Malda TMC: দলের প্রধান দুর্নীতির দায়ে, বিজেপি সদস্যকে প্রধান, সিপিএমকে উপপ্রধান করল তৃণমূল!
Panchayat: মালদহে এবার ঘটল কার্যত নজিরবিহীন ঘটনা। নিজেদের দলের প্রধানকে দুর্নীতির দায়ে ক্ষমতাচ্যুত করে বিজেপির (BJP) সদস্যকে প্রধান আর সিপিএম (CPIM) সদস্যকে উপপ্রধান করল তৃণমূল (TMC)।
মালদহ: তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান দুর্নীতিতে অভিযুক্ত, এই অভিযোগে অনাস্থা এনে তাঁকে সরিয়ে দলের আরেক গোষ্ঠীর সদস্যকে ওই পদে বসানোর খবর অনেক মিলেছে। তবে মালদহে এবার ঘটল কার্যত নজিরবিহীন ঘটনা। নিজেদের দলের প্রধানকে দুর্নীতির দায়ে ক্ষমতাচ্যুত করে বিজেপির (BJP) সদস্যকে প্রধান আর সিপিএম (CPIM) সদস্যকে উপপ্রধান করল তৃণমূল (TMC)। তবে এই নিয়ে দলের মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বিতর্ক।
মালদহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান তথা রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়ের গড় হিসাবে পরিচিত রতুয়া-১ ব্লকের মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েত। তৃণমূল পরিচালিত এই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধানকে তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দিল দল। আর যাংদের সেই পদে আনা হল তাঁরা বিরোধী রাজনৈতিক দলের পঞ্চায়েত সদস্য। বিজেপির সদস্যকে প্রধান এবং সিপিএম সদস্যকে উপপ্রধানের পদে বসিয়ে পঞ্চায়েত গঠন করলেন তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সদস্যরা।
যদিও এর ফলে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা তৃণমূল। নিজেদের সদস্যদের আনা অনাস্থার সমর্থনে বুধবার গদিচ্যুত হয়েছেন তৃণমূলের দুই মুখ। নতুন প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বিজেপির পঞ্চায়েত কৃষ্ণা সাহা এবং উপপ্রধান হয়েছেন সিপিএমের লুতফুরনেসা। আর এ নিয়ে অপসারিত প্রধান ও উপপ্রধান নিজেদের দলের কিছু নেতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছেন।
এদিন অনাস্থা সভার আয়োজনের জন্য কঠোর নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল পঞ্চায়েত দফতর। যদিও শান্তিপূর্ণ ভাবেই শেষ হয় প্রধান ও উপপ্রধান চয়ন প্রক্রিয়া। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১৭ আসন বিশিষ্ট মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্দলের ৮, তৃণমূল ৩, বিজেপি ২, কংগ্রেস ২ এবং সিপিএম ২ টি করে আসন দখল করে। এর পর পঞ্চায়েত গঠনের প্রায় দুই সপ্তাহ আগে মালদা জেলার তৎকালীন তৃণমূল কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে নির্দলের ৮ সদস্য ছাড়াও বিরোধী দলগুলির সদস্যও তৃণমূলে যোগ দেন। সব মিলিয়ে মোট ১৪ জন সদস্য শাসকদলে যোগদান করায় পঞ্চায়েত গড়ে তৃণমূল। সর্বসম্মতভাবে পঞ্চায়েতের প্রধান হন নির্দল থেকে তৃণমূলে আসা সদস্য কিরণ মাঝি। আর উপপ্রধান হন তৃণমূল সদস্য ফিরদৌসী বেগম।
কিন্তু কয়েক মাস আগে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রধান কিরণ মাঝি ও উপপ্রধান ফিরদৌসী বেগমের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসেন পঞ্চায়েতের ৯ জন সদস্য। বুধবার ছিল নব-নির্বাচিত প্রধান গঠনের দিন। প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচনের দিন ১ জন ছাড়া পঞ্চায়েতের ১৬ জন সদস্যই উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচনী সভায় প্রধান কিরণ মাঝি ও উপপ্রধান ফিরদৌসী বেগমের স্বপক্ষে ৭টি ভোট পড়ে। কৃষ্ণা সাহা ও লুতফুরনেসার স্বপক্ষে মোট ৯টি ভোট পড়ে।
ভোটের ফলাফলে স্বাভাবিক ভাবেই নিজের পদ থেকে অপসারিত হতে হয় প্রধান কিরণ মাঝি ও উপপ্রধান ফিরদৌসী বেগমকে। স্বাভাবিকভাবেই নবনির্বাচিত প্রধান হন কৃষ্ণা সাহা ও উপপ্রধান হন লুতফুরনেসা। এদিন শান্তিপূর্ণ ভাবে শেষ হয় প্রধান গঠন প্রক্রিয়া। এ নিয়ে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য পঞ্চায়েত দফতরের বাইরে মোতায়েন করা হয়েছিল বিশাল পুলিশবাহিনী। উপস্থিত ছিলেন রতুয়া-১ ব্লকের বিডিও রাকেশ টোপ্পো, জয়েন্ট বিডিও সৈকত দত্ত, রতুয়া থানার আইসি সুবীর কর্মকার প্রমুখ।
আরও পড়ুন: Malda: হাসপাতালের সামনে সদ্যোজাতের দেহ খুবলে খেল কুকুরের দল, অর্ধেক অংশ পড়ে রাস্তায়!