CPIM: ‘দলের খারাপ অবস্থার দায় নিতে হবে রাজ্য নেতাদেরও’, রব উঠল সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনে
CPIM: উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রতিনিধি সত্যসেবী কর বলেন, "সাম্প্রতিককালে পঞ্চায়েত ও পুরসভা নির্বাচনে পার্টি যে ফল করেছে, তা বিধানসভা বা লোকসভা নির্বাচনে ধরে রাখা যায়নি। এর দায় কার? নিচুতলার কর্মীরাই তো পঞ্চায়েত ভোট করেছে। তাহলে বিধানসভা বা লোকসভার ক্ষেত্রে কেন দায় নেবেন না রাজ্যের নেতারা?"

ডানকুনি: ৩৪ বছর রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল। আর এখন বিধানসভায় তারা শূন্য। আর বছর খানেক পর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সেখানে সিপিএম কী ফল করবে, তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। এই অবস্থায় ডানকুনিতে দলের রাজ্য সম্মেলনে একাধিক নেতা বললেন, দলের খারাপ অবস্থার দায় নিতে হবে নেতাদেরও। শুধুমাত্র কর্মীদের ঘাড়ে বন্দুক রাখলে চলবে না।
রবিবার সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন রাজনৈতিক সাংগঠনিক খসড়া প্রতিবেদনের উপরে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন জেলার একাধিক প্রতিনিধি অভিযোগ করেন, শাখা কমিটি বা বুথ কমিটি সঠিকভাবে কাজ করছে না বলে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। কিন্তু সেখানে রাজ্য নেতৃত্বের ভূমিকা কী? কেন শাখা স্তরে গিয়ে দায়িত্ব নেবেন না তাঁরা? কেন নেতাদের ভূমিকা মূল্যায়নে আসবে না, কলকাতা জেলার প্রতিনিধি হিসাবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই প্রশ্ন তোলেন কৌস্তুভ চট্টোপাধ্যায়।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রতিনিধি সত্যসেবী কর বলেন, “সাম্প্রতিককালে পঞ্চায়েত ও পুরসভা নির্বাচনে পার্টি যে ফল করেছে, তা বিধানসভা বা লোকসভা নির্বাচনে ধরে রাখা যায়নি। এর দায় কার? নিচুতলার কর্মীরাই তো পঞ্চায়েত ভোট করেছে। তাহলে বিধানসভা বা লোকসভার ক্ষেত্রে কেন দায় নেবেন না রাজ্যের নেতারা?”
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার সম্মেলনের সাম্প্রতিক গোষ্ঠী কোন্দলের কথাও উঠে এসেছে আলোচনায়। চারজন সর্বক্ষণের কর্মীকে জেলা কমিটি থেকে কোন যুক্তিতে বাদ দেওয়া হল? প্রশ্ন তোলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রতিনিধি চন্দনা ঘোষ দস্তিদার।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মানস মুখোপাধ্যায় বলেন, “যাঁরা প্রথম থেকে সর্বক্ষণের কর্মী হিসেবে কাজ করলেন, তাঁদের থেকে যাঁরা একসময় চাকরি এবং ব্যবসা ছেড়ে পার্টিতে সর্বক্ষণের কর্মী হয়েছেন, তাঁদের গুরুত্ব যেন বেশি!” তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য যে সদ্য উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক হওয়া পলাশ দাশ, তা স্পষ্ট বলছেন সম্মেলনে উপস্থিত অনেকেই।
সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন আর যে যে বিষয় আলোচনায় উঠে এসেছে-
- বারবার জোট সঙ্গী বদল কেন? কেন আইএসএফের সঙ্গে জোট?
- ভীষণভাবে বঞ্চিত উত্তরবঙ্গ। উত্তরবঙ্গের সংগঠনের দিকে নজর দেন না নেতারা।
- উত্তরবঙ্গের যে সমস্যা তা নিয়ে দলের ভূমিকা নিতে না পারায় সেখানে রাজনৈতিক জমি তৃণমূল এবং বিজেপি সবটা নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয়েছে। উত্তরবঙ্গে পার্টি ক্রমশ দুর্বল হয়েছে।
- বয়সের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া, কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। কে কত দিন কাজ করতে পারবেন, তা দল কি ঠিক করে দেবে? এটার পেছনে বিজ্ঞান কী?
- সভা সমিতি কিংবা মিছিলে যুব কর্মীরা আসছেন। কিন্তু তাঁরা দলে যুক্ত হওয়ার আগেই চলে যাচ্ছেন।
সিপিআইএমের ২৭ তম রাজ্য সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে নেতাদের ভূমিকা, তাঁদের কর্মপদ্ধতি, নেতৃত্ব বাছাইয়ের প্রক্রিয়া নিয়ে সরব হন প্রতিনিধিরা।





