হুগলি: প্রায়শই খবরের পাতায় উঠে আসে গঙ্গায় ডুবে মৃত্যুর খবর। শনিবারও শেওড়াফুলি থেকে তেমনই ঘটনা সামনে এসেছে। জল তুলতে গিয়ে গঙ্গায় ডুবে মৃত্যু হয়েছিল এক যুবকের। এরই মধ্যে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। চুঁচুড়ায় গঙ্গায় ডুবে নিখোঁজ অথবা মৃত্যুর সংখ্যা দিন-দিন বাড়ছে। গত দশ দিনে আট জন গঙ্গায় ডুবে গিয়েছেন। যার কারণে প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। নজরদারির দাবি শহরবাসীর।
শুরু হয়েছিল দোলের দিন অর্থাৎ ১৮ তারিখ। চুঁচুড়া তুলো পট্টি ঘাটে স্নান করতে নেমে তলিয়ে যায় রূপম দাস নামে এক যুবক। পরদিন তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। দলের দিনেই চুঁচুড়ারই অন্য আর একটি ঘাট অর্থাৎ ঘণ্টা ঘাটে শিবম বসাক নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। দোলের পরদিন তুলোপট্টি ঘাটে গঙ্গার চড়ে স্বামীর সঙ্গে স্নান করতে নেমে বানের জলে ভেসে যান মধ্যম গ্রামের তরুণী পিয়ালী কর্মকার। ঠিক তার দু’দিন পর তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এরপর গত ২৪ তারিখ হুগলি জেলখানা সংলগ্ন ঘাটে বন্ধুদের সঙ্গে মদ খেতে খেতে রিল ভিডিয়ো শ্যুট করার পর স্নান করতে নেমে তলিয়ে যায় রাকেশ রজক। তাঁর এখনও খোঁজ মেলেনি। রাকেশের মায়ের অভিযোগে তাঁর তিন বন্ধুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এরপর রবিবার ব্যান্ডেল চুনুমিঞার ঘাটে স্নান করতে নেমে তলিয়ে যায় বছর ষোলোর দুই কিশোর। ব্যান্ডেল মানুষপুর বস্তির অনিকেত প্রসাদ ও গোলু পাশোয়ান কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে স্নান করতে যায়। তিনজনকে গঙ্গায় ডুবতে দেখে স্থানীয়রা একজনকে উদ্ধার করতে পারে। বাকি দু’জন তলিয়ে যায়। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হয়। এরপর বেশ কয়েক ঘণ্টা বাদে বাকি দু’জনের দেহ উদ্ধার হয় ঘাটের পাশেই।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, চুঁচুড়ার গঙ্গারঘাট গুলিতে কোনও নজরদারি নেই। কখনও মদ্যপ অবস্থায় কখনও মদের বোতল নিয়ে আবার কখনও বা নৌকা নিয়ে মাঝ গঙ্গায় ভেসে অ্যাডভেঞ্চার করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। অনেক সময় দেখা যাচ্ছে যাঁরা সাঁতার জানেন না তাঁরাও গঙ্গায় স্নান করতে নেমে তলিয়ে যাচ্ছেন। পুরসভার পক্ষ থেকে সচেতনতার প্রচার বা মাইকিং করা হয় না। প্রশাসনের নজরদারিও চোখে পড়ে না। তাই বার-বার একই ধরণের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ শহরবাসীর। গঙ্গার ঘাটগুলিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারি না চালালে এরকম দুর্ঘটনা আরও ঘটবে বলে মনে করছেন নাগরিকরা।
আরও পড়ুন: Howrah Crime: বন্ধ কারখানায় খেলা করছিল কচিকাঁচার দল, বল কুড়াতে গিয়ে আচমকাই সামনে এল সেই ভয়ানক দৃশ্য