Jalpaiguri news: ‘৩ কোটির বেশি টার্নওভার’! বিক্ষুব্ধদের উদ্দেশে গর্জন বিজেপি জেলা সভাপতির
BJP in Jalpaiguri: সোমবার বিকেলে বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন বাপি গোস্বামী। সেখান থেকেই বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশে লাগাতার তোপ দাগেন তিনি।
জলপাইগুড়ি : “আমি বছরে তিন কোটি টাকার বেশি টার্নওভার করি। আমি ইনকাম ট্যাক্স দেই। আমার উপার্জন দেখে লুচির মতো ফোলে।” সোমবার এমনই মন্তব্য করলেন বিজেপির জলপাইগুড়ির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী। কিন্তু কেন হঠাৎ, এমন সাফাই দিতে গেলেন বিজেপির জেলা সভাপতি? উত্তর খুঁজতে গেলেই উঠে আসছে, এর নেপথ্যে রয়েছে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দলের একাংশ মোটেই সন্তুষ্ট নয় বাপি গোস্বামীকে নিয়ে। সেই প্রসঙ্গ টেনে জেলা সভাপতি বলেন, “বিক্ষুদ্ধরা পিকের লোক। তাই তাদের সঙ্গে কোনও আপস নয়।” সোমবার বিকেলে বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন বাপি গোস্বামী। সেখান থেকেই বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশে লাগাতার তোপ দাগেন তিনি।
উল্লেখ্য, বিগত প্রায় এক মাস ধরে জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন ব্লকে বিজেপির গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের কথা বার বার প্রকাশ্যে এসেছে। বাপী গোস্বামীর বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতি’-র অভিযোগ তুলেছিলেন দলের একাংশ। তিনি টাকার বিনিময়ে বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট বিক্রি করেছেন, এমন অভিযোগও শোনা যায়। এই নিয়ে কয়েকজন মণ্ডল কমিটির সদস্য পদত্যাগও করেছেন। তবে গত এক মাস ধরে দলের অন্দরে এই লাগাতার আক্রমণের কোনও জবাব দেননি বাপী গোস্বামী। অবশেষে সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ খুললেন তিনি।
বিজেপির জেলা সভাপতি বলেন, “আমি চা পাতার ব্যাবসা করি। আমার স্ত্রী চাকরি করেন। বছরে আমার টার্নওভার ৩ কোটি টাকার বেশি। আমি ইনকাম ট্যাক্স দেই। আমি একজন হাই স্কুলের শিক্ষকের চেয়ে বেশি উপার্জন করি। তাই আমার উপার্জন দেখে কেউ যদি লুচির মতো ফোলে, তাহলে আমার কিছু করার নেই।” সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, “আমি আপাতত একতলা বাড়ি বানিয়েছি। আগামী বছর দুয়েকের মধ্যে তিনতলা বাড়ি বানাব। কিন্তু আমি বাম আমলে বাম নেতাদের ধরে মদের লাইসেন্স নেইনি। আবার তৃণমূল জমানায় তৃণমূল নেতাকে ধরে ফ্ল্যাট হাতিয়ে নিইনি। যাঁরা আজকে আমাকে অসৎ বলছেন, তাঁরাই বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা খেয়ে জলপাইগুড়ি বিধানসভা আসনে বিজেপি প্রার্থীকে হারিয়েছেন।”
সোমবার বিজেপি জেলা সভাপতি ছিলেন একেবারে রণং দেহি মেজাজে। বলেন, “আমাদের এক প্রাক্তন সাধারন সম্পাদক চা বাগানের সমস্যা মিটিয়ে দেবেন বলে তাঁর স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে চা বাগান মালিকের থেকে টাকা নিয়েছেন। আবার আরও একজন নেতা চাকরি দেবেন বলে দলীয় কর্মীদের থেকে টাকা নিয়েছেন। পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বুথ দখল ও ছাপ্পা ভোট নিয়ে বিজেপি বনধ ডেকেছিল। সেই দিন ময়নাগুড়ির এক নেতা তাঁর দোকান খুলে রেখেছিলেন। আমি স্মরন করিয়ে দিতে চাই বিধানসভা নির্বাচনে পর যখন কর্মীরা আক্রান্ত তখন এদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরাই বিধানসভা নির্বাচনের সময় প্রার্থী হতে না পেরে জেলা কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছিল। এখন এরা কমিটিতে স্থান না পেয়ে এসব করাচ্ছেন। তাই এদের সঙ্গে আমি কোনও আপস করব না। যদি রাজ্য কমিটি আমাকে সরিয়ে এদের দায়িত্ব দেয়, তবে আমি তা মাথা পেতে নেব। কিন্তু আমি যতদিন পদে আছি, কোনও আপস করব না।”
জলপাইগুড়িতে বিজেপি জেলা সভাপতির এই অভিযোগ নিয়ে TV9 বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল বিজেপির জেলার প্রাক্তন সভাপতি তথা বিজেপির রাজ্য এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য দীপেন প্রামাণিকের সঙ্গে। তবে তিনি এই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।