ভিডিয়ো: ৬০ বছর আগে বাংলায় দেখা গিয়েছিল, আবার দেখা গেল গজদন্তওয়ালা ইঁদুর

Video: এদিন উলুবেড়িয়ার যদুরবেড়িয়া রথতলায় একটি মিষ্টির দোকানে একটা বিশালাকার ইঁদুরকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন দোকানের মালিক। আচমকা ইঁদুরটি মিষ্টির রস রাখার জায়াগায় পড়ে যায়। তখনই ইঁদুরটিকে তুলতে গিয়ে চোখ কপালে উঠে যায় মিষ্টির দোকানদার মিঠুন দাসের।

Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 26, 2023 | 11:10 PM

উলুবেড়িয়া: সালটা ১৯৬৪। শীতের চাদর গায়ে জড়িয়ে ডিসেম্বরের আকেশে তখন উৎসবের মেজাজ। কয়েকদিন আগে গিয়েছে দুর্গাপুজো। লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিক নিয়ে কৈলাসে ফিরে গিয়ছেন উমা। তবে আনন্দের রেশ তখনও বাংলার আকাশে-বাতাসে। ওই বছর ডিসেম্বরে বীরভূমের সিউরিতে থেকে পাওয়া যায় এক অদ্ভুত খবর। শোনা যায় খোদ গণেশ নাকি তাঁর বাহনকে পাঠিয়ে দিয়েছেন মর্তে। শহরেরই এক ব্যবসায়ী ধরেছেন একটি অদ্ভূত দর্শন ইঁদুরকে। দেখা যায় ইঁদুরটির দুটি গজদন্ত রয়েছে। যা নিয়ে হইহই পড়ে যায় গোটা জেলায়। অমৃতবাজার পত্রিকার প্রথম পাতায় সেই খবর প্রকাশিত হতেই তা নিয়ে আলোড়ন পড়ে যায় দেশে-বিদেশেও। এদিকে ইঁদুরটি তাঁর দোকানের গণেশ মূর্তির পাশে একটি খাঁচায় রেখে পুজোও শুরু করে দিয়েছিলেন ওই ব্যবসায়ী। এবার ৫ দশকেরও বেশি সময় পর কার্যত একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা গেল হাওড়ার উলুবেড়িয়াতে। একটি মিষ্টির দোকানে দেখা গেল একরকম গজদন্তওয়ালা ইঁদুরকে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে ফের শোরগোল। 

সূত্রের খবর, এদিন উলুবেড়িয়ার যদুরবেড়িয়া রথতলায় একটি মিষ্টির দোকানে একটা বিশালাকার ইঁদুরকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন দোকানের মালিক। আচমকা ইঁদুরটি মিষ্টির রস রাখার জায়াগায় পড়ে যায়। তখনই ইঁদুরটিকে তুলতে গিয়ে চোখ কপালে উঠে যায় মিষ্টির দোকানদার মিঠুন দাসের। দেখেন ইঁদুরটির মুখে রয়েছে হাতির মতো দুটো বিশাল দাঁত। চোয়াল থেকে সেই দুটি বাইরে বেরিয়ে রয়েছে। 

অমৃতবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল এই ছবি।

মিঠুনবাবু বলছেন, তিনি ছোট থেকেই দোকানে কাজ করছেন। রোজই ইঁদুরের পালকে ঘোরাঘুরিও করতে দেখেন। কিন্তু, এই ধরনের ইঁদুর তিনি কখনও দেখেননি। কিন্তু, এদিন সকালে এই অদ্ভুত দর্শন ইঁদুর দেখে প্রাথমিকভাবে বিস্ময়ে রীতিমতো থ হয়ে যান মিঠুনবাবু। ডেকে আনেন দোকানের অন্যান্য কর্মচারীদের। মুহূর্তের মধ্যে গজদন্তওয়ালা ইঁদুরের খবর চাউর হয়ে যায় গোটা এলাকায়। দোকানের সামনে ভিড় করতে থাকেন স্থানীয় মানুষজন। আসেন অনেক পশুপ্রেমীরাও। তাঁরাই বর্তমানে ইঁদুরটিকে নিয়ে গিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। 

নিজস্ব চিত্র

প্রাণী বিশেষজ্ঞ চিত্তক প্রামাণিক বলছেন, “এই ধরনের ইঁদুর আমাদের এখানে দেখা যায় মাঝেমধ্যে। আসলে ইঁদুরের দাঁত সবসময়ই বড় হতে থাকে। তারা যে নানা জিনিস সারাক্ষণ কেটে দেয় তাতেই তাদের দাঁতের স্বাভাবিক ক্ষয় বজায় থাকে। সে কারণ দাঁতের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি দেখতে পাওয়া যায় না। তবে এই ইঁদুরটির দাঁতের গড়নটা সত্যিই বেশ কিছুটা অস্বাভাবিক লাগছে। আমরা ইতিমধ্যেই এই ইদুরের বিষয়ে কয়েকজন এক্সপার্টকে পাঠিয়েছি। দেখা যাক তাঁরা কী বলেন।”

হীরালাল মজুমদার মেমোরিয়াল কলেজের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ এস রেহান আহমেদ বলছেন, “দেখে যা মনে হচ্ছে এটা রোডেন্ট প্রজাতির প্রাণী। এই তালিকায় ইঁদুর, কাঠবিড়ালির মতো প্রাণীরাও পড়ে। তবে এটা ইঁদুর নয় বলে মনে হচ্ছে। অভিযোজনের ফলে এই প্রাণীটার দাঁতের আকার এরকম হতে পারে। কোনও শঙ্কর প্রজাতির প্রাণীও হতে পারে। প্রাণীটাকে জীবিত বা মৃত অবস্থায় পেলে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যাবে।”