Durga Puja 2021: মুসলিম ও হরিজন অংশগ্রহণ করায় মেলেনি পুজোর সরকারি অনুদান! মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি
Durga Puja: সব ধর্ম সমান, জাতিগত ভেদাভেদ নেই, এই বার্তা বহন করে সম্প্রীতি মহিলা পরিচালিত এই দুর্গাপুজো। সব ধর্ম সমান এবং সম্প্রীতির বার্তা বহন করলেও সরকার ঘোষিত সরকারি অনুদান তারা পায়নি। পুজো উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, মুসলিম এবং হরিজন মহিলারা পুজোতে অংশগ্রহণ করায় মিলেনি সরকারি আর্থিক অনুদান। আর এ নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি।
জলপাইগুড়ি: পুজোর ঘোষিত সরকারি অনুদান নিয়েও রাজনীতির অভিযোগ! মুসলিম এবং হরিজন মহিলারা পুজোতে অংশগ্রহণ করায় মিলেনি সরকারি আর্থিক সাহায্য। এমনই দাবি করেছে বিজেপি (BJP)। এ নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক তরজা। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) কে চিঠি দিলেন পুজো উদ্যোক্তারা।
“ধর্ম যার যার, উৎসব সবার” এই বার্তাই বহন করে ধূপগুড়ি (Dhupguri) ৩ নং ওয়ার্ডের সম্প্রীতি মহিলা পরিচালিত দুর্গাপুজো (Durga Puja 2021) কমিটির পুজো। এবছর ষষ্ঠ বর্ষে পা দিয়েছে এই পুজো। জাঁকজমক এবং জৌলুসহীন এই পুজো। কিন্তু এর গুরুত্ব অন্য জায়গায় অপরিসীম কারণ, হিন্দু মহিলাদের পাশাপাশি মুসলিম এবং হরিজন সম্প্রদায়ের মহিলারাও এই পুজোতে শামিল হয়েছেন। সব ধর্ম সমান, জাতিগত ভেদাভেদ নেই, এই বার্তা বহন করে সম্প্রীতি মহিলা পরিচালিত এই দুর্গাপুজো। সব ধর্ম সমান এবং সম্প্রীতির বার্তা বহন করলেও সরকার ঘোষিত সরকারি অনুদান তারা পায়নি। পুজো উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, মুসলিম এবং হরিজন মহিলারা পুজোতে অংশগ্রহণ করায় মিলেনি সরকারি আর্থিক অনুদান। আর এ নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি।
ধূপগুড়ি শহরে পুজোতে সম্প্রীতির বার্তা। মাজার শরিফের সামনে পুজোর প্যান্ডেল। ঢাক-কাঁসর ঘণ্টা বাজিয়ে চলছে মা দুর্গার আরাধনা। আর এই উৎসবে শামিল হয়েছেন হিন্দু-মুসলিম থেকে শুরু করে সব ধর্মের মানুষেরা। ধূপগুড়ি শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের দরবেশ পাড়ায় বিগত পাঁচ বছর থেকে হয়ে আসছে এই পুজো। এই পাড়ায় হিন্দু ধর্মালম্বী মানুষদের পাশাপাশি মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরও বসবাস রয়েছে। আর এই কারণেই এই পাড়ায় যে কোনও উৎসবে মেতে ওঠেন সমস্ত ধর্মাবলম্বী মানুষ। দেশের বিভিন্ন জায়গায় যখন দেখা যায়, ধর্ম-বর্ণের নামে হানাহানি চলছে, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যতিক্রম ধূপগুড়ির পুজো।
প্রতি বছর পুজোর শেষে পরবর্তী বছর পুজোর জন্য অধীর আগ্রহে বসে থাকেন এই পাড়ার মানুষেরা। এটা যে নিছক একটি উৎসব নয়, তাদের কাছে এটি একটি মহা মিলন ক্ষেত্র। যদিও পুজোর আয়োজন করতে হাঁসফাঁস অবস্থা এই পুজো কমিটির। বাইরে থেকে কোনওরকম চাঁদা তোলা সম্ভব হয়নি। এমনকী পুজোর জন্য মেলেনি কোনও সরকারি অনুদান। যার ফলে নিজের থেকেই টাকা পয়সা জোগাড় করে কোনওক্রমে চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে এই পুজো। পুজো কমিটির সদস্যরা চাইছেন সরকারি অনুদান। তবে সরকারি অনুদান মেলেনি কেন সেই প্রশ্ন এখনও অধরা।
পুজো কমিটির উদ্যোক্তা পাপিয়া দে এবং ফিরোজা খান বলেন, “আমরা সব ধরনের মানুষগুলো এই পুজোটা করে থাকি। মুসলিম হিন্দু হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষ মিলে পুজোটা করা হয়। তবে আমরা সরকারি অনুমতি নিয়ে পুজো করলেও মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত অনুদান দেওয়া হয় না আমাদের। এখানে মুসলিম, হরিজন মহিলারা যুক্ত বলেই কি সরকারের আর্থিক সাহায্য দেওয়া হল না।
বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি কাউন্সিলর কৃষ্ণদেব রায় বলেন, “পুজো উদ্যোক্তাদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রদান করা নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। তৃণমূল অভিযোগ করে যে বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল। তবে ধুপগুড়ির সম্প্রীতি মহিলা পরিচালিত দুর্গাপুজো কে টাকা না দেওয়ার ঘটনা থেকে পরিষ্কার যে কারা ধর্মের মধ্যে বিভেদ তৈরি করছে। মুসলিম মহিলারা অংশগ্রহণ করেছে, তাই হয়ত মুখ্যমন্ত্রী ঘোষিত অনুদানের টাকা দেওয়া হয়নি পুজো কমিটিকে। মুসলিম মহিলারা মিলে যে পুজোর আয়োজন করছে তাদের টাকা না দেওয়া, এটা কিসের ভ্রাতৃত্ব? তৃণমূল সাম্প্রদায়িকতা তৈরি করছে। বিভেদ তৈরি করছে ধর্মের মধ্যে।”
যদিও অনুদান পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক তথা ধূপগুড়ি পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ কুমার সিং বলেন, ৪১ টি পূজা কমিটি কে সরকারিভাবে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ২৯ টf কমিটি টাকা পেয়েছে। মুসলিমরা পুজোতে অংশগ্রহণ করেছে বলে টাকা পায়নি, এই ধরনের কোনও ঘটনা নেই। বিজেপি সব সময় অভিযোগ করে। তাদের কাজই এটা। বিজেপি সম্প্রদায়িক দল। তবে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সাথে কথা বলে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: Covid Warning: ‘অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের আওয়াজ মিস করছেন?’, পুজোর ভিড় নিয়ে সতর্ক করলেন চিকিৎসকেরা