AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Mamata Banerjee: ‘একটা পয়সাও কারোর থেকে পাইনি’, উত্তরে দাঁড়িয়ে মমতার মুখেও বঞ্চনার সুর

Mamata Banerjee in North Bengal: দুধিয়া ব্রিজ ভেঙেছে, ৭ দিনের মধ্যে সেখানে একটি অস্থায়ী ব্রিজ তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "মিরিকে যেদিকটায় গিয়েছিলাম, দুধিয়া ব্রিজের কাছে,  দেখলাম, একটা পায়ে হাঁটার ব্রিজ তৈরি করা হয়েছে, আরেকটা অস্থায়ী ব্রিজ তৈরি করা হচ্ছে সাত দিনের মধ্যে। তাছাড়া পাকা ব্রিজও তৈরি হয়েছে।"

Mamata Banerjee: 'একটা পয়সাও কারোর থেকে পাইনি', উত্তরে দাঁড়িয়ে মমতার মুখেও বঞ্চনার সুর
দার্জিলিঙে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় Image Credit: TV9 Bangla
| Edited By: | Updated on: Oct 15, 2025 | 4:42 PM
Share

দার্জিলিং:  বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিপর্যস্ত পাহাড়ের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বুধবার জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের নিয়ে বৈঠক করেন। এরপর প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গে এখনও পর্যন্ত কী কী করেছে রাজ্য সরকার, তার খতিয়ান তুলে ধরেন তিনি। আর সে প্রসঙ্গেই তাঁর মুখে শোনা যায় বঞ্চনার সুর। তিনি বলেন, ‘একটা পয়সাও কারোর থেকে পাইনি, তবুও রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এত কিছু করা হয়েছে।’

এই উত্তরবঙ্গ নিয়ে বারবার রাজ্য সরকারকে বিঁধেছেন বিরোধীরা। উত্তরবঙ্গের মানুষ  রাজ্য সরকারের বঞ্চিত বলে ভোটের ময়দানে সুর চড়িয়েছেন। এমনিতেই উত্তরবঙ্গ বিজেপির শক্ত ঘাঁটি। পাহাড়ের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে কালিম্পঙ অনীত থাপার দলের দখলে, বাকি দুটি আসন বিজেপির হাতে। এমনকি মমতার এই উত্তরবঙ্গ সফরকেও ‘প্রমোদের ভ্রমণ’ বলে কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই পরিস্থিতিতে বিপর্যয়ের সময়ে উত্তরবঙ্গের মাটিতে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন, উত্তরবঙ্গের মানুষের বিপদের দিনে ঠিক কী কী করছে রাজ্য সরকার। আর সেক্ষেত্রে যে কেন্দ্রের তরফ থেকে এক ফোঁটাও সাহায্য পাননি, সেটাও স্পষ্ট করে দেন।

ধসে ভেঙেছে দুধিয়া ব্রিজ, ৭ দিনের মধ্যে সেখানেই একটি অস্থায়ী ব্রিজ তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “মিরিকে যেদিকটায় গিয়েছিলাম, দুধিয়া ব্রিজের কাছে,  দেখলাম, একটা পায়ে হাঁটার ব্রিজ তৈরি করা হয়েছে, আরেকটা অস্থায়ী ব্রিজ তৈরি করা হচ্ছে সাত দিনের মধ্যে। তাছাড়া পাকা ব্রিজও তৈরি হচ্ছে।”

মুখ্যমন্ত্রী জানান, দার্জিলিঙে চারটি ব্লক, ৯ টি পৌরসভায় ৭০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।  ১ হাজার ৩০০র বেশি মানুষকে কেবল দার্জিলিঙেই উদ্ধার করা হয়েছে।  উদ্ধারকারী, পুলিশকে কুর্নিশ জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, “আইসি, এসপি-রা যেভাবে কাজ করেছেন, তার তুলনা নেই। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলা করার জন্য পরদিন ভোর থেকে ফিল্ডে রয়েছেন।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “আমাদের সিভিল ডিফেন্স অ্যাক্টিভ হয়ে গিয়েছে, আরও এমন অ্যাক্টিভ করে তুলব যে তাঁরা সবাইকে পাল্লা দিতে পারে। কুইক রেসপন্স টিম, তাঁরা ভীষণ ভাল কাজ করেছে।”

মুখ্য়মন্ত্রী জানান, মিরিক বাজার, সুখিয়াপোখরিতে রিলিফ ক্যাম্প চলছে। ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান ক্যাম্পে’ কাজও বর্ধিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।  প্রতি ব্লকে ১০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই বিপর্যয়ে যাঁদের নথি হারিয়ে গিয়েছে, তাঁরা রিলিফ ক্যাম্প থেকে আবেদন করলেই, সেখানেই করে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে চিকিৎসকদের ক্যাম্প রয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, দুর্গতদের ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক থেকে ১৬ হাজার কিটস দেওয়া হয়েছে। তারপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা কিন্তু একটা পয়সাও কারোর কাছ থেকে পাইনি। কিন্তু তারপরও দেখছেন কীভাবে আমাদের সরকার দুর্গতদের জন্য কাজ করছে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি।” কথার রেশ টেনে তিনি বলেন, “এখন যে পরিমাণ ধ্বংস হয়েছে, যে নির্মাণ করতে হবে, ব্রিজ ভেঙেছে বহু, অনেক কালভার্ট, রাস্তা, বাড়ি, স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র নষ্ট হয়েছে। চাষের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। চাষিদের শস্য বিমার টাকা দেওয়া হবে।”

উল্লেখ্য, প্রথম থেকেই বিরোধীদের তরফ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছিল, কেন বিপর্যয়ের পরই রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের সেখানে দেখা যায়নি। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন, কেন মুখ্যমন্ত্রী এত বড় বিপর্যয়ের পরও কার্নিভালে ব্যস্ত ছিলেন, কেন রাজ্য সরকারি টিম ছিল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সেক্ষেত্রে NDRF, সেনাই অধিকাংশ উদ্ধারকার্য চালিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। ঘটনার পর বিপর্যস্ত এলাকায় যান শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্তও। ত্রাণ শিবিরগুলো ঘুরে দেখেন তাঁরা।  মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন, রাজ্য সরকারের তরফে বিপর্যস্ত এলাকায় ঠিক কী কী করা হয়েছে। আর তাতে কেন্দ্রের কী ভূমিকা। সোমবারও বামনডাঙা থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘সবটাই তো আমাদের করতে হয়। দিল্লি এক পয়সাও দেয় না।’’

ইতিমধ্য়েই রাজ্যের তরফে একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। দুর্গতদের সাহায্য করার জন্য যে কেউ সেখানে টাকা চেক মারফত দিতে পারেন। এদিন অরূপ বিশ্বাস অ্যাকাউন্টের ডিটেলস দেন।  অ্যাকাউন্টের নাম, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি’। অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ICICI ব্যাঙ্কের হাওড়া শাখায়, অ্যাকাউন্ট নম্বর 628001041066, IFSC No- ICICI icic0006280।