Nandigram: বোমা বিস্ফোরণ-কাণ্ডের তদন্তে সিআইডি, নতুন ‘চাল’ নয় তো? উঠছে প্রশ্ন
CID: রবিবার, আচমকাই বিকেলে নন্দীগ্রামে এসে পৌঁছয় সিআইডি (CID) ও বম্ব স্কোয়াডের বিশেষ প্রতিনিধিদল। ঘটনাস্থলে গিয়ে গোটা এলাকা পরিদর্শন করেন তাঁরা।
পূর্ব মেদিনীপুর: নির্বাচনের পর চলতি মাসেই গত শুক্রবার আচমকা ভয়ঙ্কর শব্দে কেঁপে উঠেছিল নন্দীগ্রাম (Nandigram)। বঙ্গ নির্বাচনের এপিসেন্টার নন্দীগ্রামে আচমকা বোমাবাজির ঘটনায় তুঙ্গে শাসক-বিরোধী তরজা। এ বার সেই বোমাবাজির ঘটনায় তদন্তে এল সিআইডি (CID) ও বম্বস্কোয়াড। সিআইডির এই আচমকা আগমনেই উঠছে প্রশ্ন। যে বোমাবাজির ঘটনায় পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়নি, সেখানে কী করে সিআইডি তদন্তে এল? সিআইডির এই আগমনকে কার্যত ‘রাজনৈতিক চাল’ বলেই দেখছে সংশ্লিষ্ট মহল।
রবিবার, আচমকাই বিকেলে নন্দীগ্রামে এসে পৌঁছয় সিআইডি (CID) ও বম্ব স্কোয়াডের বিশেষ প্রতিনিধিদল। ঘটনাস্থলে গিয়ে গোটা এলাকা পরিদর্শন করেন। গোটা এলাকায় আর কোথাও কোনও বিস্ফোরক মজুত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখেন তাঁরা। সেখান থেকে বেশ কিছু নমুনাও সংগ্রহ করেন তাঁরা। যদিও, বোমাবাজির ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
ঠিক কী হয়েছিল গত শুক্রবার? কালীচরণপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির জাদুবাড়ি চক। সেখানে জাকির শা নামে এক ব্যক্তির একটি পরিত্যক্ত বাড়ি রয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা আটটা নাগাদ এলাকার তিন শিশু খেলার সময় ওই বাড়িতে ঢোকে। সেখানেই বল ভেবে একটি গোলাকার বস্তুকে হাতে তুলতেই ভয়ঙ্কর শব্দে সেটি ফেটে যায়। বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। ওদিকে তিন শিশুর চিল চিৎকার শুনে ছুটে আসেন বাড়ির লোকজন। প্রতিবেশীরাও ভিড় করেন।
ততক্ষণে ওই বাড়ির সামনের জায়গা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। ন’ থেকে দশ বছরের মধ্যে এক নাবালিকা মাটিতে পড়ে ছটফট শুরু করে। স্থানীয়রা কোনও মতে তাঁকে তুলে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছয়। কিন্তু শেষ রক্ষা করা যায়নি। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। বাকি দু’জনের মধ্যে একজনের মাথায় চোট লাগে। অপরজনের আঘাত গুরুতর। পায়ে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে। তাঁকে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এই ঘটনায় কালীচরণপুর অঞ্চল প্রধান শেখ সোয়েব গাজি বলেন, “আমার অঞ্চলের মধ্যেই জাদুবাড়ি চক এলাকা পড়ে। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেখানে এক অঘটন ঘটে। যে বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে তা জাকির শা-এর বাড়ি। দীর্ঘদিন ধরেই বাড়িটি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। এ বাড়ির মালিক অনেকদিন ধরেই এখানে থাকেন না। বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। সেখানে কেউ বা কারা বোমা রেখে যায়। ছোট বাচ্চারা খেলতে গিয়ে সেটিকে হাতে তুলে ফেলে। ওরা যেহেতু বাচ্চা বোমা না বল তা বুঝতে পারেনি। এরপরই বোমাটি হাত থেকে মাটিতে পড়ে গিয়ে বিস্ফোরণ হয়। দু’জন গুরুতর আহত হয়। একই সঙ্গে জাহিরুন খাতুন নামে এক ৯ থেকে ১০ বছরের নাবালিকার মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাতেই মারা গিয়েছে। অন্যজনের অবস্থাও খুবই খারাপ। এভাবে একটা অঘটন হয়ে গিয়েছে। যে বা যারা এই ঘটনায় যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নিক।”
যদিও, বোমাবাজির ঘটনায় মৃতা নাবালিকার মায়ের দাবি, রাজনৈতিক নেতাদের কর্মকাণ্ডের জেরেই এই তাঁর মেয়ে মারা গিয়েছেন। অথচ, তাঁরা কেউ কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। সূত্রের খবর, বোমাবাজির এই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ পর্যন্ত করতে পারেননি নিহতের পরিবার। ফলে, তদন্তে কী করে সিআইডির প্রতিনিধিরা আসতে পারেন তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মতে, ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্তে হলদিয়াতেই ক্যাম্প করে রয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা। ফলে, নন্দীগ্রামে বোমাবাজি হলে সেখানে সিবিআই-এরই (CBI) আগে পৌঁছনোর কথা। কিন্তু, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আগে সিআইডিকে পাঠানোর পেছনে যে বিশেষ রাজনৈতিক কৌশল কাজ করছে তা অস্বীকার করতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা। সিবিআই-এর হাতে ফের যাতে আরও একটি তদন্তের দায়িত্ব না যায়, তাই কি এই প্রচেষ্টা? প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট মহলের। যদিও এই ঘটনায় শাসক ও বিরোধী শিবিরের কোনও পক্ষেই কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সিআইডি আগমনের ঘটনায় মুখে কুলুপ এঁটেছেন নন্দীগ্রামের পুলিশ সুপারও।
আরও পড়ুন: Jitendra Tiwari: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সরেছে মোদী-পদ্মের ছবি, জিতেন্দ্রর গতিপ্রকৃতিতে জল্পনা!
আরও পড়ুন: Post Poll Violence: মামলা রুজু করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ফের নোদাখালিতে নিহত চন্দনার বাড়িতে সিবিআই