HS Result 2022: এর পর কী করে পড়াব মেয়েকে! চিন্তায় আকুল রাজ্যে নবম টিনার দিনমজুর বাবা
Higher Secondary: কী করে মেয়ের উচ্চশিক্ষার খরচ জোগাবেন, তা ভেবেই হিমশিম অবস্থা টিনার বাবার। সরকারের কাছে তিনি আর্জি জানিয়েছেন টিনার পাশে দাঁড়ানোর। সাহায্যের আশাতেই এখন দিন গুনছেন টিনার পরিবার।
মালদা: দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার। আর্থিক অনটন নিত্যসঙ্গী। বাবা দিনমজুরের কাজ করেন। কিন্তু এ সব বাধা মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের টিনা থোকদারকে রুখতে পারেনি। তাঁর প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও কিছু করে দেখিয়ে দেওয়ার জেদের কাছে হার মেনেছে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা। টিনার সেই লড়াই মর্যাদা পেল উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর। ৪৯০ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মেধাতালিকায় নবম স্থানে রয়েছেন টিনা। এই ফলের জন্য টিউশন বা প্রচুর বইয়ের সহায়তা পাননি তিনি। ও সব কিনে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না তাঁর বাবা-মায়ের। তবুও ভাল ফল করেছেন তিনি। টিনার সাফল্যে হৃদয়ে খুশি বয়ে এলেও কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তাঁর দিনমজুর বাবার। মেয়ের সাফল্য নিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েই কেঁদে ফেলেছিলেন তিনি। তাঁর চিন্তা এত দিন স্কলারশিপের টাকায় পড়াশোনা চালিয়েছে টিনা। কিন্তু এ বার কী হবে। কী করে তাঁরা জোগাবেন টিনার পড়াশোনার খরচ।
মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ফতেপুরের মতো প্রত্যন্ত গ্রামে বাড়ি টিনা থোকদারের। তাঁর বাবা নাড়ুগোপাল থোকদার দিনমজুরের কাজ করেন। পানের বরজে কাজ করেই সংসার চালান তিনি। সংসারে দুই ছেলেমেয়ে। তার মধ্যে মেয়েই বড়। ছোট ছেলে পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। ইট গেঁথে কোনও মতে একটা বাড়ি করেছেন। যদিও বাড়ির সব জানলা লাগাতে পারেননি। প্লাস্টার তো দূরের কথা। এ রকম বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা চালিয়েছেন টিনা। রোজ তিন কিলোমিলার হেঁটে স্কুলে যেতেন তিনি। তাঁর গ্রাম ফতেপুরে কোনও স্কুল নেই। তাই তিন কিলোমিটার দূরে ভালুকা আরএমএম বিদ্যাপীঠে পড়তে যেতেন তিনি। সবুজ সাথীর সাইকেল অবশ্য পেয়েছিলেন, সেই সাইকেল নিয়ে দূরে দূরে কাজ করতে যেতেন বাবা। পড়াশোনার জন্য টিনার ভরসা ছিল রাজ্য সরকারের বিভিন্ন স্কলারশিপের টাকা। একাধিক স্কলারশিপের টাকায় পড়াশোনা করতে পেরে রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি টিনা। তাঁর ইচ্ছা ভবিষ্যতে ইংলিং অনার্স নিয়ে পড়ে বিমানসেবিকা হওয়ার।
কিন্তু কী করে মেয়ের উচ্চশিক্ষার খরচ জোগাবেন, তা ভেবেই হিমশিম অবস্থা টিনার বাবার। সরকারের কাছে তিনি আর্জি জানিয়েছেন টিনার পাশে দাঁড়ানোর। সাহায্যের আশাতেই এখন দিন গুনছেন টিনার পরিবার।