Jalpaiguri: শববাহী গাড়িতে যুবতীর দেহ, কান্না ভুলে হাতাহাতিতে জড়াল ২ পরিবার, হঠাৎ হল কী?
Jalpaiguri: অভিযোগ, মঙ্গলবার মৃতদেহ বাড়ি পৌঁছলে ছাত্রীর বাবার বাড়ি এবং মামার বাড়ির পরিবারের মধ্যে বিবাদ বাধে। শ্মশানের পথে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। মাঝে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের শববাহী ভ্যান। আহত হন চালক।
জলপাইগুড়ি: মৃতদেহ নিয়ে দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব। শববাহী গাড়িতে ভাঙচুর। আহত শববাহী গাড়ির চালক। শেষপর্যন্ত থানায় গেল দেহ। অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ দায়ের। নজিরবিহীন ঘটনায় চাঞ্চল্য জলপাইগুড়িতে।
কালী পুজোর প্রতিমা দর্শনে বেরিয়ে পথ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন দেব নগর এলাকার বাসিন্দা সঞ্চারী সরকার নামে এক কলেজ ছাত্রী। এরপর তাঁকে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। সোমবার বিকেলে ওই বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।
অভিযোগ, মঙ্গলবার মৃতদেহ বাড়ি পৌঁছলে ছাত্রীর বাবার বাড়ি এবং মামার বাড়ির পরিবারের মধ্যে বিবাদ বাধে। শ্মশানের পথে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। মাঝে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের শববাহী ভ্যান। আহত হন চালক। দেহ নিয়ে জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার পুলিশের দ্বারস্থ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
এই খবরটিও পড়ুন
মৃত ছাত্রী সঞ্চারী সরকারের মামা সমীর দাস বলেন, “আমার বোনের স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে বোনের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির সম্পর্ক ভাল ছিল না। আমার বোন মেয়েকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে আসে। সেখানেই থাকত। কালী পূজোর রাতে পথ দুর্ঘটনায় যখম হয়ে শিলিগুড়িতে একটি নার্সিং হোমে ভর্তি ছিল ভাগ্নি। গতকাল মারা যায়। এরপর আজ দেহ ময়নাতদন্তের পর জলপাইগুড়ি নিয়ে আসলে আমার বোনের শ্বশুর বাড়ির তরফে দাবি করা হয় দেহ তাদের বাড়িতে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু আমার বোন রাজি ছিল না। তাই দেহ শ্মশানে দাহ করতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পথে শ্মশান যাত্রীদের ওপর হামলা করে দেহ ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। শববাহী গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আমাদের লোকজনদের মারধর করা হয়। যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তাই আমরা থানায় অভিযোগ দায়ের করে গেলাম।”
সমাজকর্মী অঙ্কুর দাস বলেন, “আমাদের সংস্থার শববাহী গাড়ি করে দেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু মৃতদেহ নিয়ে দুই পরিবারের দ্বন্দ্বের জেরে আমাদের গাড়ির ওপর হামলা হল। আমাদের গাড়ির চালককে মারধর করা হয়েছে। সে এখন মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। আমরা সমাজসেবার জন্য অত্যন্ত কম মূল্যে বা বিনামূল্যে এই গাড়ি ব্যাবহার করতে দিয়ে থাকি। কিন্তু এসব করতে গিয়ে যদি আমরা নিজেরাই আক্রান্ত হই তবে গাড়ি সারাই করতে ভর্তুকি দিতে হয়। তবে এইজাতীয় পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না।”
মৃতার কাকা মনোজ দাস বলেন, “আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা কাউকে মারিনি। আমার ভাইঝির দেহ তার ঠাকুমাকে দেখাবার জন্য আমরা রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে দেহ বাড়িতে নিয়ে যাই। এই কাজ করতে গিয়ে আমরা উলটে আক্রান্ত হয়েছি। শববাহী গাড়ি ভাঙচুর বা কোনওরকম মারামারির সঙ্গে আমরা জড়িত নই। তাই আমরাও কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করলাম।”
জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার আই সি সঞ্জয় দত্ত জানিয়েছেন, অভিযোগ ও পালটা অভিযোগ হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।