Malda: পঞ্চায়েতে বৈঠক ডাকলেন উপপ্রধানের স্বামী, হাজির প্রধানের স্বামী, বেধড়ক মারধরে জখম ৩
TMC inner clash in Malda: ঘটনাটি নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বিজেপি-র দক্ষিণ মালদহ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "এখানকার তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীরা হুমকি দিয়েছিলেন, এই এলাকায় কিছু করলে বিজেপির হাত-পা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। এখন বিরোধীদের মারা তো দূরের কথা, ভোট যত আসবে নিজেদের মধ্যে লড়াই করতে করতে তৃণমূল দলটা থাকে কি না, সেটাই চিন্তার ব্যাপার।"

মালদহ: আবাসের টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ। পঞ্চায়েত অফিসে বৈঠক ডাকলেন উপপ্রধানের স্বামী। হাজির হলেন প্রধানের স্বামী। অন্য সদস্যদের স্বামী, পরিবারের সদস্যরা হাজির। সেখানেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ। আহত হয়েছেন তিন তৃণমূল নেতা। ঘটনা মালদার কালিয়াচক ২ ব্লকের অন্তর্গত মোথাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের। হামলার অভিযোগ উঠেছে প্রধানের স্বামীর বিরুদ্ধে। তবে তিনিও আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি মালদা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন।
রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান সবিতা সাহা চৌধুরীর স্বামী গোপাল চৌধুরী বোর্ড মিটিং ডেকেছিলেন পঞ্চায়েত দফতরে। অভিযোগ, সেখানে আবাসের টাকা এবং অনাস্থা প্রসঙ্গ ঘিরে মেজাজ হারান তৃণমূল পরিচালিত রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সামসুন নেহারের স্বামী নাসির আহমেদ সাগর। অভিযোগ, সেইসময়ই কয়েকজনকে মারতে যান নাসির আহমেদ। সেখান থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে একটি আম বাগানে আশ্রয় নেন তাঁরা। অভিযোগ, সেখানে পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী দলবল নিয়ে তাঁদের মারধর করেন।
যদিও এই সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শামসুন নেহার। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, তাঁর স্বামীকেই চেয়ার এবং লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয়েছে। বর্তমানে তাঁর স্বামীও চিকিৎসাধীন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, পঞ্চায়েত দফতরে গন্ডগোলের সময় দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যর স্বামী পালিয়ে আম বাগানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তখন গ্রামবাসীরা চোর ভেবে তাঁদের মারধর করেছে। এদিকে খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
এক পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামী ফেকু মোমিন আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, “উপপ্রধানের স্বামী বৈঠক ডেকেছিলেন। সেখানেই প্রধানের স্বামী আমাদের মারধর শুরু করেন। আমরা পালিয়ে যাই। সেখানে গিয়েও আমাদের মারধর করেন।”
ঘটনাটি নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বিজেপি-র দক্ষিণ মালদহ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এখানকার তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীরা হুমকি দিয়েছিলেন, এই এলাকায় কিছু করলে বিজেপির হাত-পা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। এখন বিরোধীদের মারা তো দূরের কথা, ভোট যত আসবে নিজেদের মধ্যে লড়াই করতে করতে তৃণমূল দলটা থাকে কি না, সেটাই চিন্তার ব্যাপার।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীরা যদি এমন মারপিট করেন, তাহলে ভোটের সময় সাধারণ মানুষ কীভাবে নির্বিঘ্নে ভোট দেবেন, সেটা চিন্তার বিষয়। প্রশাসন নির্বিকার। তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে।”
দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েতে সামান্য ঝামেলা হয়েছে। এটা নিজেদের ব্যাপার। বড় কোনও ঘটনা নয়। আমরা দলীয় তদন্তের পর ঝামেলা মিটিয়ে নেব। এটা নিয়ে অনেকে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে। এখানে রাজনীতির কোনও জায়গা নেই। আমরা নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নেব, এই আশা রাখি।”
