CPIM: উত্তরবঙ্গে উলট পুরাণ! বিজেপি ছেড়ে সিপিএমে যোগ দিল ৪০টি পরিবার
BJP To CPIM: ভোটের ফল প্রকাশের পর অবশ্য একচেটিয়া ভাবে এ রাজ্যে বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার হিড়িক উঠছে। দল ছাড়ছেন একের পর এক নেতা ও তাঁদের অনুগামীরা। এই প্রেক্ষিতে উলট পুরাণ ঘটল জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri)-র মালবাজারে (Malbazar)।
মালবাজার: একুশের বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই বঙ্গে চলছে দলবদলের মরসুম। তবে সেই যোগদান পর্বে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হয় তৃণমূল (TMC) ছেড়ে নেতা ও তাঁর অনুগামীদের বিজেপি (BJP) যোগ অথবা উলটোটা। ভোটের ফল প্রকাশের পর অবশ্য একচেটিয়া ভাবে এ রাজ্যে বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার হিড়িক উঠছে। দল ছাড়ছেন একের পর এক নেতা ও তাঁদের অনুগামীরা। এই প্রেক্ষিতে উলট পুরাণ ঘটল জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri)-র মালবাজারে (Malbazar)। কেমন সেটা?
গোটা রাজ্যে যখন বিজেপি (BJP) ছেড়ে তৃণমূলে (TMC) কিংবা তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়ার হিড়িক চলছে, সেই সময় মাল ব্লকের তেশিমলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০/১৩৮ পার্টের ৪০টি পরিবার বিজেপি (BJP) ছেড়ে সিপিএমে (CPIM) যোগদান করলেন। তাঁদের দাবি, একটা সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক টানাপোড়েনে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন বটে, কিন্তু এখন তাঁদের মোহভঙ্গ হয়েছে। বর্তমানে সেখানকার রাজনৈতিক অবস্থা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেই সমস্ত দিক ভাবনাচিন্তা করে সিপিএম (CPIM)-এ যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
মঙ্গলবার দুপুরে মালবাজার শহরের সিপিএম পার্টি অফিসে গিয়ে এই ৪০টি পরিবারের সদস্যদের হাতে কাস্তে হাতুড়ি আঁকা পতাকা তুলে নেন। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তপুলে দিয়ে দলে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগদান করান সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক পার্থ দাস, সদস্য রাজা দত্ত প্রমুখ। বিজেপি থেকে সিপিএমে যোগ দেওয়া এই পরিবারগুলিকে নিয়ে পার্থবাবুর মন্তব্য, “মানুষ ভুল বুঝতে পারছে। বিজেপি বা তৃণমূল মানুষের দৈনিক সমস্যা যে মেটাতে পারবে না, তা সবাই বুঝতে পারছেন। তাই মানুষ আবার সিপিএমেই ফিরছেন।”
আর এদিন এই যোগদানকারীদের পক্ষে সাহেবুর রহমান বলছেন, “তেশিমলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০/১৩৮ পার্টে আমরা এক সময় সিপিএম করতাম। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের উপর অত্যাচার করে। ছাপ্পা ভোট করে। বহু লোক ঘর ছাড়া হয়। অনেকের নামে মিথ্যা মামলাও করা হয়। সেই সময় তৃণমূলকে মোকাবিলা করতে বিজেপিতে যোগ দিই আমরা। কিন্তু পরে বুঝতে পারি বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের মধ্যে আসলে কোনও পার্থক্য নেই। তাই আমরা আবারও সিপিএমে ফিরে এলাম।” আর এরিয়া কমিটির সদস্য রাজা দত্তের সংযুক্তি, বিজেপি তো বটেই আগামী দিনে তেশিমলা এলাকার তৃণমূলের বহু কর্মীই সিপিএমে যোগ দেবেন। মানুষ আবার বামে ফিরছেন বলে আত্মবিশ্বাসী তিনি।
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা ভোটে বাংলায় সিপিএম একটি আসনও পায়নি। তাদের জোটসঙ্গী কংগ্রেসের অবস্থাও একই। আইএসএফের হয়ে একটি আসন জিতে শূন্য হওয়া থেকে মোর্চাকে বাঁচিয়েছেন নওশাদ সিদ্দিকি। আর উত্তরবঙ্গে তো সিপিএমের তেমন প্রভাবই দেখা যায়নি। বরং রাজ্যের শাসক দলের চেয়ে বিজেপি এখন উত্তরবঙ্গে শক্তিশালী। এই প্রেক্ষিতে বিজেপি ছেড়ে এতগুলো মানুষের সিপিএমে যোগ দেওয়া বেশ অভিনব তো বটেই।