Hooghly: কৈলাশ নয়, হাসপাতাল থেকে ভেলায় আসছে ‘মা’!

Hooghly Flood: সংসারে মা ছাড়া আর কেউ নেই ওদের।

Hooghly:  কৈলাশ নয়, হাসপাতাল থেকে ভেলায় আসছে 'মা'!
ডিঙিতে করে ফিরছেন মা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 06, 2021 | 3:26 PM

আরামবাগ: মায়ের আগমনী। কৈলাস(Kailas) থেকে মর্তে — এবার দোলায়। মহালয়ার ভোরেই শুরু হয়ে গিয়েছে আবাহন। গোটা বাংলা যখন আনন্দ ভেলায় আগমনী গাইছে, আরামবাগে(Arambag) তখন উল্টো ছবি। মা বাড়িতে আসছেন, ডিঙিতে। চারিদিক জল থৈ থৈ। হাসপাতাল থেকে বাড়ি, ফেরার পথ একটাই — জলপথ। বানভাসি বাংলায় প্রমোদতরীর বিলাস নেই, আছে দুর্ভোগ আর যন্ত্রণা।

স্থান হুগলির আরামবাগ। সংসারে মা ছাড়া আর কেউ নেই ওদের। কিন্তু সেই বৃদ্ধা মা অসুস্থতার জন্য ভর্তি হাসপাতালে। দেবীপক্ষের সূচনায় মাকে ছাড়া কি ভালো থাকে ওরা? তাই কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করেই হাসপাতাল থেকে মাকে আনতে ছুটলেন দুই ছেলে। ৭ কিলোমিটার জলপথ পেরিয়ে ডিঙিতে করে মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন ওরা।

আরামবাগে বন্যার জল এখনও নামেনি। যেদিকে তাকানো যায় সেইদিকে রাশি-রাশি শুধু জল আর জল। বিগত কয়েকদিন ধরে বিপর্যস্ত হয়ে রয়েছে জীবন। যেটুকু সম্বল ছিল তাও ভেসে গিয়েছে জলের স্রোতে। এরই মধ্যে বন্যায় বিপত্তি হল ৭২ বছরের আঙ্গুরবালার। পা ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি তিনি। কিন্তু চারিদিকে জল। গাড়ি চালাচলের উপায় সেই। তবে অঙ্গুরবালার ছেলেরা রয়েছেন তো। ডিঙিতেই করেই হাসপাতালে বয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। ফেরার সময়ও একই অবস্থা। আরামবাগ হাসপাতাল থেকে খানাকুলের রাধাকৃষ্ণপুর পর্যন্ত গাড়ি ভাড়া করে কিছুটা পথ কোনও রকমে এসেছেন। এরপর সাত কিমি জলপথ পেরিয়ে আজই মাকে নিয়ে ফিরেছেন ।

গ্রামে এখনও জলের স্ত্রোত বইছে। শোনা গিয়েছে বন্যার জল নামতে এখনও কুড়ি-পঁচিশ দিন লাগবে। আর তার মধ্যে পুজোও ফুরিয়ে যাবে।

এদিকে,ধীরে ধীরে জলস্তর কমছে আরামবাগ (Arambag)-খানাকুলের (Khanakul)। তবে রূপনারায়ণের ভাঙা বাঁধ দিয়ে এখনও জল ঢুকছে। স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছেন বানভাসিরা। খানাখুলে ঘরবাড়ি মাঠ ঘাট থেকে এখনও জল নামতে প্রায় দিন কুড়ি সময় লেগে যাবে। এমনটাই মনে করছেন বানভাসিরা। খানাকুল ২ নম্বর ব্লকের এখনও সমস্ত গ্রামই জলমগ্ন। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকা। আরামবাগ বন্দর রাজ্য সড়কের ওপর এখনও এক হাঁটু জলের স্রোত বইছে । পানীয় জলের কলগুলি ডুবে থাকায় প্রবল সমস্যায় পড়েছেন বানভাসিরা।

দোকান পাট বন্ধ। বাজার বসার উপায় নেই এলাকায়। ফলে খাবার দাবার ও নিত্য দিনের জীবন যাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। শুকনো খাবারও ফুরিয়ে আসছে দুর্গতদের। নৌকা নেই অনেক জায়গায়। এতে বাড়ি থেকে বেরোতেই পারছেন না তাঁরা। অসুবিধায় পড়ে যাচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্মীরাও। রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করাতেও সমস্যায় পড়ে যাচ্ছেন। কোনও ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক হলে তো আর কথাই নেই। তার মধ্যেও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে মরিয়া চেষ্টা করছেন বানভাসিরা। এলাকায় পুলিশ রয়েছে। নৌকা নিয়ে ঘুরে দুর্গতদের সাহায্য করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: Locket Chatterjee: যাঁরা বিজেপিতে লাভের আশায় এসেছিলেন তাঁরা যত তাড়াতাড়ি চলে যান ততই ভালো।” তর্পণে এসে বললেন লকেট