Balurghat Dandavat Parikrama: দণ্ডিকাণ্ডে গ্রেফতার ২ তৃণমূল নেতা; ‘মহিলা নেত্রীর গ্রেফতারি চাই’, দাবিতে অনড় বিজেপি
Balurghat: বিজেপির বক্তব্য, 'কাউকে আড়াল করার জন্য কাউকে বলির পাঁঠা করা হলে এটা দুর্ভাগ্যজনক বলে আমরা মনে করি।'
বালুরঘাট: দণ্ডিকাণ্ডে (Dandavat Parikrama) গ্রেফতার দুই তৃণমূল (TMC) নেতা। বুধবার রাতে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে বালুরঘাট (Balurghat) থানার পুলিশ। ধৃতদের বৃহস্পতিবার বালুরঘাট জেলা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে তোলা হলে পরে তিনদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, পুলিশের তরফ থেকে ধৃতদের টিআই প্যারেড করানো হবে। বুধবার রাতে বিশ্বনাথ দাস ও আনন্দ রায় নামে দুই যুবককে বালুরঘাট শহরের জলযোগ মোড় থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত দু’জনের বাড়ি বালুরঘাট শহরের সাহেবকাছারি ও কংগ্রেসপাড়ায়। ধৃত বিশ্বনাথ দণ্ডিকাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূলের নেত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে গ্রেফতার হওয়া আনন্দ রায় বালুরঘাট টাউন যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। একইসঙ্গে পুরসভার ট্যাক্স কালেক্টর হিসাবে কাজ করেন। তিনিও অভিযুক্ত নেত্রীর খুব ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত। তবে বিজেপির দাবি, যে নেত্রীর উপস্থিতিতে সবটা হয়েছে, তাঁকেই গ্রেফতার করতে হবে।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এসটিএসসি অ্যাট্রোসিটি অ্যাক্টে মামলা দায়ের করা হয়। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার। তিনি বলেন, “কাউকে আড়াল করার জন্য কাউকে বলির পাঁঠা করা হলে এটা দুর্ভাগ্যজনক বলে আমরা মনে করি। অন ক্যামেরা যাঁকে আমরা দেখেছি, যাঁর উপস্থিতি দেখা গিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এই দাবি আমাদের প্রথম থেকে। আমরা এখনও সেই দাবিতে অনড়।”
পাল্টা তৃণমূলের পক্ষ থেকে জেলা সহ-সভাপতি সুভাষ চাকি বলেন, আইন আইনের মতো চলবে। এখানে দলের কোনও বিষয় নেই। যদিও এ নিয়ে তদন্তের স্বার্থে জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে ৮ এপ্রিলের ঘটনায় কেন ১২ এপ্রিল দু’জনকে গ্রেফতার করা হল তা নিয়ে এদিন আদালতে প্রশ্ন তোলেন ধৃতদের আইনজীবী। সূত্রের খবর, দণ্ডিকাণ্ডে তপনের এক মহিলা তৃণমূল নেত্রীকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডেকেছিল। যদিও পুলিশ প্রশাসন এ নিয়ে কোনওরকম মন্তব্য করতে চায়নি।
গত ৬ এপ্রিলের ঘটনা। তপন থানার গোফানগর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ২০০ জন মহিলা বিজেপিতে যোগ দেন। ঠিক তার পরদিনই তিন আদিবাসী মহিলা দণ্ডি কেটে প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তায় এসে বালুরঘাটে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে শাসকশিবিরে যোগ দেন। দণ্ডি কেটে আসার কারণ হিসাবে তাঁরা বলেছিলেন, আগের দিন বিজেপিতে যোগ দিয়ে ভুল করেছেন। তারই প্রায়শ্চিত্ত করতে এমনটা করেছেন। তবে তাঁদের এই বক্তব্য কোথাওই গৃহীত হয়নি।
বরং এই ঘটনায় তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল ওঠে। তৎকালীন তৃণমূল মহিলা জেলা সভানেত্রী প্রদীপ্তা চক্রবর্তীর বিরুদ্ধেই সমস্ত অভিযোগ যায়। তাঁকে পদ থেকে সরিয়েও দেওয়া হয়। তবে তাতেও এই বিতর্ক থিতু হয়নি। বরং রাষ্ট্রপতি, এসসি এসটি কমিশনেও অভিযোগ জানায় রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। রাজ্য পুলিশের ডিজির কাছে রিপোর্টও তলব করে জাতীয় তফসিলি উপজাতি কমিশন। তিন দিনের মধ্যে ডিজিপি মনোজ মালব্যকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেয় তারা। এসবের মধ্যে প্রায় সপ্তাহ ঘোরার মাথায় গ্রেফতার দু’জন।