্ষক সংগঠন ও স্থানীয় শিক্ষকদের কাছে। তাঁদের সঙ্গে অতিসত্ত্বর বসে এই আবেদন জানাব, যেহেতু করোনার (Corona) কারণে স্কুল বন্ধ তাই ছাত্রছাত্রীদের কাছে মাস্টার মশাই ও দিদিমণিদের যেতে।”
তিনি আরও যোগ করেন, করোনা পরিস্থিতি জন্য স্কুল বন্ধ রয়েছে। তাই স্থানীয় সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকাদের কাছে আবেদন, যাঁরা বিদ্যালয়ের কাছাকাছি আছেন, তাঁরা যেন ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ খবর নেন এবং কেউ যদি কোন বিষয়ে জানতে চায় তা জানিয়ে দেবেন। এইটকু করতেই পারে শিক্ষক শিক্ষিকারা। মন্তব্য নতুন দায়িত্বপ্রপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি হিতেন বর্মনের।
তিনি আরও যোগ করেন, যাঁরা দূরে আছেন, তাদের জন্য অসুবিধা হতে পারে। কিন্তু স্কুলের পাশে থাকা শিক্ষকদের তো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। অতিসত্বর এই আবেদন নিয়ে শিক্ষক সংগঠন ও স্থানীয় শিক্ষকদের আলোচনা করে দুয়ারে দুয়ারে যেতে বলব শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের। জানান তিনি।
উল্লেখ্য, করোনার কারণে গত একবছরের বেশি সময় ধরে ক্লাস বন্ধ প্রাথমিক স্কুলগুলিতে। এখন নিয়ম করে মিড-ডে মিলের কাঁচামাল তুলে দেওয়া পড়ুয়াদের হাতে। হাতে গোনা কয়েকটি প্রাথমিক স্কুলে অনলাইন ক্লাস হলেও বন্ধ রয়েছে পঠন-পাঠন। এইই প্রেক্ষিতে দুয়ারে শিক্ষকের পরিকল্পনা গ্রহণ করলেন প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান হিতেন বর্মন।
যদিও দুয়ারে শিক্ষকের পরিকল্পনাও এই প্রথম রাজ্য নয় রাজ্যে। বেশ কয়েকটি জায়গায় পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়াচ্ছেন শিক্ষকেরা। তবে সেটা ব্যক্তিগত উদ্যোগে। যেমন জামুড়িয়া (বিধানসভার তিলকা মাঝি আদিবাসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দ্বীপ নারায়ন নায়েক। লকডাউনে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে গিয়ে তিনি পরিচিত হয়েছেন রাস্তার মাস্টার হিসেবে। দীর্ঘদিন বন্ধ বিদ্যালয়গুলি। ফলে আদিবাসী সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের মধ্যে বাড়ছিল স্কুলছুট হওয়ার আশঙ্কা। তাই শিক্ষার আলো যাতে তাদের ওপর পড়তে থাকে, তাই এমন অভিনব পন্থা নিয়েছিলেন তিনি। স্কুল বন্ধ থাকলেও, তিলকা মাঝি আদিবাসী পাড়ায় গিয়ে গাছের তলায় বসে শিক্ষা প্রদান করেছেন তিনি। শুধুমাত্র ছোট ছোট পড়ুয়াদের নয়, আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ, যারা সেভাবে পড়াশোনা করতে পারেনি, তাদেরও পড়াশোনা শিখিয়েছেন এই মাস্টার মশাই।
আরও পড়ুন: Patient Died: প্রাইভেট চেম্বারে ব্যস্ত ডাক্তার, সরকারি হাসপাতালে অপেক্ষা করতে করতে মৃত্যু রোগীর!