জলপাইগুড়ি: নিরাপত্তা জোরদার করতে শহরজুড়ে লাগানো হয়েছিল সিসিটিভি ক্যামেরা। গোটা শহরকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল। কিছুদিন যেতে না যেতেই ৯০ শতাংশ সিসিটিভি ক্যামেরা খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। যার ফলে প্রশ্নের মুখে শহরের নিরাপত্তা। চিন্তায় সাধারণ মানুষ।
চুরি ,ছিনতাই , ডাকাতি , ইভটিজিং বা অন্য অসামাজিক কাজে দুষ্কৃতীদের রুখতে নিরাপত্তার চাদরে মুরে ফেলা হয়েছিলো গোটা ধূপগুড়িকে। প্রশাসনের তরফে আনাচে কানাচে বসানো হয়েছিল ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। পুলিশের হাতের মুঠোয় চলে এসেছিলো ধূপগুড়ি। শহর ২২টি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো হয়েছিলো ৫৪ টি সিসি ক্যামেরা । ২০১৭ সালে বসানো হয় এই ক্যামেরাগুলি ।
ধূপগুড়ি বাজার, মেয়েদের স্কুল, হাসপাতাল, থানার পাশাপাশি ধূপগুড়ি রেল স্টেশন মোড় , বিডিও অফিস মোড়, বাসস্ট্যান্ড , সিনেমাহল পাড়া, মসজিদের সামনে এবং সুপার মার্কেট শহরের শেষ প্রান্ত সহ বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয় সিসিটিভি ক্যামেরা। কিন্তু দেড় বছর না যেতেই শিকয় উঠেছে নিরাপত্তা ।
জানা গিয়েছে, ওই ক্যামেরাগুলি ধূপগুড়ি পৌরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে ২০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে বসানো হয়েছিল। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই অধিকাংশ সিসি টিভি ক্যামেরা নষ্ট। কিন্তু ক্যামেরাগুলি যে ঠিক করতে হবে সেই হুস নেই প্রশাসনের ।
আর এই অকেজো সিসি ক্যামেরা ঠিক করা নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা। পুরসভা বলছে পুলিশের দায়িত্ব সিসিটিভি ক্যামেরা ঠিক করা, পুলিশ সূত্রে বলা হচ্ছে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছে পৌরসভা তাই যাবতীয় দায়িত্ব তাদের।
এলাকাবাসী দেবদুলাল ঘোষ বলেন , “সিসিটিভি ক্যামেরাগুলি পৌরসভার তরফে লক্ষ-লক্ষ টাকা ব্যায় করে লাগানো হয়েছিলো শহরের নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে। আমরা খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু ৫৪টি ক্যামেরার মধ্যে অধিকাংশ খারাপ। এর ফলে চুরি , ছিনতাই, বাইক চুরির ঘটনার তদন্তে বাধা পাচ্ছে পুলিশ । শহরের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা চিন্তিত ।”
গত কয়েক মাসে ধূপগুড়ি শহরে চুরি,বাইক ছিনতাই , দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে । শহরের সিসিটিভি ক্যামেরা খারাপ থাকায় সেই চিন্তাই ভাবাচ্ছে ব্যবসায়ীদের। ব্যবসায়ীদের দাবি দ্রুত সারাই করা হোক সমস্ত সিসিটিভি ক্যামেরা।
ব্যবসায়ী নারায়ণ দাসগুপ্ত বলেন, “অধিকাংশ সিসিটিভি ক্যামেরা খারাপ। যার ফলে শহরের চুরির ঘটনা বাড়ছে । যে ভাবে চুরির ঘটনা বাড়ছে দ্রুত সিসিটিভি ক্যামেরা ঠিক না করা হলে আরও চুরি বাড়বে বলে আমাদের আশঙ্কা।”
যদিও পৌরসভার পক্ষ থেকে উল্টো সাফাই মিলেছে। ধূপগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান ভারতি বর্মণ জানিয়েছেন, সিসি ক্যামেরাগুলি খারাপের বিষয়ে তার জানা নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন এবং পৌরসভার বোর্ড মিটিয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে দ্রুত সিসি ক্যামেরা ঠিক করার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান তথা ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরূপ দে বলেন, “আমি ভাইস চেয়ারম্যান থাকাকালীন এই সিসি ক্যামেরাগুলি গোটা শহর জুড়ে বসানো হয়েছিল। তবে বোর্ড পরিবর্তনের পর এখন সেগুলি খারাপ হয়ে পরে রয়েছে বলে আপনাদের কাছ থেকে জানতে পারলাম। আমাকে কেউ আগে জানায়নি, বিষয়টি নিয়ে বোর্ড মিটিয়ে তোলা হবে। কেন খারাপ হয়ে থাকল? কেন সংস্কার হয়নি সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে এবং দ্রুত সংস্কারের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: Howrah: ন’ বছর পর হাওড়া থেকে ঘরে ফিরল বিহারের মনোজ, সৌজন্যে হ্যাম রেডিয়ো