Atraye River: বিপদের নাম নদী বাঁধ, শাসকদলের নেতারা যেতেই ফুঁসে উঠলেন এলাকার লোকজন
Balurghat: মূলত বালুরঘাটের জলের কষ্ট মেটাতে আত্রেয়ী নদীর উপর একটি বাঁধ তৈরি হয়। এই বাঁধ বছরভর আশীর্বাদ হয়ে থাকলেও বর্ষা এলেই যেন অভিশাপের চেহারা নেয়। এবার তো বাঁধের পাশের রাস্তাতেও ভাঙন।
বালুরঘাট: বর্ষা এলেই ভয়াবহ চেহারা নেয় আত্রেয়ীর নদী (Atrayee River) বাঁধ। ফি বছর এক ছবি। এবারও তার অন্যথা হচ্ছে না। বর্ষার শুরুতেই ভাঙছে বাঁধ, ভাঙছে বাঁধ সংলগ্ন রাস্তা। এলাকার লোকজন ইতিমধ্যেই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন শাসকদলের নেতাদের ঘিরে। সোমবার তো দক্ষিণ দিনাজপুর বালুরঘাট শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের চকভৃগু ডাকরা এলাকায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। তৃণমূলের বুথ সভাপতি ও এলাকার কাউন্সিলরের স্বামীকে প্রবল বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। তাঁদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে বলেও অভিযোগ। এই ঘটনায় একজন বিজেপি কর্মীকে আটকও করে পুলিশ। তৃণমূল বুথ প্রেসিডেন্ট নকুল মল্লিক পুলিশের দ্বারস্থ হন। তাঁরই অভিযোগের ভিত্তিতে বিজেপি কর্মী বিশ্বজিৎ রায়কে আটক করে পুলিশ। পাল্টা একই অভিযোগ এনেছেন বিশ্বজিতের স্ত্রী। যা নিয়ে যথেষ্ট চাপানউতর এলাকায়।
বর্ষা পড়তেই জল বেড়েছে নদীকে। বাঁধের পরের অংশ জলস্ফীতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এতে বাঁধের নীচের অংশে প্রভাবও পড়ছে। ক্রমাগত তা নড়বড়ে হচ্ছে। এলাকার একাংশের অভিযোগ, খারাপ মানে জিনিস দিয়ে বাঁধ তৈরি করা হয়। তার ফলেই ফি বছর ভোগান্তি, আশঙ্কায় দিন কাটে।
মূলত বালুরঘাটের জলের কষ্ট মেটাতে আত্রেয়ী নদীর উপর একটি বাঁধ তৈরি হয়। এই বাঁধ বছরভর আশীর্বাদ হয়ে থাকলেও বর্ষা এলেই যেন অভিশাপের চেহারা নেয়। এবার তো বাঁধের পাশের রাস্তাতেও ভাঙন। এ নিয়ে বারবার পুরসভাকে জানিয়েও কাজ হয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। বেশ কিছুদিন ধরেই ক্ষোভ বাড়ছিল। সোমবার যা বড় আকার নেয়।
বিক্ষোভের খবর পেয়ে তৃণমূলের বুথ সভাপতি তথা পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ড সুপারভাইজার নকুল মল্লিক ও এলাকার কাউন্সিলর অনুশ্রী মহন্তের স্বামী পামিরকুমার দাস সেখানে যান। তাতেই আরও ফুঁসে ওঠেন এলাকার লোকজন। পরিস্থিতি হাতাহাতির পর্যায়ে যায়।
নদীর ধারেই থাকেন কার্তিক মোহন্ত, সঞ্জয় রায়রা। তাঁদের কথায়, নদীতে বাঁধ দেওয়ার পর ভাঙন শুরু হয়েছে। ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। কখন কী বিপদ আছড়ে পড়ে। এ নিয়ে অনুশ্রী মহন্তের বক্তব্য, চকভৃগু এলাকা সম্প্রতিই পুরসভার অধীনে এসেছে। রাতারাতি উন্নয়ন করা কীভাবে সম্ভব? এলাকার লোকজন তা বুঝতে চাইছেন না। উল্টে তাঁরা বলছেন, টাকা সরানো হচ্ছে। অনুশ্রী বলেন, “আমার স্বামী ও পুরসভার সুপারভাইজারের গায়ে হাত পর্যন্ত তোলা হয়েছে।”
পাল্টা বিজেপি কর্মী বিশ্বজিৎ রায়ের স্ত্রী মৌসুমী পাল রায়ের দাবি, “আমরা বিজেপি করি বলে তৃণমূল ভাবে আমরা শত্রু। খারাপ মানের কাজ নিয়ে বলতে গিয়েছিল বলে আমার স্বামীকে ওরা মেরেছে। স্বামীকে পুলিশও ধরে নিয়ে গিয়েছে।” বালুরঘাট থানার আইসি শান্তিনাথ পাঁজা জানিয়েছেন, বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় গোলমাল, মারধরের অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্যদিকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) আব্দুল কালাম আজাদ ইসলাম বলেন, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সেচ দফতরকে অনুরোধ করা হয়েছে।