Durga Puja 2021: দেবী এসেছিলেন সাঁওতাল রমণীর বেশে, ভোগও খান! শুধু পাননি মুখশুদ্ধি…

Hoogli: কথিত আছে, মায়ের দর্শন পেয়েছিলেন স্থানীয় জমিদার মুখোপাধ্যায়দের এক গৃহবধূ।

Durga Puja 2021: দেবী এসেছিলেন সাঁওতাল রমণীর বেশে, ভোগও খান! শুধু পাননি মুখশুদ্ধি...
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আত্মীয় তর্কালঙ্কার মহাশয় গুড়াপের মুক্তকেশিতলায় দুর্গাপুজোর প্রচলন করেছিলেন। ৫০০ বছর আগের কথা। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 10, 2021 | 7:04 PM

হুগলি: প্রায় ৫০০ বছর আগের কথা। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আত্মীয় তর্কালঙ্কার মহাশয় গুড়াপের মুক্তকেশিতলায় দুর্গাপুজোর (Durga Puja ) প্রচলন করেছিলেন। ধীরে ধীরে সেই পুজো বুড়িমার পুজো রূপে এলাকায় পরিচিতি পায়। যদিও কেন এমনটা হল তা বলতে পারেন না কেউই। তবে এ পুজো গুড়াপের ঐতিহ্যের সাক্ষ্য।

পদব্রজে বেরিয়েছিলেন শ্রী শ্রী চৈতন্য দেব। কয়েকশো বছর আগের সেসব কথা। এরকমই এক পুজোর সময় অষ্টমীর দিন মহাপ্রভু অঞ্জলি দেন গুড়াপের বুড়ি মায়ের মন্দিরে। যাওয়ার সময় তাঁর খড়ম জোড়া ফেলে রেখে যান এখানেই। তার পর কয়েকশো বছর চৈতন্য দেবের সেই খড়ম সংরক্ষিত করে রাখা হয় এখানে। নিয়মিত পুজোও করা হতো। কিন্তু কালের স্রোতে এখন তার আর কোনও অস্তিত্ব নেই। তবে বুড়ি মায়ের সঙ্গে চৈতন্যদেবের এই পুরা-কথা জড়িয়ে গিয়েছে চিরকালের মতো।

বুড়ি মায়ের এই পুজোর বিশেষত্ব ছিল সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমীতে মাকে মাছ রান্না করে ভোগ নিবেদন করা। বর্ধমানের রাজবাড়ি থেকে তোপধ্বনির পর এক সময় অষ্টমী পুজো আরম্ভ হতো এখানে। নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানো হতো অষ্টমী পুজোর দিন। সে এক আড়ম্বরের দিন ছিল। এখানে দশমীতে দেবীর বিসর্জন হয় না কোনও দিনই। একাদশীতে বিসর্জন হয় প্রতিমার।

কথিত আছে, মায়ের দর্শন পেয়েছিলেন স্থানীয় জমিদার মুখোপাধ্যায়দের এক গৃহবধূ। দুর্গাপুজোর কোনও এক দিন ভোগ নিবেদন করা হলেও মুখশুদ্ধি অর্থাৎ পান দিতে ভুলে গিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। সেই সময় এক সাঁওতাল রমণী তাঁদের বাড়িতে আসেন এবং ভোগ খাওয়ার আবেদন করেন। যথারীতি পুজোর যে সমস্ত ভোগ নিবেদন করা হয়েছিল তা সবই দেওয়া হয় ওই সাঁওতাল রমণীকে। মুখুজ্জ্যে বাড়ি ছাড়ার সময় ওই বউ সাঁওতাল-রমণীর কাছে সন্তুষ্টির কথা জানতে চাইলে তিনি নাকি বলেছিলেন, ভোগ ভালই খেয়েছেন। তবে মুখশুদ্ধিটাই পেলেন না। এদিকে বাড়ির বউ সেই মুখশুদ্ধি আনতে গেলে দেখেন দেবী বুড়ি মাকেও মুখশুদ্ধি দেওয়া হয়নি সেবার। বেরিয়ে এলে কেউ আর ওই রমণীকে দেখতে পাননি। কথাগুলি বলতে বলতে চোখ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছিল বর্তমানে এই মন্দিরের সেবাইত সুভাষ চট্টোপাধ্যায়ের।

বহু দিন কেটে গিয়েছে। এখন পুজোর তেমন জাঁকজমক হয় না। আগে এলাহি আয়োজনে পুজো হতো চারদিন ধরে। গ্রামবাসীদের চারদিন ধরে ভোগ খাওয়ানো হতো। সেই সময় জমিদারি ছিল মুখোপাধ্যায় পরিবারের। এখন সেই জমিদারি নেই, তাই কোনও রকমে পুজোর আয়োজন করা হয়।

আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: তোতাপাড়া বনবস্তিতে মহিষাসুরমর্দিনী হয়ে যান বনদুর্গা, এ এক অন্য প্রাণের পুজো

আরও পড়ুন: Durga puja 2021: উদ্বোধনের আগে মণ্ডপে আগুন! পুড়ে ছারখার ত্রিধারার প্যান্ডেলের একাংশ

আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: এ পুজোয় জ্বলে না বিদ্যুতের আলো, মায়ের আনন উদ্ভাসিত প্রদীপ শিখায়