Hooghly School: যে কোনও সময় স্কুল চলে যেতে পারে নদীর গ্রাসে! কোনও ক্রমে দোতলায় চলছে পড়াশোনা
Hooghly School: প্রশাসনের দাবি, ভাঙনের আশঙ্কা এখন অনেকটাই কম। নতুন জমি দেখা হয়েছে বলেও দাবি প্রশাসনের।
হুগলি: গঙ্গা ভাঙন রুখতে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। তবুও ঝুঁকি নিয়েই চলছে স্কুল। প্রশাসন বলছে ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু শিক্ষক থেকে পড়ুয়া, প্রত্যেকেই ভুগছেন আতঙ্কে। কোনও রকমে দোতলায় পঠন পাঠন চালাচ্ছেন শিক্ষকেরা। কিন্তু স্কুলের বাইরে যাতে কোনও পড়ুয়া না বেরোয়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হচ্ছে সর্বক্ষণ। ভয়ে টিফিনের জন্য সময় দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ, পাছে তারা নদীর কাছে চলে যায়! একটানা পড়াশোনা করিয়ে বাড়ি পাঠানো হচ্ছে পড়ুয়াদের। যদিও প্রশাসনের দাবি, এমন কোনও বড় সমস্যা এখনও আর নেই।
হুগলির জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় চর খয়রামারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছবি এটি। ছাত্র-ছাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দোতলার ঘরে ক্লাস করছে। চর খয়রামারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে নদীর ভাঙন বাড়ছে। প্রায় স্কুলের দেওয়াল ছুঁয়ে ফেলেছে গঙ্গা নদী। দীর্ঘ আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে এই পরিস্থিতি দেখা গেলেও নতুন স্কুল বিল্ডিং তৈরি করার কোনও তৎপরতা নেই প্রশাসনের। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ওই পঞ্চায়েতের দুর্লভপুর, রাণিনগর ও গৌরনগর এলাকায় ভাঙন চলছে। তার মধ্যে গৌরনগর মৌজার কোনও অস্তিত্বই নেই। দুর্লভপুর মৌজার দুই গ্রাম চর খয়রামারী ও খাসের চর ভাঙনের মুখে পড়েছে। তার মধ্যেই রয়েছে এই স্কুল।
দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ ছিল। কিন্তু এবার ফের স্কুল খোলায় পঠন পাঠন চালাতে হচ্ছে। এলাকার বহু ছেলেমেয়ে এই স্কুলে পড়াশোনা করে। প্রাইমারি স্কুলের পাশে থাকা অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারও ভাঙনের কবলে পড়েছে। খাসেরচরের ফ্লাড সেন্টার গঙ্গার জলে তলিয়ে গিয়েছে। সরকারিভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বালির বস্তা ও পাইলিং করে স্কুলটাকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
১৯৪৯ সালে চর খয়রামারি প্রাথমিক স্কুল তৈরি হওয়ার সময় গঙ্গার সঙ্গে দূরত্ব ছিল দু’ কিলোমিটার। সেই দূরত্ব এখন দু ফুটেরও কম। এই প্রাথমিক স্কুলে ৬২ জনের বেশি ছাত্র ছাত্রী পড়াশোনা করত। সেই পড়ুয়ার সংখ্যা এখন কমে হয়েছে ৫০জন। অধিকাংশ পড়ুয়ারা স্কুলের অবস্থার কারণেই অন্য স্কুলে ভর্তি হচ্ছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার মণ্ডস বলেন, দু’বছর স্কুল বন্ধ ছিল। চলতি বছরে ফ্রেব্রুয়ারি মাস থেকে স্কুল চালু হয়েছে। ছাত্র ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে দোতলার ঘরে ক্লাস নিচ্ছি। সামনে গঙ্গার জন্য আতঙ্কে আছি। তিনি জানিয়েছেন স্কুল সরিয়ে অন্যত্র করার জন্য বিডিও কে জমি দেখানো হয়েছিল। সেই জমিতে বিধায়ক সহ জেলার আধিকারিকরা এসে দেখেছেন।
এ দিকে, বিডিও নিলাদ্রী সরকারের দাবি, তেমন কোনও সমস্যা নেই এখন। তিনি জানিয়েছেন, ভাঙন রোধে কাজ করেছে রাজ্য সরকার। আর স্কুল সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে জমি প্রদানের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে বলে জানিয়েছে তিনি।