শিলিগুড়ি: লোকসভা ভোটের আগে উত্তরবঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার উত্তরবঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এদিন। শিলিগুড়ি জংশন রাধিকাপুর রেলপথের উদ্বোধনের পাশাপাশি সড়ক মন্ত্রকেরও নয়া প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এরপরই চলে যান জনসভায়।
সে কারণেই বাংলার কোণা কোণা থেকে শোনা যাচ্ছে অবকি বার ৪০০ পার। দলিত আদিবাসী মহিলা বিরোধী তৃণমূলকে তাড়ানোর দরজা লোকসভা ভোট থেকেই খুলবে। তাই উত্তরবঙ্গের প্রতিটা আসন পদ্ম ফোটাতে হবে। ফুটবে তো? আমার আরও একটা কাজ করতে হবে। আপনারা ঘরে ঘরে গিয়ে বলুন মোদীজী এসেছিলেন, প্রণাম পাঠিয়েছেন আপনাদের জন্য। আমাদের সংকল্প বিকশিত ভারত। :মোদী
২৮৫ টাকা প্রতি ক্যুইন্টাল পাটের সমর্থন মূল্য বাড়ানো হয়েছে। এতে পশ্চিমবঙ্গের নর্থ ইস্টের পাটশিল্পীদের সুবিধা হবে। বিকশিত ভারতের মজবুত স্তম্ভ হল কৃষক, যুব, নারীশক্তি। তাই মোদীর প্রতি গ্যারান্টি তাঁদের শক্তিশালী করতে। :মোদী
তৃণমূলের লোকেদের ‘ভাতিজা’র চিন্তা। কংগ্রেসের লোকেদের নিজেদের নেতার পরিবারের ছেলে মেয়েকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আর বামেদের এদের দু’জনের সঙ্গে তালমিল রাখতে হবে। যাতে ওদের গাড়িও চলতে থাকে। এদের আপনাদের ছেলে মেয়ের কোনও চিন্তা নেই। আপনাদের সন্তানের ভবিষ্যতের চিন্তা যদি কারও থাকে, মোদীর আছে, বিজেপির আছে। দেশের প্রতিটা মানুষ বলছে প্রতি পরিবার বলছে, ম্যয় হু মোদীকা পরিবার। আমার কারও জন্য ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স রাখার দরকার নেই। বাংলো বাড়ি রাখতে হবে না। :মোদী
চা শ্রমিকদের জন্য পিএম ফসল বিমার কথা শোনা যায় মোদীর মুখে। চাবাগানের শ্রমিকদের পয়সা সোজা তাদের খাতে যায় যাতে তার জন্যও কাজ করেছি আমরা। বিজেপি সরকারের ১০ বছরে ২৫ কোটি মানুষ গরিবি থেকে বেরিয়ে এসেছেন। তবে পরিবারবাদীদের এসব মোটে ভাল লাগে না। তাই নিজের পরিবার শীর্ষে রাখতে চেষ্টা করে। কংগ্রেস, তৃণমূল, বামেদের ইন্ডি জোটও তাই করে। : মোদী
গোর্খা ভাইবোনদের যে সমস্যা আছে, তার প্রতিও বিজেপি সবসময় সংবেদনশীল। বিজেপি আপনাদের চিন্তা দূর করার নিরন্তর চেষ্টা করেছে। বিজেপি আপনাদের অপেক্ষা পূরণ করতে প্রয়াস চালিয়ে যাবে। বিজেপির কাছে উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্য একটা স্পষ্ট রোডম্যাপ আছে। আমরা এখানে চা, পর্যটন ও কাঠের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেষ্টা করছি। জরুরি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। : মোদী
উত্তরবঙ্গের সঙ্গে তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বামের ইন্ডি গঠবন্ধন খুবই পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করে। বিকাশ থেকে বঞ্চিত রাখার পাশাপাশি সমাজের ভিতরেও ক্ষয় তৈরি করেছে। মোদীর মুখে গোর্খার উৎসাহ, রাজবংশী সাহস, আদিবাসীর দৃঢ়তা এবং প্রত্যেক বাঙালির ক্ষমতার কথাও শোনা গিয়েছে। বিজেপি শান্তি সৌহার্দ্যের সঙ্গে প্রত্যেক স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাই তো এত বছরের অপেক্ষার পর অযোধ্যায় রামমন্দিরের নির্মাণ হয়েছে। জম্মু কাশ্মীর থেকে আর্টিকাল ৩৭০ সরানো হয়েছে, বলেন মোদী।
সন্দেশখালিতে গরিব দলিত, আদিবাসী বোনেদের সঙ্গে তৃণমূলের নেতারা কী কী করেছে তার চর্চা আজ গোটা দেশে হচ্ছে। মহিলাদের উপর অত্যাচার, গরিবদের রোজগার লুট করা তৃণমূলের তোলাবাজদের কাজ। : মোদী
মোদী মনরেগার পয়সা দিল্লি থেকে পাঠায়। এখানকার তৃণমূল সরকার নিজেদের তোলাবাজদের সুবিধা দিতে ২৫ লক্ষ ভুয়ো জবকার্ড বানিয়ে দিয়ে দিয়েছে। মোদী গরিবের ঘরের জন্য টাকা পাঠায়, তৃণমূল সরকার তোলাবাজদের পছন্দ করা লোককে টাকা দিয়ে দেয়। আপনাদের কষ্ট নিয়ে তৃণমূলের কিছু আসে যায় না। : মোদী
বাংলায় ভ্রষ্ট তৃণমূল সরকার মহিলা বিরোধী সরকার দলিত, আদিবাসী, ওবিসির রেশন যোজনাতেই ঘোটালা করেছে। এদের নেতা মন্ত্রী রেশন দুর্নীতিতে জেলে। মোদী তাঁর গরিব পরিবারগুলিকে রেশনের সঙ্গে সঙ্গে বিনা খরচে চিকিৎসার গ্যারান্টিও দিয়েছে। কিন্তু ভ্রষ্ট গরিব বিরোধী তৃণমূল সরকার এখানে আয়ুষ্মান যোজনা বলবৎ করছে না। তৃণমূল সরকার আপনাদের পদে পদে লুটছে। : মোদী
বিনামূল্যের রেশনের এই যোজনাকে মোদী ৫ বছর আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এর লাভ চাবাগানের শ্রমিকসাথীরা পাবেন। কিন্তু তৃণমূল, কংগ্রেস, বামেদের ইন্ডি জোট আপনাদের নিখরচায় রেশন দেওয়ার বিরোধিতা করছে। :মোদী
নারী দিবসে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি গ্যাস সিলিন্ডার ১০০ টাকা আরও কমে যাবে। যারা পরিবারের সদস্য তারা সুখ দুঃখেরও সাথী। আমি জানি করোনার কারণে আমার গরিব পরিবার কত চিন্তায় পড়েছিলেন। সেকারণে মোদী দেশের পরিবারজনকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার যোজনা শুরু করে। আমার লক্ষ্য ছিল, কোনও গরিবের সন্তানকে যেন রাতে না খেয়ে না ঘুমোতে হয়। :মোদী
এখানকার সমস্যা প্রথমে বামেরা শোনেনি। পরে তৃণমূলও সরিয়ে রেখেছে। এরা তো গরিবের জমি দখলে ব্যস্ত। সে কারণে আপনারা যখন আমাকে সুযোগ দিলেন, আমি আমার পরিবারের সব সদস্য মানে আপনাদের সেই সুবিধা দিয়েছি। উজ্জ্বলা দিলাম, কিন্তু এখানকার তৃণমূল সরকার ১৪ লক্ষের বেশি বোনকে উজ্জ্বলার কানেকশন নিতে দিচ্ছে না। :মোদী
এই ময়দানে আমি বহুবার এসেছি। এখানে এসে মিনি ভারতের দর্শন হয়। যে বর্ণাঢ্যতা এখানে দেখি, খুব জায়গায় নজরে আসে। :মোদী
আমি ক্ষমা চাইছি আমার আসতে একটু দেরি হয়েছে। আপনাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে। কাজিরাঙা, অসম হয়ে এখানে এসেছি। এখান থেকে কাশী যাচ্ছি। এখানে রাস্তায় ১২ কিলোমিটার রোড শো যাক পরিকল্পনা ছিল না। হঠাৎই হয়। ওদের সম্মানে আমি গাড়ি আসতে চালাই, তাই আসতে দেরি হল। ক্ষমাপ্রার্থী। :মোদী
আমি যখনই উত্তরবঙ্গে এসেছি আশীর্বাদ পেয়েছি। বিশেষ করে আমাদের মা, বোন, মেয়েরা যে স্নেহ পাই বলার নয়। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহের অনেক সাথী এখানে এসেছেন। নিজের পরিবারের লোকের মাঝে এসে খুব ভাল লাগছে। :মোদী
সুকান্ত মজুমদারের পর এবার মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উঠেই বাংলায় মোদী বললেন, “আমার প্রিয় মা, ভাই, বোন, দাদা, দিদিদের সাদর নমস্কার জানাই।” একইসঙ্গে মোদী বলেন, “চা বাগানে কর্মরত সকল শ্রমিক, তাঁদের পরিবারকে এই চাওয়ালার প্রণাম।”
বক্তব্য রাখতে উঠলেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেন, “তুষ্টিকরণের মাস্টার তৃণমূলকে এবার সব লোকসভা কেন্দ্র থেকে উৎখাত করতে হবে। এরপর ডবল ইঞ্জিন আসবে। নরেন্দ্র মোদীজীর নেতৃত্বে বিকশিত ভারত বিকশিত বাংলা আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব।”
এবার শিলিগুড়ির জনসভায় পৌঁছলেন নরেন্দ্র মোদী। সভামঞ্চে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদাররা। মঞ্চে রয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, নিশীথ প্রামাণিক, জন বার্লা-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।
এই ১০ বছরে আমরা বাংলা ও পূর্বের রেলবিকাশকে প্যাসেঞ্জার থেকে এক্সপ্রেস স্পিডে নিয়ে গিয়েছি। আমাদের তৃতীয় কার্যকালে আমরা এটা সুপারফার্স্ট স্পিডের থেকেও আগে ছুটবে। : মোদী
আজ উত্তরবঙ্গ থেকে গৌহাটি এবং হাওড়ার জন্য সেমি হাইস্পিড বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলে। আমরুত ভারত স্টেশন যোজনায় ৫০০-র বেশি যে স্টেশনগুলিকে আধুনিক করা হচ্ছে, তাতে আমাদের শিলিগুড়ি স্টেশনও আছে। : মোদী
স্বাধীনতার পর দীর্ঘ সময় পূর্ব ভারতের বিকাশ, এখানকার উন্নতিকে দেখা হয়নি। আমাদের সরকার পূর্ব ভারতকে দেশের বিকাশের গ্রোথ ইঞ্জিন মনে করে। সে কারণে এই ক্ষেত্রে যোগাযোগে নজর দেওয়া হয়েছে। : মোদী
গত ১০ বছরে উত্তরবঙ্গে প্রচুর উন্নতি হয়েছে। বিকশিত বাংলার লক্ষ্যে এই প্রকল্পগুলি বড় পদক্ষেপ। একাধিক রেলপ্রকল্পের সূচনা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের জন্য রেলপথে যোগাযোগ শুরু হয়ে গিয়েছে। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা ছাউনি পর্যন্ত মিতালি এক্সপ্রেস চলছে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে মিলে আমরা রাধিকাপুর স্টেশন পর্যন্ত যোগাযোগ বাড়াচ্ছি। এই নেটওয়ার্ক শক্তিশালী হওয়ার কারণে দু’দেশের অর্থব্য়বস্থার অগ্রগতি হবে। : মোদী