Jalpaiguri: বুজে আসছে চোখ, সঙ্গে অসহ্য যন্ত্রণা, তবুও হাসপাতালে শুয়ে মেয়ের বিয়ের চিন্তা! মা হয়ত এমনই

Jalpaiguri: কোচবিহার জেলার পুটিমারি গ্রামের বাসিন্দা গীতা রানি দাস। সামনের সপ্তাহে তাঁর মেয়ের বিয়ে।

Jalpaiguri: বুজে আসছে চোখ, সঙ্গে অসহ্য যন্ত্রণা, তবুও হাসপাতালে শুয়ে মেয়ের বিয়ের চিন্তা! মা হয়ত এমনই
সাপে কাটা মহিলা (নিজস্ব ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 30, 2022 | 11:23 AM

জলপাইগুড়ি: মেয়ের বিয়ের আর দু’দিন বাকি। তার প্রস্তুতি ছিল তুঙ্গে। কিন্তু বিয়ের আগেই ঘটে গেল অঘটন। মেয়ের বিয়ের আগেই বিষাক্ত ছাপের ছোবল খেলেন মা। কুড়ি ভায়েল অ্যান্টি ভেনাম নিয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। প্রায় যমে মানুষে টানাটানি অবস্থা। কিন্তু তারপরও মেয়ের বিয়ে নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটছে না। একেই হয়ত বলে মা!

কোচবিহার জেলার পুটিমারি গ্রামের বাসিন্দা গীতা রানি দাস। সামনের সপ্তাহে তাঁর মেয়ের বিয়ে। বিয়েতে আত্মীয় স্বজন ও নিমন্ত্রিতরা আসবেন। রান্না করতে হবে। সেই উপলক্ষে রবিবার সকালে তিনি তাঁর বাড়িতে মাটি খুঁড়ে উনুন বানাতে গিয়েছিলেন। যেখানে মাটি খুঁড়ছিলেন সেখানে ছিল কালাজ সাপের গর্ত। সেখানেই ডিম পেড়ে তা দিচ্ছিল সাপটি। খেয়াল করেননি গীতা দেবী।

মাটি খোঁড়াখুঁড়ির পর গর্তে হাত ঢুকিয়ে মাটি বের করতে গেলে তাঁর আঙুলে কামড়ে ধরে কালাজ সাপ। এরপর তিনি চিৎকার করে গর্ত থেকে হাত বের করলে দেখেন আঙুল কামড়ে ধরে আছে সাপটি। তিনি টান মেরে সাপটিকে ফেলে দিলে তাঁর আঙুলে গভীর ক্ষত হয়ে যায়। শুরু হয় অসহ্য যন্ত্রণা। বন্ধ হয়ে আসতে থাকে তাঁর চোখের পাতা।

এই অবস্থায় তাঁকে ফালাকাটা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে ১০ ভায়েল এন্টি ভেনাম ইঞ্জেকশন দিয়ে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। জলপাইগুড়িতে আসার পর রোগীকে সঙ্গে-সঙ্গে ভর্তী করা হয়। খবর পেয়ে এলাকায় আসেন পরিবেশ কর্মী বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরী। সাপের ছবি দেখে সাপটিকে চিহ্নিত করেন তিনি। ডাক্তার আসার আগে অবধি রোগীর মনে সাহস জুগিয়ে তাঁকে জাগিয়ে রাখেন বিশ্বজিৎ বাবু।

ইতিমধ্যে ডাক্তার এসে পৌঁছালে তাঁকে বিস্তারিত জানালে তিনি রোগীকে দেখবার পর ক্ষতচিহ্ন ও উপসর্গ দেখে তাঁকে আরও ১০ ভায়েল অ্যান্টিভেনাম ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। এই অবস্থাতেও গীতা দেবী মেয়ের বিয়ে পার করা নিয়ে চিন্তিত। যা দেখে অবাক পরিবেশ কর্মী থেকে চিকিৎসক প্রত্যেকে।

বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরী বলেন, ‘গীতা দেবীকে সিন্ধু কালাজ সাপ দংশন করেছে। এই সাপের বিষ মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে তাঁর ক্ষতস্থান তৈরি হয়। এরপর তাঁর পেটে ও শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা হয় একইসাথে তাঁর চোখের পাতা বন্ধ হতে থাকে। এই অবস্থায় রোগীকে সাথে-সাথে হাসপাতালে নিয়ে এনে তার চিকিৎসা শুরু করতে হয়। চোখের পাতা বন্ধ হচ্ছে দেখে ঘাবড়ে গেলে চলবে না। রোগীকে জাগিয়ে রাখার চেষ্টা করতে হবে। এই রোগীর চিকিৎসা শুরু হয়েছে। উনি এখন স্থিতিশীল আছেন।’