AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

আব্বাসের সঙ্গে জোটে ‘জাত-কূল’ গিয়েছে, ‘বেসুরো’ অশোক চাপ বাড়ালেন আলিমুদ্দিনের

তন্ময় ভট্টাচার্য এবং কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো তাঁর অন্যান্য সতীর্থদের কণ্ঠে কর্কশ সুর শোনা গিয়েছিল। এ বার তেড়েফুঁড়ে আক্রমণে নামলেন অশোকও। অভিমান ঝরে পড়ল তাঁর গলায়।

আব্বাসের সঙ্গে জোটে 'জাত-কূল' গিয়েছে, 'বেসুরো' অশোক চাপ বাড়ালেন আলিমুদ্দিনের
অলংকরণ- অভীক দেবনাথ
| Updated on: May 07, 2021 | 5:59 PM
Share

শিলিগুড়ি: তন্ময় ভট্টাচার্য এবং কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর এ বার অশোক ভট্টাচার্য। ভোটের পর থেকেই একের পর এক বর্ষীয়ান বাম নেতারা ‘বেসুরো’ হওয়া শুরু হয়েছেন, সেই তালিকায় এ বার নাম লেখালেন শিলিগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক। বিধানসভা ভোটে বামেদের বিপর্যয়ের জন্য সরাসরি আব্বাসের সঙ্গে জোটকেই দুষলেন তিনি। কোনও রাখঢাক না রেখেই জানিয়ে দিলেন, আইএসএফ-র সঙ্গে এই জোট ছিল মহাভুল।

অভিমানী সুরে শিলিগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক স্পষ্ট বলেছেন, আর কোনওদিন তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। ভোটের ফলাফল প্রকাশ্যে আসার পর তিনদিন অন্তরালে থেকে আজ TV9 বাংলার মুখোমুখি হয়ে পরোক্ষে আলিমুদ্দিনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। শিলিগুড়িতে তৃতীয় স্থান অধিকার করে পরাজিত হয়েছেন অশোক ভট্টাচার্য। ফলাফল প্রকাশের পর থেকে মুখ খোলেননি। যদিও তন্ময় ভট্টাচার্য এবং কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো তাঁর অন্যান্য সতীর্থদের কণ্ঠে কর্কশ সুর শোনা গিয়েছিল। এ বার তেড়েফুঁড়ে আক্রমণে নামলেন অশোকও। অভিমান ঝরে পড়ল তাঁর গলায়।

অশোক বলেন, “আমি কী অপরাধ করেছিলাম? নিজের দায়িত্ব পালন করিনি? যারা কথা দিয়েছিলেন ভোট দেবেন, তাঁরা কেন দিলেন না? এই অভিমান আমার থাকবে। মন দিয়ে নিজের সেরাটা দিয়েছি। তবুও হারতে হল। এ বার নির্বাচনে দাঁড়াতেই চাইনি। দল জোর করে দাঁড় করিয়েছিল। আগামী কোনও নির্বাচনে আর দাঁড়াবো না। দলকে জানিয়ে দিয়েছি, সেই সিদ্ধান্তে অনড় থাকবো।”

বিধানসভা ভোটে বামেদের ‘শূন্যে’ পৌঁছে যাওয়া নিয়ে আইএসএফ-র সঙ্গে জোট করার বিরোধিতায় তিনি বলেছেন, “আমাদের জাত-কূল দুটোই গিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন সিদ্দিকির সঙ্গে জোটের জেরে হিন্দু ভোট সরে গেছে বামেদের থেকে। শিলিগুড়িতে তা প্রযোজ্য হতে পারে। কিন্তু পাশের চোপড়ায় সংখ্যালঘু ভোটও তো আমরা পাইনি। সবটাই তৃণমূল নিয়ে গিয়েছে। এসবের চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে।”

যদিও দল ছাড়ার বিষয়ে তাঁর কোনও চিন্তাভাবনাই নেই বলে জানিয়েছেন অশোক। কিন্তু ভোটের রাজনীতি করতে তিনি নিমরাজি। “বিধায়ক, মেয়র এসব এখন অতীত। এসবের ভূমিকা আমাদের জীবনে আছে ঠিকই, কিন্তু এসবের বাইরে আমরা দলটা করি। সেই দল নিয়েই থাকব। দলের সভা আরো বেশি করে করব। হেরেও ফিরে আসা যায়। শিলিগুড়ি নিশ্চই বামেদের পথ দেখাবে আবার। সেই চেষ্টায় এ বার নিজেদের নিয়োজিত করব। আগামী পুরসভা নির্বাচন বা শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নির্বাচন সহ সমস্ত নির্বাচনে আমি নই, লড়বে নতুন মুখেরা”, জানিয়ে দেন প্রাক্তন বিধায়ক।

উল্লেখ্য, সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস ও আইএসএফ-র সংযুক্ত মোর্চা মাত্র একটি আসন দখল করতে পেরেছে। সেটি এসেছে ভাঙড় থেকে, আব্বাস সিদ্দিকির দলের ঝুলিতে। গত কয়েক দশকে প্রথমবার বাম এবং কংগ্রেস শূন্য বিধানসভায় অধিবেশন হবে।

আরও পড়ুন: চ্যালা কাঠ, বাঁশ নিয়ে তাড়া, ছোড়া হল আধলা ইট! মেদিনীপুরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়ে ‘হামলা’

ঠিক এই ক্ষেত্রেই মনে করিয়ে দেওয়া যায়, বিধানসভা ভোটের কয়েক মাস আগে থেকে একে একে ‘বেসুরো’ হতে শুরু করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশের নেতারা। তাঁদের মধ্যে অনেকেই বিজেপিতে নাম লেখান, অনেকে থেকে যান। এরপর নির্বাচনে কী ফলাফল হয়েছে তা আপামর দেশবাসীই জানেন। একই ভাবে নির্বাচন শেষ হতেই বামেদের দীর্ঘ সময়ের বিশ্বস্ত সৈনিকরা একে একে ‘বেসুরো’ হতে শুরু করেছেন।

ফলাফল প্রকাশ পাওয়ার দিন সবার প্রথমে একটি নিউজ টক শো-তে বোমা ফাটিয়েছিলেন উত্তর দমদমের প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য। দলের হাইকমান্ডকে নজিরবিহীন ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। তুলে দেন নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন। এরপরই মুখ খোলেন রায়দীঘির সিপিএম প্রার্থী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি সাফ জানান, “বিজেপিকে রুখতে পেরেছে তৃণমূল। বামেরা পারেনি। ভরাডুবির বস্তুনিষ্ঠ অনুসন্ধান চাই, গোলগোল নয়।” এমনকি, তৃণমূলের সঙ্গে বামেদের জোট করার পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি।

আরও পড়ুন: সরকারি কর্মীদের জন্য বোনাস ঘোষণা রাজ্যের, চেয়ারে বসেই চমক মমতার