North Bengal: এখনও পাহাড়ে আটকে বহু, প্রাণ হাতে নিয়ে হেঁটেই শিলিগুড়ি ফিরছেন রাখীরা

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Oct 20, 2021 | 6:37 PM

Landslide: দক্ষিণের বাসিন্দা রাখী বোস পাহাড়ে এসেছিলেন ছুটি কাটাতে। কিন্তু, সে যে এমন বিপদ অপেক্ষা করে থাকবে তা বুঝতেও পারেননি।

North Bengal: এখনও পাহাড়ে আটকে বহু, প্রাণ হাতে নিয়ে হেঁটেই শিলিগুড়ি ফিরছেন রাখীরা
রাখী বোস ও তাঁর পরিবার, নিজস্ব চিত্র

Follow Us

উত্তরবঙ্গ: দুর্যোগ থেকে অব্যাহতি নেই বঙ্গের। নিম্নচাপের জেরে নাছোড় বৃষ্টি। উত্তরবঙ্গের (North Bengal) পরিস্থিতি ভয়াবহ। একের পর এক রাস্তায় নেমেছে ধস। কোথায় ভেসেছে বাড়ি। কখনও শিশুদের টেনে নিয়ে গিয়েছে নদী। পুজোর পরে মুক্তবাতাসের স্বাদ নিতে যখন গুটি গুটি পাহাড়ের দিকে পা বাড়িয়েছিলেন অনেকে, তখন কার্যত ফিরে আসতে হচ্ছে সমতলে। কারণ আবহাওয়া (Weather)। পুজো শেষে দার্জিলিঙ থেকে গ্যাংটক-সিকিম হয়ে ফের সমতলে ফেরার কথা ছিল রাখী বোসের। কিন্তু, পাহাড়ে উঠতেই বিপত্তি। মাঝপথেই পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে যেতে হল।

দক্ষিণের বাসিন্দা রাখী বোস পাহাড়ে এসেছিলেন ছুটি কাটাতে। কিন্তু, সে যে এমন বিপদ অপেক্ষা করে থাকবে তা বুঝতেও পারেননি। শিলিগুড়ি থেকে যখন পাহাড়ের পথে রওনা হয়েছেন তখন আবহাওয়া এত খারাপ হয়নি। কিন্তু, আচমকা যে তেড়ে বৃষ্টি ও জায়গায় ধস নেমে এমন বিপত্তি হবে তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি রাখী। শিলিগুড়ি থেকে  দার্জিলিঙ যাওয়ার পথেই জানতে পারেন ভেঙে গিয়েছে জাতীয় সড়ক। নেমেছে ধস। মাটিগাড়ায় বালাপ্রসন ব্রিজ প্রায় ভেঙে পড়ার সামিল। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গীন যে মাঝপথেই আটকে গিয়েছেন প্রায় জনা পঞ্চাশেক যাত্রী। সকলেই কমবেশি ভ্রমণের উদ্দেশ্যেই এসেছিলেন। গজলডোবাতে ইতিমধ্য়েই প্রায় ৩৪২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ফলে বন্ধ হয়েছে যানজট। তাতেই ফেসে গিয়েছেন রাখীর মতো অনেকে।

মাঝরাস্তায় লিফটের জন্য় গাড়ি দাঁড় করাতে ব্যস্ত রাখী। সঙ্গে রয়েছেন মা ও দাদা। কিন্তু, গাড়ি যেকয়টি যেতে পারছে সেসব থেমে লিফট দিতে অন্তত রাজি নয়। সেই অবস্থাতেই রাখী বললেন, “কাল রাত থেকে এখানেই আটকে। কেউ সাহায্যের জন্য আসেনি। দাঁড়িয়ে রয়েছি। না প্রশাসন, না পুলিশ কেউ হেল্প করেনি। হেঁটে হেঁটে কোনওরকমে শিলিগুড়ি যাওয়ার চেষ্টা করছি। যেভাবে ধস নেমেছে তাতে প্রাণ হাতে নিয়ে চলতে হচ্ছে। জানি না শিলিগুড়ি অবধি পৌঁছতে পারব কি না!”

রাখী ছাড়া অন্য এক পর্যটক বলেন, “কালিম্পঙয়ের টাকনা বলে এই গ্রামে আটকে গিয়েছি। ধস নেমেছে বলে কিছুই করতে পারছি না। আমাদের আজ এনজেপি থেকে ট্রেন ধরার কথা ছিল। কিন্তু ধস নামায় আর যেতে পারিনি। এখন যখন সব ঠিক হবে, তখনই আমরা যেতে পারব। তার আগে নয়। ”

বস্তুত, গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়েই এই এক ছবি। ধসের জেরে দার্জলিঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে  এসডিও-র বাংলোর কিছু অংশ। ঘটনায়, দার্জিলিঙের মহকুমা শাসক পুনম বালম জানিয়েছেন,পর্যটকদের উদ্ধার করতে বিশেষ বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে আনা হয়েছে। একপাশের রাস্তা খুলে দেওয়া হয়েছে। ধস যেখানে নেমেছে, সেই জায়গাগুলি মেরামতির কাজ চলছে।

ইতিমধ্যেই, তিস্তার উভয় পারে জারি হয়েছে লাল সংকেত। তিস্তার জল ইতিমধ্যে রাস্তার উপর উঠতে শুরু করেছে। বন্যা দুর্গত বহু মানুষ। তিস্তা ব্যারেজ থেকে ছাড়া হয়েছে ৪ হাজার ৫০১ কিউমেক জল। পাশাপাশি ভূটান পাহাড়ে অবিরাম বৃষ্টির জেরে জলঢাকা নদীতেও জলস্ফীতি হয়েছে। আর এর জেরে জলঢাকা নদীর উভয় পারে জারি করা হয়েছে হলুদ সংকেত সেচ দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে।

এদিকে, পাহাড়ে একটানা বৃষ্টির জেরে ডুয়ার্স থেকে লাভা এবং গরুবাথান যাওয়ার রাস্তায় ধস নেমেছে। সঙ্গে পাহাড় তেকে কাদাজলের স্রোত নেমে এসে যান চলাবন্ধ হয়ে গিয়েছে। কালিম্পং (Kalimpong) পুরসভার একাধিক ওয়ার্ডে ধস নেমে বিপর্যস্ত হল ঘরবাড়ি, ভেঙে পড়ল গার্ডওয়াল। এ ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই, তবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। রাস্তায় গাছ পড়ে মৃত্যু হয়েছে একজনের। কালিম্পং পুরসভা এলাকায় ৪, ১৫, ১৮ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ধস নেমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এলাকা। ব্লক, পুরসভা ও জেলাস্তরের বিপর্যয় মোকাবিলা টিম কাজ করছে ওইসব এলাকায়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক আনন্দ বর্মণ।

আরও পড়ুন: WB By-Poll 2021: ‘ওদের’ হাত থেকে নিস্তার নেই, দিনহাটায় প্রচারে নামলেই ‘অসভ্যতামির’ শিকার বিজেপি!

 আরও পড়ুন: Mihir Goswami: ‘রাজ্যের মন্ত্রী সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছেন, নির্বাচন কমিশন যেন ধৃতরাষ্ট্র’, বিস্ফোরক বিজেপি বিধায়ক!

 

Next Article