এক সময়ে ছিল দেশের সবথেকে দামি সেতু, বালি ব্রিজের আসল নাম কিন্তু মোটেও এটা নয়!
Bally Bridge: শোনা যায়, সেতু নির্মাণে সেই যুগে ১.১৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। সেই সময়ে ভারতে তৈরি সবথেকে দামি এবং সবথেকে কঠিন রেলব্রিজ ছিল এটি।
হাওড়া: বয়সের ভারে ধুঁকছে বালি ব্রিজ। মেরামতির জন্য ২৩ থেকে ২৭ জানুয়ারি, একটানা ৫ দিন বন্ধ থাকবে বালি ব্রিজের একাংশ। ১০০ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে রেল চলাচলও। এর জেরে চরম সমস্যায় পড়তে হবে নিত্যযাত্রীদের। যে বালি ব্রিজ নিয়ে এত চর্চা, সেই ব্রিজের ইতিহাস জানেন? এই ব্রিজের নাম কিন্তু আদতে বালি ব্রিজ ছিলই না!
হুগলি নদীর উপরে অবস্থিত বালি ব্রিজ হাওড়া ও কলকাতাকে সংযুক্ত করে। ১৯২৬ সালে এই ব্রিজের নির্মাণ শুরু হয়। ১৯৩১ সালে সেতু নির্মাণ শেষ হয়। ১৯৩২ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে এই সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়। মাল্টিস্প্যান এই স্টিল ব্রিজ তৈরির উদ্দেশ্যই ছিল কলকাতা বন্দর ও হাওড়া রেলস্টেশন থেকে প্রধান রেল ও সড়ক যোগাযোগ পথ হয়ে ওঠা।
২৮৮৭ ফুটের এই ব্রিজ তৈরি করেছিল বিখ্যাত কুটচি-মিস্ত্রি কনট্র্যাকটর ও শিল্পপতি রায়বাহাদুর জগমল রাজা চৌহান। ফ্যাব্রিকেশন করেছিল কলকাতার ব্রেইথওয়েট অ্যান্ড কোম্পানি।
ব্রিজটি তৈরির পর ভারতের তৎকালীন ভাইসরয় ফ্রিম্যান ফ্রিম্যান-টমাস, ফার্স্ট মার্কুইস অফ উইলিংডনের নামে এই সেতুর নামকরণ হয়। নাম হয় উইলিংডন সেতু। তিনিই এই সেতুর উদ্বোধন করেছিলেন। এই সেতুর উপর দিয়ে প্রথম যে ট্রেনটি গিয়েছিল, ব্রিটিশরা সেই ট্রেনের নাম রেখেছিল জগমল রাজা হাওড়া এক্সপ্রেস।
শোনা যায়, সেতু নির্মাণে সেই যুগে ১.১৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। সেই সময়ে ভারতে তৈরি সবথেকে দামি এবং সবথেকে কঠিন রেলব্রিজ ছিল এটি।
উইলিংডন সেতু নামকরণ করা হলেও, স্থানীয় বাসিন্দাদের মুখে মুখে প্রচলিত হয় বালি ব্রিজ নামটি। পরবর্তী সময়ে সরকারের তরফে বিবেকানন্দ সেতু নামকরণ করা হয়। এই সেতুর উপর দিয়ে দৈনিক ২৪ হাজার যান চলাচল করে। তবে বয়সের ভারে বিবেকানন্দ সেতু বা বালি ব্রিজ ক্রমশ ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ছে।
বালি ব্রিজের উপরে চাপ কমাতেই ২০০৭ সালে এই সেতুর পাশেই একটি সহকারী সেতু নির্মিত হয়। এই সেতুর নাম নিবেদিতা সেতু।