কোচবিহার: ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষায় (TET Examination) উত্তীর্ণ হয়েছেন। কিন্তু, মেলেনি চাকরি। টানা ৭ বছর ধরে বেকারত্বের যন্ত্রণা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে তাঁদের। অবশেষে, সোমবার সকালে রাজ্য শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারীর বাড়ির সামনে মেখলিগঞ্জে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি প্রার্থীরা। এদিন সকালে, মন্ত্রীর বাড়িতে তাঁরা একটি ডেপুটেশন দিতে যান। বিক্ষোভের ঘটনায় ১৭জন আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত। কিছুদিন আগেও তাঁরা মন্ত্রী পরেশচন্দ্রের বাড়িতে ডেপুটেশন দিতে আসেন। কিন্তু তখন তিনি বাড়িতে নেই বলে বিক্ষোভকারীদের চলে যেতে বলা হয়। সোমবার মন্ত্রী বাড়িতে রয়েছেন জেনেই ফের তাঁর বাড়ির সামনে জমায়েত করেন চাকরিপ্রার্থীরা। একটি স্মারকলিপি জমা দিতে যান। অভিযোগ, তখনই মন্ত্রীর বাড়ির সামনের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের হঠিয়ে দেয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় পুলিশ। নামানো হয় র্যাফ।
বিক্ষোভকারীদের কথায়, ২০২০ সালে মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন থেকে ঘোষণা করেছিলেন, ২০১৪ সালের কুড়ি হাজার টেট (TET Examination)পাশ প্রার্থীকে প্রথমে ১৬, ৫০০ জন এবং পরে বাকিদের দফায় দফায় নিয়োগ করবে রাজ্য সরকার। কিন্তু ১২,৫০০ জন নিয়োগের পর বাকিদের নিয়োগ করা হচ্ছে না।
এক আন্দোলনকারীর কথায়, “আমরা মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব বলে অপেক্ষা করছি। শান্তিপূর্ণ আমাদের মিছিলে পুলিশ আচমকা এসে হামলা চালায়। র্যাফ নামানো হয়। কোন রাজ্য়ে চাকরি প্রার্থীদের মিছিলে এমনভাবে র্যাফ নামিয়ে আন্দোলন থামাতে হয়! এ কোন রাজ্যে বাস করছি আমরা। আমরা আমাদের দাবি, অধিকার নিয়ে কথা বলতে এসেছি। মন্ত্রী বাড়িতে থেকেও আমাদের সঙ্গে দেখা করলেন না। পাল্টা পুলিশ পাঠালেন।”
মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশ জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীরা আইন ভেঙেছেন। করোনা পরিস্থিতিতে জমায়েত, করোনা বিধি ভেঙে মিছিলের অভিযোগে মহামারী আইনে ১৭ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি, নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পুজোর আগে ১৪ হাজার আপার প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। এছাড়াও প্রাইমারি শিক্ষক পদে নিয়োগ পাবেন ১০ হাজার ৫০০ জন। এই প্রক্রিয়া চলবে পুজোর পরও। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে এই ১০ হাজার ৫০০ জন নিয়োগ পুজোর আগেই হবে বলে জানাল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুজোর আগে ১০,৫০০ জনকে নিয়োগ করা হবে প্রাথমিকে। সেই মতোই এগোচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
এই বছরের জানুয়ারি মাসে তৃতীয় দফার টেট পরীক্ষা হয়। তাতে আড়াই লক্ষ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। সেই পরীক্ষার ফল পুজোর আগে প্রকাশ করে হবে। তারপর আগামী সেপ্টেম্বর মাসের আগে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হবে জানিয়েছে পর্ষদ।
আগেই ৫,৬৫৬ জনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। তার মধ্যে ৫,১৪৬ জন কাজে যোগ দিয়েছেন। মেধার তালিকা অনুযায়ী তাঁদের আগেই নিয়োগ পত্র দেওয়া হয়েছে। যে যে জেলা থেকে তারা আবেদন করেছেন সেখানে সেখানে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য। জানানো হয়, বাকি ১০,৫০০ পদের নিয়োগ সংক্রান্ত কাউন্সেলিংয়ের নির্ঘণ্ট নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
আরও পড়ুন: Nandigram: বোমা বিস্ফোরণ-কাণ্ডের তদন্তে সিআইডি, নতুন ‘চাল’ নয় তো? উঠছে প্রশ্ন
আরও পড়ুন: Sahitya Academy Award: শীর্ষেন্দু থেকে রাস্কিন বন্ড, ‘২১-এ সাহিত্যে সেরার শিরোপা পেলেন যাঁরা…