Maldah TMC: বন্যার ত্রাণের টাকা নিয়ে দুর্নীতি, মালদায় একাধিক তৃণমূল নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে বিডিও-র এফআইআর
Maldah TMC: ঘটনার সূত্রপাত ২০১৭ সালে। ভয়াবহ বন্যায় মালদার বিস্তীর্ণ এলাকা ভেসে যায়। বহু স্থানীয় বাসিন্দার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
মালদা: বন্যা ত্রাণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ ও বিরোধী দলনেত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করলেন বিডিও। শুরু হয়েছে তদন্ত। পলাতক তিন তৃণমূল নেত্রী। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে বিতর্ক। প্রশাসনের তরফ থেকে তাঁদের ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে বিভিন্ন ধারায়।
ভুয়ো বেনেফিশিয়ারি লিস্ট তৈরি করে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগে এবারে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কোয়েল দাস, শিশু ও নারী ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ রৌশনারা খাতুন, বিরোধী দলনেত্রী সুজাতা সাহার নামে এফআইআর করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের সঙ্গে আরও অনেকেই রয়েছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিরোধী দলনেত্রীর বিরুদ্ধেও এফআইআর করা হয়েছে। যদিও বোর্ড গঠনের সময় থেকেই বিরোধী দলনেত্রী কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলেই যোগদান করেন।
কিছুদিন আগেই বোরুই এলাকার মোবারকপুর অঞ্চল থেকে শাসক দলের এক প্রাক্তন পঞ্চায়েতের সদস্যকে একই অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার হয় আরও চারজন ভুয়ো বেনেফিশিয়ারি।
প্রত্যেকের নামে মামলা রুজু করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। কিছুদিন আগেই বোরই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সোনামণি সাহার বিরুদ্ধে এফআইআর করেন হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু। যদিও প্রধান সোনামণি এখনও পলাতক।
ঘটনার প্রেক্ষাপট
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৭ সালে। ভয়াবহ বন্যায় মালদার বিস্তীর্ণ এলাকা ভেসে যায়। বহু স্থানীয় বাসিন্দার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এরপর রাজ্য সরকারের তরফে আংশিক ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ৩৩০০ টাকা ও সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ৭০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়। কিন্তু প্রকৃত উপভোক্তাদের অধিকাংশই টাকা পাননি বলে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান।
প্রশাসনিক সূত্রে সূত্রে জানা গিয়েছে, তালিকায় নাম থাকলেও দুর্গতদের অনেকেই টাকা পাননি। তদন্তে নেমে প্রশাসন জানতে পারে, দুর্গতদের নাম থাকলেও তাঁদের নামের পাশে অন্য অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে টাকা তোলা হয়েছে। এ নিয়ে আাদলতে মামলাও করেন হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রাক্তন কংগ্রেসী বিধায়ক মোস্তাক আলম।
সোমবার তার শুনানি রয়েছে। তার আগেই প্রশাসন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কোয়েল দাস, শিশু ও নারী ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ রৌশনারা খাতুন ও বিরোধী দলনেত্রী সুজাতা সাহার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হল।
এপ্রসঙ্গে বোরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, “‘১৭ সালের বন্যায় ৭,৩৯৪ জন বেনিফিশিয়ারি ক্ষতিগ্রস্ত হন। সেই তালিকা তৈরি হয়েছিল। সেই টাকা ২০১৯ সালে সরকার দেয়। যাঁরা টাকা পাননি, তাঁরা বিডিও-র কাছে লিস্টের নম্বর উল্লেখ করে অভিযোগ করেন। দেখা যায় বেনিফিশিয়ারির টাকা আত্মীয়দের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করেছে। হাইকোর্টের মামলার ভিত্তিতে বিডিও এফআইআর করেছে।”
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের ব্লক প্রেসিডেন্ট মানিক দাস বলেন, “আমি শুনেছি বিডিও সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। হাইকোর্টের নির্দেশেই সব হচ্ছে। আইন আইনের পথেই চলবে। দল অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও পড়ুন: Maldah TMC: বন্যার ত্রাণের টাকা ‘আত্মসাৎ’, গণধোলাইয়ের শিকার তৃণমূল নেতা