শিলিগুড়ি: জিটিএ নির্বাচন নিয়ে জলঘোলা চলছেই। কয়েকদিন আগেই বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তার বাসভবনে গোপন বৈঠক করে পদ্ম শিবির। সঙ্গে ছিলেন জোটের নেতারাও সেই বৈঠক শেষে দুই বিধায়ক জানান, পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধানে একমাত্র উপায় আলাদা রাজ্য। এবার পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচনের বিরুদ্ধে সরব হল সেখানকার সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল হামরো পার্টি। বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সম দূরত্ব নীতি ঘোষণা করে দলের নেতাদের দাবি পৃথক রাজ্যই পাহাড়ের স্থায়ী সমাধান। তবে রাজ্য সরকার জোর করে নির্বাচন করলে হামরো পার্টি অবশ্য তাতে অংশ নেবে।
সোমবার শিলিগুড়ি পার্টির সহ সভাপতি প্রমষ্কার ব্লোন বলেন, “ভোট হলে আমরা অংশ নেব। কারণ জন-বিচ্ছিন্ন কাউকে জিটিএ ছেড়ে দিতে পারব না। তবে পরিষ্কার এটা যে, আমরা জিটিএ নির্বাচন চাই না। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান আলাদা রাজ্যে।” এখানেই শেষ নয়, পাহাড়ে সু-শাসনের অভাব রয়েছে বলেও জানান তিনি। এই হামরোর নেতা জানান, “আমরা রাজ্যের শাসকদল বা কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলগুলির সঙ্গে নেই। আমরা কারোর সঙ্গে জোট করতেও আগ্রহী নই।”
চলতি বছরের পুরভোটে বিপুল উত্থান হয়েছে সদ্য গঠিত হামরো পার্টির। এদিকে গত মার্চে পাহাড় সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচনের ঘোষণা করায় তৃণমূলের বন্ধু দলগুলি যেমন তাকে স্বাগত জানিয়েছে তেমনি বিজেপি, জিএনএলএফ সহ বিরোধী দলগুলি জিটিএ নির্বাচনের বিরোধীতা করেছে। এবার হামরো পার্টিও তাদের অবস্থান স্পষ্ট করল। পার্টির তরফে জানানো হয়েছে বাঙালি ও বাংলার সঙ্গে ভেদাভেদ নেই গোর্খাদের। পাহাড়ে সুশাসনের লক্ষেই আলাদা রাজ্য দরকার। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত এখনও অধরাই। এই মুহুর্তে জিটিএ নির্বাচন হামরো পার্টি চায় না। কিন্তু সরকার জিটিএ নির্বাচন করলে সেক্ষেত্রে জিটিএর মসনদ অন্যদের হাতে তুলে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না বলেই জানিয়েছে হামরো।
প্রসঙ্গত, জিটিএ নির্বাচনের বিরোধীতায় দিন কয়েক আগেই বৈঠক করেছিল তৃণমূলের বন্ধু ও জোটসঙ্গী বিমল গুরুঙের মোর্চা। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তাকে। পাহাড়ের সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাইতেই সেদিনের বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এবার সেই বৈঠকে বিজেপি সাংসদকে আমন্ত্রণ জানিয়েও শেষে বিমল গুরুংই উপস্থিত থাকেননি। ফলত, কনভেনশনে অনুপস্থিত ছিলেন রাজু বিস্তাও। কালিম্পংয়ের বৈঠকের কয়েকদিন যেতে না যেতেই এবার জিটিয়ে নির্বাচনের বিরোধীতায় গোপন বৈঠকে বসে বিজেপি। সঙ্গে ছিলেন জোটের নেতারাও।
বৈঠক শেষে জোটবদ্ধ হয়ে নেতারা জানান, ‘জিটিএ নির্বাচনে অংশ নেবে না বিজেপি ও সহযোগী জিএনএলফ ও অন্য ছোট দলগুলি। পাশাপাশি ওই নির্বাচনের বিরোধীতায় পাহাড়ে আন্দোলনও করা হবে। জিটিএ নির্বাচন চায় না পাহাড়। জোড় করে নির্বাচন চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। পাহাড়ের সমস্যার স্থায়ী সমাধান চায় পাহাড়ের আমজনতা। তাই বাইরে অন্য কিছুই আমরা চাই না। সর্বোচ্চ স্বায়ত্বশাসনই একমাত্র বিকল্প।’
আরও পড়ুন: By-Election: মঙ্গলে বালিগঞ্জ, আসানসোলে উপনির্বাচন, দুই ডিসিআরসিতে ব্যস্ততা তুঙ্গে