Mysterious Fever: অজানা জ্বরের দাপট, শুক্রবারই উত্তরবঙ্গে স্বাস্থ্যভবনের ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল
Mystery Fever: সূত্রের খবর, চার সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন, চিকিত্সক পল্লব ভট্টাচার্য, চিকিত্সক বিকাশ মণ্ডল, মাইক্রোবায়োলজিস্ট অধ্যাপক রাজা রায়, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক দীপ্তকান্তি মুখোপাধ্যায়, পেডিয়াট্রিস্ট ড. মিহির সরকার।
উত্তরবঙ্গ: অজানা জ্বরে (Mysterious Fever ) ক্রমেই বাড়ছে আতঙ্ক। ইতিমধ্যেই অজানা জ্বরে রাজ্য়ে মৃত্যু হয়েছে ৯জনের। রাজ্যের মোট ১৪ টি জেলায় আক্রান্ত শিশুদের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। দেড় হাজারের বেশি শিশু ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছে। শুক্রবার, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে আসেন স্বাস্থ্য ভবনের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। এদিন মেডিক্য়াল কলেজের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে শিশু ওয়ার্ড-সহ শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালও পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা।
এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিশেষ জনস্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিত্সক সুশান্ত রায়। বৈঠক শেষে সুশান্ত রায় বলেন, “করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই অল্প সংখ্যক কিছু শিশু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। তারা ঠিক কী কারণে আক্রান্ত হচ্ছে তারই নমুনা পরীক্ষা করতে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পাঠানো হয়েছিল। আজ স্বাস্থ্যভবনের পক্ষ থেকে আধিকারিকরা আসেন। তাঁরা সমস্ত হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। জ্বর রুখতে কী কী পদক্ষেপ করা যেতে পারে তা নিয়েই মূলত আলোচনা ছিল। পরিকাঠামো আর কী কী ভাবে জোরদার করা যায়, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে বেড যাতে বাড়ানো যায় সেটাও দেখা হচ্ছে।”
সূত্রের খবর, চার সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন, চিকিত্সক পল্লব ভট্টাচার্য, চিকিত্সক বিকাশ মণ্ডল, মাইক্রোবায়োলজিস্ট অধ্যাপক রাজা রায়, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক দীপ্তকান্তি মুখোপাধ্যায়, পেডিয়াট্রিস্ট ড. মিহির সরকার। চার সদস্যের এই প্রতিনিধিদল এদিন সমস্ত হাসপাতাল ঘুরে দেখেন। কথা বলেন আক্রান্ত শিশুদের অভিভাবকদের সঙ্গে। যদিও, বিশেষ জনস্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিত্সক সুশান্ত রায় জানিয়েছেন, জ্বর নিয়ে বিশেষ আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। অধিকাংশের ক্ষেত্রেই আরএসভি ভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ধরা পড়েছে।
জ্বরের সংক্রমণ (Mysterious Fever) একটু হলেও কমেছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে ৬৭ শিশু ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে জ্বরের উপসর্গ রয়েছে ১৫ শিশুর। তবে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ৬৫ শিশু ভর্তি রয়েছে। চিকিৎসকদের দাবি, এটি অজানা জ্বর নয়, আরএস ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে শিশুদের।
উত্তরবঙ্গ জুড়ে জ্বর বাড়তেই বিভিন্ন জেলা থেকে নমুনা আসছে শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ভিআরডিএল এ। কিন্তু সেখানে আরএস ভাইরাস পরীক্ষা করার ব্যবস্থা নেই। ফলে পরিস্থিতি সামলাতে বাকি পরীক্ষার পাশাপাশি এই ভাইরাস চিহ্নিতকরণ পরীক্ষা শুরু কররে রাজ্যের অনুমোদন চেয়েছে ভিআরডিএল।
এদিকে, বৃহস্পতিবারই শিলিগুড়িতে জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হল বেশ কয়েকটি শিশু। এই মুহুর্তে জেলা হাসপাতালে ৮৪ জন শিশুর চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৫ শিশু। নতুন করে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। তবে শিলিগুড়ি-সহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বাচ্চাদের ভিড় বাড়ছে সেখানেও। গুরুতর অসুস্থ না হলে কাউকেই ভর্তি নেওয়া হবে না বলে মৌখিক ভাবে জানিয়ে দিয়েছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
জ্বরের প্রাদুর্ভাব নিয়ে অবশেষে মুখ খুলেছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “বছরের এ সময় প্রতিবারই শিশুদের মধ্যে ভাইরাসের প্রকোপ দেখা যায়। এ বছর সংখ্যাটা বেশি। তার মানে এই নয় যে কিছুই ঘটেনি। রোগ যখন হচ্ছে। শিশুদের আইসিইউয়ে ভর্তি যখন করতে হচ্ছে তখন কিছু একটা কারণও নিশ্চিত রয়েছে।” পাশাপাশি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর কী কী পদক্ষেপ করতে চলেছে তাও স্পষ্ট করেন স্বাস্থ্য় অধিকর্তা।
রাজ্য স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, জ্বরের কারণ খুঁজতে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভাইরাস প্যানেলে নমুনা পরীক্ষা করা হবে। পাশাপাশি, উপসর্গের নিরিখে কী ধরনের চিকিৎসা করতে হবে সেই সংক্রান্ত প্রোটোকল বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করছে। দ্রুত তা জেলাস্তরে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ভাইরাল প্যানেলে পরীক্ষা খরচসাপেক্ষ। তাই কোভিড, ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, স্ক্রাব টাইফাস ধরা না পড়লে ভাইরাস প্যানেল করতে বলা হয়েছে। পিএম কেয়ার্সে পাওয়া ভেন্টিলেটরকে পেডিয়াট্রিক ভেন্টিলেটর, হাই ফ্লো ন্যাজাল অক্সিজেন মাস্কে রূপান্তরিত করতে বলা হয়েছে। এছাড়া বাড়তি HFNO দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Murshidabad: অজানা জ্বরে আক্রান্ত ১৫০, মেডিক্যাল কলেজে মেঝেতেও শুয়ে শিশুরা!
আরও পড়ুন: Jalpaiguri: জাপানি এনকেফালাইটিসের সংক্রমণ নয়, অজানা জ্বর নিয়ে মুখ খুললেন জনস্বাস্থ্য আধিকারিক