Maldah TMC: বন্যার ত্রাণের টাকা ‘আত্মসাৎ’, গণধোলাইয়ের শিকার তৃণমূল নেতা

Maldah News: তদন্তে পুলিশ দেখতে পায়, গ্রামের একাধিক বাসিন্দার নামে একের বেশি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তাঁদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। কিন্তু তদন্তে পুলিশ দেখতে পায়, ওই ব্যক্তিরা আদৌ ব্যাঙ্কে যাননি।

Maldah TMC: বন্যার ত্রাণের টাকা 'আত্মসাৎ', গণধোলাইয়ের শিকার তৃণমূল নেতা
মালদায় টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 24, 2021 | 1:28 PM

মালদা: এক ব্যক্তির নামে একাধিক অ্যাকাউন্ট খোলা, একই অ্যাকাউন্টে একাধিকবার ডিপোজিট!  টাকাই পাননি প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা, ত্রাণের টাকা পেয়েছিলেন একই পরিবারের একাধিক সদস্য। ২০১৭ সালে মালদার ত্রাণ দুর্নীতির তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে উঠে আসে একাধিক তৃণমূল নেতার নাম। তাঁদের একজন এই ব্যক্তি, নাম কুণালকান্তি দাস, স্ত্রী পঞ্চায়েতের সদস্য। এতদিন গা ঢাকা দিয়েছিলেন। আজ সকালে গ্রামে ঢুকতেই উত্তেজনা। গণধোলাইয়ের শিকার হলেন তৃণমূল (TMC) নেতা। প্রকাশ্যেই তাঁর ওপর চলল কিল, চড়, ঘুষি। পুলিশের সামনেও তাঁকে মারধর করে উত্তেজিত জনতা। চলে পুলিশের হাত থেকে অভিযুক্তকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও। ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা মালদার (Maldah) হরিশ্চন্দ্রপুরে। অভিযুক্তের নাম কুণালকান্তি দাস। পুলিশ আপাতত অভিযুক্তকে আটক করেছে।

হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের বরোই গ্ৰাম পঞ্চায়েতের চোপালমোড় এলাকায় শুক্রবার সকাল থেকে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। ঘটনার সূত্রপাত ২০১৭ সালে। সে বছর বন্যায় ভেসে গিয়েছিল মালদার বিস্তীর্ণ এলাকা। সরকারের তরফে দুর্গতদের জন্য ত্রাণের টাকা পাঠানো হয়। কিন্তু সেই টানা পান না বোরুই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দুর্গতরা। তাঁদের টাকা আত্মসাত্ হয়ে যায়। কাঠগড়ায় ওঠে বোরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের নাম। এই নিয়ে মামলা গড়ায় আদালতে। হাইকোর্টে প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তদন্তের নির্দেশ দেয়।

এরই মধ্যে হাইকোর্টে ভর্ত্সনার মুখে পড়তে হয় রাজ্য সরকারকেও। দুর্নীতিতে উঠে আসে একাধিক তৃণমূল নেতার নাম। দেখা যায়, একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে ত্রাণের টাকা আত্মসাত্ করা হয়েছে। কিন্তু যাঁদের টাকা পাওয়ার কথা, তাঁরা টাকা পাননি। টাকা পড়েছে ঝাড়খণ্ড, বিহার, কলকাতার একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।

তদন্তে পুলিশ দেখতে পায়, গ্রামের একাধিক বাসিন্দার নামে একের বেশি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তাঁদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। কিন্তু তদন্তে পুলিশ দেখতে পায়, ওই ব্যক্তিরা আদৌ ব্যাঙ্কে যাননি। কিংবা ব্যাঙ্কে তাঁরা নিজেরা কোনও অ্যাকাউন্ট খোলেননি। তাঁদের নামে অ্যাকাউন্ট খুলেই দুর্নীতি হয়েছে।

ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দেন প্রধান। উঠে এসে এই তৃণমূল নেতার নামও। এই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাও ঘটনার পর থেকে বেপাত্তা ছিলেন। এতদিন পর এদিন গ্রামে তাঁকে দেখতে পান গ্রামবাসীরা। তখনই ঘিরে ধরে প্রশ্ন করতে শুরু করেন। শুরু হয় মারধর। গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়।

গণধোলাইয়ের শিকার হন কুণালকান্তি দাস নামে ওই তৃণমূল নেতা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। পুলিশের সামনেও তাঁকে মারধর করা হয়। একই অ্যাকাউন্টে কীভাবে আট-দশ বার টাকা পড়ে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

স্থানীয় তৃণমূল নেতা বলছেন, “আমি বিষয়টা শুনেছি। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপির লোক উস্কে দিয়ে আমার গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যকে মারধর করেছে। আমি প্রশাসনকে বলেছি। প্রশাসন প্রশাসনের মতো ব্যবস্থা নেবে। আমরাও দেখছি দলগতভাবে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়। ২০১৭ সালে বন্যা, টাকা ছাড়া হয় ২০১৮ সালে। প্রধান ফেঁসে গিয়েছেন। দুর্নীতির ব্যাপারে রাজ্য সরকার বলবে।”

এদিকে, বিজেপি নেতা বলেন, “কীভাবে এক-এক জনের অ্যাকাউন্টে দশ বার করে ঢুকল? যাঁরা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত তাঁরা টাকা পাননি। গ্রাম পঞ্চায়েতের আধিকারিকদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে।”

আরও পড়ুন: Maldah Crime: সারা শরীর জুড়ে দগদগে ঘা, রক্ত বেরোচ্ছে! দুই মেয়ের মা হওয়ার মাশুল গুনল বাইশের বধূ