Child Death: জন্মের পর থাকল মাত্র ১৪ ঘণ্টা! গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে তিন শিশুর মৃত্যু

North Bengal Medical College Hospital: গত তিন মাসে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৩৯০ জন ভর্তি হয়েছে।

Child Death: জন্মের পর থাকল মাত্র ১৪ ঘণ্টা! গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে তিন শিশুর মৃত্যু
গত ২৪ ঘণ্টায় ফের তিন শিশুর মৃত্যু হল উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 15, 2021 | 5:07 PM

শিলিগুড়ি: গত ২৪ ঘণ্টায় ফের তিন শিশুর মৃত্যু হল উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (North Bengal Medical College Hospital)। যদিও হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, শ্বাসকষ্ট বা জ্বরের কোনও উপসর্গ ওই তিন শিশুর ছিল না। তাদের তিনজনেরই অন্য সমস্যা ছিল শরীরে।

উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা জানান, রবিবার থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত তিনজন শিশু মারা গিয়েছে হাসপাতালে। তবে তাদের জ্বর বা শ্বাসকষ্ট জনিত কোনও সমস্যা ছিল না। অন্য উপসর্গ নিয়ে তাদের মৃত্য হয়েছে।

অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা বলেন, “খড়িবাড়ি থেকে রেফার হয়ে এসেছিল এক শিশু। তার স্নায়ুর সমস্যা ছিল। সেই কারণে তাঁর মাসলগুলো শুকিয়ে মারা যায়। আরেকজন ইসলামপুর হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে এসেছিল। সেই বাচ্চার বয়স ১৪ ঘণ্টা। জন্মের আগে থেকেই তার শ্বাসনালীতে এক সমস্যা হয়। বাচ্চাটি ভূমিষ্ঠ হয় প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে। তাকেও রেফার করা হয়েছিল আমাদের কাছে। তৃতীয় যে শিশু তার একদিন মতো চিকিৎসা হয় এই হাসপাতালে।”

অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা জানান, গত তিন মাসে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৩৯০ জন ভর্তি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে ১৩জন বাচ্চা। এই মুহূর্তে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে ২২জন।

উল্লেখ্য, গত কয়েক মাসে একের পর এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে অজানা জ্বরে। কিছু ক্ষেত্রে তাদের মৃত্যুর কারণ হিসাবে করোনা ভাইরাস, টাইফয়েডকে দায়ী করা হলেও অনেক ক্ষেত্রেই মৃত্যু ও আক্রান্তের কারণ স্পষ্ট হয়নি। বিশেষত উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে এই শিশু আক্রান্ত ও মৃত্যু চিন্তায় ফেলেছে রাজ্যের চিকিৎসক মহল ও প্রশাসনকে।

গত কয়েকদিনে উদ্বেগ বাড়িয়ে রায়গঞ্জের ছবিটা। সূত্রের খবর, শেষ একমাসে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে রোজই ভর্তি হচ্ছে জ্বরে আক্রান্ত শিশুরা। কখনও একজন-দুইজন, কখনও বা একদিনে ছয়-সাতজন। ক্রমেই বাড়ছে সেই আক্রান্তের সংখ্যা। এই আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই ইটাহার ও রায়গঞ্জের। এছাড়াও দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর-সহ একাধিক এলাকা থেকে শিশুরা ভর্তি হচ্ছে। কিছু ভর্তি হচ্ছে বিহার থেকেও।

মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবছর এই শিশুমৃত্যু হয়ে থাকে। মরসুমি জ্বরের কারণে বেশ কিছু শিশুর মৃত্যু হয়। যা অত্যন্ত সাধারণ। কিন্তু এ বছর আচমকা এই মৃত্য়ুহার বেড়ে যাওয়ার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে বলেই দাবি করছেন চিকিত্‍সকেরা। প্রথমত, দেখা গিয়েছে যে সকল শিশুদের মৃত্যু হয়েছে সেই তারা প্রত্যেকেই হয় প্রিম্যাচিওর সন্তান, বা অনাক্রম্যতা কম। শুধু সেটা নয়, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বা ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে থাকা শিশুদের অনেকেই নানা ধরনের অসুখে আক্রান্ত। কখনও হার্টের অসুখ, কখনও বা অন্য কোন জটিল রোগ। ফলে মৃত্যু বাড়ছে।

দ্বিতীয়ত, কোভিড পরিস্থিতি শিশুমৃত্যুর বড় কারণ। রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের চিকিত্‍সকদের একাংশের দাবি, করোনাকালে এমনিতেই পরিবেশগত কারণে সাধারণ পূর্ণবয়স্ক মানুষেরও  রোগপ্রতিরোধক্ষমতা কমেছে।  পাশাপাশি, মরসুমি প্রভাব তো রয়েছেই। হঠাত্‍ হঠাত্‍ আবহাওয়ার বদল এর একটা বড় কারণ। সেখানে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। ডাক্তারি পরিভাষায়, ‘সিভিয়র কন্ডিশন’ হলেই সেই শিশুর মৃত্য হচ্ছে। অন্যদিকে, এ বছর মৃত্য়ুহারের মতো জন্মের হারও বেড়েছে বলে দাবি করেছেন চিকিত্‍সকেরা।

তবে গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে তিন শিশুর মৃত্যুর কারণ জ্বর বা শ্বাসকষ্ট নয় বলেই জানিয়েছেন হাসপাতালের অধ্যক্ষ।

আরও পড়ুন: Mohan Bhagwat: তিনদিনের সফরে কলকাতায় আসছেন মোহন ভাগবত